"নির্বাচন ছাড়া এখন দেশের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই"—এমন মন্তব্য করেছেন লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান। তাঁর মতে, নির্বাচন বিলম্বিত বা ঠেকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে এবং তাতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কিছু মানুষ লাভবান হবে।
বুধবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এক গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, “আমরা একটা অদ্ভুত বাস্তবতায় আছি—গণতন্ত্র চাই, কিন্তু নির্বাচন চাইলে বিপদ। নির্বাচন পিছিয়ে গেলে দেশ যদি গোল্লায়ও যায়, কিছু মানুষের লাভ আছে। কারণ, নির্বাচন না থাকলে কিছু লোক নানা রকম সুবিধা নিতে পারে—নিয়োগ, বদলি, টেন্ডার এসবের মধ্য দিয়ে।”
তিনি আরও বলেন, “যখন সামনে নির্বাচন দেখা যাবে না, তখন মানুষের চরিত্র নষ্ট হবে। তাই অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখা এখন জরুরি।” নির্বাচনের ধারাবাহিকতাই দেশের পরিবর্তনের গ্যারান্টি, বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আলোচনায় সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় হতাহতের বিষয়ে শোক জানানো হয় এবং এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
জুলাই মাসের রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রসঙ্গে জাহেদ উর রহমান বলেন, “আমরা একটি আনস্ট্রাকচার্ড ও অসংগঠিত অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গিয়েছি। এরপর অনেকেই মনে করছেন এটা বিপ্লব, এবং শিক্ষার্থীদের ‘রেড গার্ড’–এর মতো ব্যবহার করার চিন্তা করছেন। এসব প্রবণতা সমস্যা তৈরি করছে।”
সংবিধান স্থগিত করে বা বড় রাজনৈতিক শক্তিকে উপেক্ষা করে সরকার চালানো যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ক্ষমতা কাঠামো এমনভাবে কাজ করে না। আপনি কাউকে এক্সক্লুড (বর্জন) করতে গেলে, প্রতিক্রিয়া হবেই।”
চলমান সংস্কার কর্মসূচি প্রসঙ্গে জাহেদ বলেন, “আমি হতাশ, তবে কিছু বিষয়ে ঐকমত্য ভালো লক্ষণ। যেমন বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ বা সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে আলোচনা।” তাঁর মতে, বাংলাদেশ এখন ‘অ্যাকিউট ইমার্জেন্সি সিচুয়েশনে’ আছে এবং নির্বাচন হচ্ছে সেই রোগীর জীবন বাঁচানোর মতো।
আলোচনায় আরও অংশ নেন লেখক ফরহাদ মজহার, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, পিপিআরসি চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান, আইনজীবী সারা হোসেন, গবেষক আলতাফ পারভেজ, অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, নির্মাতা কামার আহমাদ সাইমন, গবেষক মাহা মীর্জা ও সহুল আহমদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ।
আমার বার্তা/এমই