সবশেষ এশিয়া কাপ থেকে অসাধারণ ফর্মে থাকা সাইফ হাসান আবার জ্বলে উঠলেন। ব্যাট হাতে প্রতিপক্ষের বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে তুললেন ছক্কার ঝড়। ফিফটি হাঁকিয়ে মোট সাতবার তিনি বল আছড়ে ফেললেন সীমানার ওপারে। তার নৈপুণ্যে অনায়াসে জিতে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ।
রোববার শারহাজতে তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৬ উইকেটে জিতেছে টাইগাররা। আফগানদের ছুঁড়ে দেওয়া ১৪৪ রানের লক্ষ্য তারা স্পর্শ করে ১২ বল হাতে রেখে।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৪১টি সিরিজ খেলে অষ্টমবার প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ। এর মধ্যে তিন ম্যাচের সিরিজে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবার ও সব দল মিলিয়ে চতুর্থবার ৩-০ ব্যবধানে জিতল তারা। প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করা বাকি চারটি সিরিজ ছিল দুই ম্যাচের।
১৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে চতুর্থ হাফসেঞ্চুরির স্বাদ নিলেন ডানহাতি ব্যাটার সাইফ। ৩২ বলে ফিফটি ছুঁয়ে ৬৪ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ৩৮ বল মোকাবিলায় তিনি দুটি চারের সঙ্গে হাঁকান সাতটি ছক্কা।
এই সংস্করণের ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড পারভেজ হোসেন ইমনের দখলে। গত মে মাসে এই মাঠেই সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে নয়টি ছক্কা মেরেছিলেন তিনি। রিশাদ হোসেনের সঙ্গে যৌথভাবে পরের অবস্থানে উঠে এলেন সাইফ। গত বছরের মার্চে সিলেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সাতটি ছক্কা এসেছিল রিশাদের ব্যাট থেকে।
রান তাড়ায় প্রথম ওভারটি মেডেন দেয় বাংলাদেশ। উদ্বোধনী জুটি দেখেশুনে এগোতে থাকলেও পঞ্চম ওভারে পড়ে ছেদ। একটি করে ছক্কা ও চারে ১৪ বলে ১৬ রানে আউট হন অস্থিরতায় ভুগতে থাকা ওপেনার পারভেজ। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের স্লোয়ারে মিড অফে ক্যাচ দেন তিনি।
ক্রিজে গিয়েই মারতে শুরু করেন ছন্দে থাকা সাইফ। তিনি রানের খাতা খোলেন মিড অন দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে। ১ উইকেট হারিয়েই পাওয়ার প্লে শেষ করে বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে ততক্ষণে জমা হয় ৪৭ রান।
ছক্কার ভেলায় চেপে বসা সাইফের সঙ্গে আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমের জুটি জমে যায়। দুজনই নিয়মিত আনতে থাকেন বাউন্ডারি। ফলে সামনে থাকা ওভারপ্রতি রানের চাহিদা নেমে আসায় চালকের আসনে বসে পড়ে বাংলাদেশ। শেষ ১০ ওভারে তাদের দরকার দাঁড়ায় মাত্র ৬৫ রান। হাতে ছিল ৯ উইকেট।
তানজিদ দুবার বেঁচে গেলেও ইনিংস লম্বা করতে ব্যর্থ হন। একাদশ ওভারে আবদুল্লাহ আহমেদজাইয়ের বলে লোপ্পা ক্যাচ দিয়ে দ্বিতীয়বার জীবন পাওয়ার পরের বলেই হন আউট। তার ৩৩ বলে ৩৩ রানের ইনিংসে চার চারটি ও ছক্কা একটি।
সাফল্য পাওয়ার পরের ওভারে আহমেদজাইকে নাস্তানাবুদ হতে হয়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ আনে ২২ রান। সাইফ দুটি চারের সঙ্গে ফ্লিক করে ফাইন লেগ দিয়ে মারেন দর্শনীয় ছক্কা। অন্যপ্রান্তে হাঁসফাঁস করছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক জাকের আলি অনিক। নিজের শেষ দুই বলে তাকে ও শামীম হোসেনকে বিদায় করেন মুজিব উর রহমান।
একবার রিভিউ নিয়ে টিকে যাওয়া জাকের করেন ১১ বলে ১০ রান। শামীম পান গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ। তবে বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিংয়ে চাপ জেঁকে বসতে দেননি সাইফ। আফগানিস্তানের অধিনায়ক রশিদ খানের শেষ ও ইনিংসের ১৫তম ওভার তিনি পার করে দেন মেডেন খেলে।
এরপর বশির আহমেদকে টানা দুটি বিশাল ছক্কায় ফিফটিতে পৌঁছে যান সাইফ। আর লং অফ দিয়ে নুরুল হাসান সোহানের ছক্কায় শেষ হয় ম্যাচ। তিনি অপরাজিত থাকেন ৯ বলে ১০ রানে।
আমার বার্তা/জেএইচ