ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙতে রওনা হওয়া ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা’র একটি নৌযান থেকে বাংলাদেশি আলোকচিত্রী ও লেখক শহিদুল আলমকে অপহরণ করেছে দখলদার ইসরায়েলি নৌবাহিনী।
আজ বুধবার স্থানীয় সময় সকালে ‘কনশেন্স’ নামের নৌযান থেকে তাঁকে আটক করা হয়। এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তাঁর দ্রুত মুক্তি ও নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য সরকারের প্রতি জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ সকালে আটক হওয়ার ঠিক আগে শহিদুল আলম নিজেই তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও বার্তা শেয়ার করেন। ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘আমি শাহিদুল আলম, বাংলাদেশের একজন ফটোগ্রাফার ও লেখক। আপনি যদি এ ভিডিওটি দেখেন, তাহলে বুঝবেন আমরা সমুদ্রে বাধা পেয়েছি এবং আমাকে ইসরায়েলের দখলদার বাহিনী অপহরণ করেছে।’
শহিদুল আলম এই ভিডিওতে ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল গাজার মানুষদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালাচ্ছে, যেটিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য পশ্চিমা শক্তি সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করছে। আমি আমার সব সহকর্মী ও বন্ধুদের অনুরোধ জানাই—প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতার লড়াই চালিয়ে যান।’
শহিদুল আলমকে আটকের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের প্রতি অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে বলা হয়, ‘ফ্রি শহিদুল আলম। আমি সরকারকে তাঁর বাংলাদেশে নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানাচ্ছি।’ তিনি সরকারকে আন্তর্জাতিক মহলে চাপ সৃষ্টি করে শহিদুল আলমের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুসারে, দেশটির নৌবাহিনী শহিদুল আলমকে বহনকারী নৌযান কনশেন্সসহ ফ্লোটিলার সব নৌযান আটক করেছে। টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব জানিয়েছে, গাজার সমুদ্র অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করা নতুন একটি নৌবহরকে তারা থামিয়ে দিয়েছে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছে, এটি ‘আইনসিদ্ধ নৌ অবরোধ ভাঙা ও যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশের আরেকটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা শেষ হলো।’ তারা আরও জানায়, নৌযান ও যাত্রীদের ইসরায়েলি বন্দরে নেওয়া হচ্ছে এবং সব যাত্রী নিরাপদ ও সুস্থ আছেন। তাঁদের দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
ফ্লোটিলার নৌযানগুলো এবং যাত্রীদের বর্তমানে ইসরায়েলি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকারকর্মীরা এই অপহরণ/আটকের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং গাজা অবরোধ তুলে নেওয়ার দাবি পুনরায় জোরদার করেছেন।
আমার বার্তা/এমই