বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, পৃথিবীর তিনটি শক্তি, দুটি আঞ্চলিক ও একটি বৈশ্বিক শক্তি, এ অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। কিন্তু এদের প্রত্যেকের দ্বারাই আমাদের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই দলমত নির্বিশেষে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এক নীতির ওপর ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) শহীদ আবরার ফাহাদের স্মরণে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আয়োজিত ‘মতপ্রকাশ থেকে মৃত্যু: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফ্যাসিবাদের বিস্তার ও প্রতিরোধ’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
আবরার হত্যার ঘটনায় স্মৃতিচারণ করে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমার নির্বাসিত জীবনে আমি এই একটি ঘটনায় এত বেশি ব্যথিত হয়েছিলাম। সেদিন আমি চিন্তা করলাম, বাংলাদেশের মেধাবী ছাত্ররা যারা বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে কথা বলে তাদের সংখ্যা তো নেহায়েত কম নয়। আমি লক্ষ্য করেছিলাম, বাংলাদেশের তরুণ সমাজের ভেতরে দেশপ্রেম ও প্রতিরোধের আগুন জ্বলছে। যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেশের পক্ষে কথা বলছে, তারা নতুন প্রজন্মের প্রতীক। তাদের জীবন কেড়ে নিলে এক আবরারের রক্ত থেকে লক্ষ্য আবরার জন্ম নেবে।
সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, আজকের যে আবরার ফাহাদের প্রসঙ্গ, সেটাকে তাত্ত্বিক এবং ঐতিহাসিক বিশ্লেষণের দাবি রাখি। এটা শুধু একটা আঞ্চলিক আধিপত্যবাদ বলেই এক শব্দে সবকিছু বিশ্লেষণ করা যাবে না। যেটাকে আগ্রাসন অথবা আধিপত্যবাদ বললেও বিশ্লেষণ করা যাবে না। ঐতিহাসিকভাবে এই তথ্যটা বিশ্লেষণ করতে হবে।
আবরার ফাহাদের আত্মত্যাগের মধ্যদিয়ে জুলাই অভ্যুত্থান নির্মাণ করা হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের ভিত্তি তৈরি হয়েছে আবরারদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে। এ শহীদদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের সিঁড়িগুলো নির্মিত হয়েছে। এই সিঁড়ি তৈরি হয়েছে শাপলা চত্বরে শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে, অসংখ্য ছাত্র-যুবকের আত্মত্যাগের পথ মাড়িয়ে।
সালাউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে হয়ত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বললে জেলে যেতে হতো, তবে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বললে জীবন দিতে হতো সেটা আমরা বুঝেছিলাম।
সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের নীতি হবে- সবার আগে বাংলাদেশ। এই তিনটি শব্দেই জাতির মুক্তির পথ নিহিত আছে। যদি আমরা এই নীতি প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে জাতি কোনোদিন ভুল পথে পরিচালিত হবে না।
সভায় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ২০১৯ সালে রাতে আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা নির্মমভাবে স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে শিক্ষার্থীকে হত্যা করতে পারে এটি অকল্পনীয়। এটার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিবাদ জানিয়েছিল ছাত্রদল।
তিনি আরও বলেন, যারা আবরার হত্যার পাঁচ দিন আগেও ছাত্রলীগের মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছে আজকে তারা সাহসিকতার গল্প শোনায়।
আমার বার্তা/এমই