দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে বড় ধরনের একটি পরিবর্তন আনার লক্ষ্য নিয়ে আজ, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ইং তারিখে যাত্রা শুরু করলো ল্যাবএইড গ্রুপের নতুন কনসার্ন ‘ল্যাবএইড এআই’। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)-এর সাহায্যে আরও সহজে ও দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। রোগীর সেবাকে সহজ করতে এবং চিকিৎসকদের সক্ষমতা বাড়াতে দেশের অন্যতম পথিকৃৎ প্রতিষ্ঠান ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল এন্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টার আজ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলো ‘ল্যাবএইড এআই’-এর। এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যপ্রযুক্তি প্রবেশ করলো এক নতুন যুগে, যার লক্ষ্য মানবিক সহানুভূতি ও এআই-এর বুদ্ধিদীপ্ততার সমন্বয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া।
ল্যাবএইড এআই-এর এই ঐতিহাসিক যাত্রায় মূল আকর্ষণ হিসেবে বাজারে আসছে দুটি যুগান্তকারী সমাধান— চিকিৎসকদের জন্য LABAID-GPT এবং সর্বক্ষেত্রিক এআই এসিস্ট্যান্ট (সহকারী) LUNA।
ল্যাবএইড এআই প্রবর্তিত LABAID-GPT হলো ডাক্তারদের জন্য তৈরি করা একটি অত্যাধুনিক ডিজিটাল এসিস্ট্যান্ট। এটি চিকিৎসার আন্তর্জাতিক গাইডলাইন এবং অসংখ্য ক্লিনিক্যাল ডেটা বিশ্লেষণ করে চিকিৎসকদের দ্রুত প্রমাণ-ভিত্তিক (Evidence-based) ফলাফল দিতে সক্ষম। কঠিন রোগ নির্ণয়ের সময় চিকিৎসকদের মধ্যে যে দ্বিধা বা সংশয় তৈরি হয়, LABAID-GPT সেখানে নির্ভুল তথ্য দিয়ে তাঁদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে সহজ করে তুলবে। এই প্রযুক্তির কারণে রোগ নির্ণয়ের সময় লাঘব হবে, যা সরাসরি রোগীদের জন্য বড় সুবিধা নিয়ে আসবে। এর মাধ্যমে ল্যাবএইড এআই নিশ্চিত করতে চায়, যেন কোনো রোগীই ভুল রোগ নির্ণয় বা প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাবে ভোগান্তির শিকার না হন। LABAID-GPT চিকিৎসকদের কাজকে আরও সহজ করে তাঁদের মূল্যবান সময় বাঁচাবে, যাতে তারা রোগীর সেবায় আরও বেশি মনোযোগ দিতে পারেন। এছাড়াও, ল্যাবএইড জিপিটি ব্যবহার করে রোগীরাও পাবে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যথাযথ সুবিধা।
অন্যদিকে ল্যাবএইড এআই-এর আরেকটি বৈপ্লবিক উদ্ভাবন হলো LUNA, যা বৃহত্তর দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ইতিহাসে এক বিরল উদ্যোগ। এটি একটি বহুমুখী (Multi-domain) এআই চ্যাটবট এবং ব্যক্তিগত সহকারী, যা শুধুমাত্র চিকিৎসা সেবার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। LUNA-এর সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হলো এটি একইসাথে আটটি ভিন্ন চরিত্রে কাজ করতে পারে। LUNA একজন নার্স, একজন ডাক্তার সহকারী, একজন ব্যাংকার, একজন কর্পোরেট বিশেষজ্ঞ বা একজন আইনজীবীর মতো চরিত্র ধারণ করে আপনাকে আপনার কাজ সম্পন্ন করতে সহায়তা করবে। যেমন, একজন ডাক্তার সহকারী হিসেবে LUNA প্রেসক্রিপশনের তথ্য ব্যাখ্যা করবে এবং একজন ব্যাংকার হিসেবে আর্থিক প্রশ্নের জবাব দেবে। এই উদ্ভাবনী পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে এটি নিশ্চিতভাবেই বিশ্বের প্রথম কোম্পানি হতে যাচ্ছে, যারা এমন বহুমুখী এবং চরিত্রভিত্তিক AI এসিস্ট্যান্ট নিয়ে এলো। LUNA-এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত বা পেশাগত জীবনে প্রয়োজনীয় তথ্য ও পরামর্শ পাওয়া এখন হাতের মুঠোয়।
এই ঐতিহাসিক উদ্ভাবনের নেপথ্যে রয়েছেন তরুণ প্রজন্মের পথদ্রষ্টা ও অনুপ্রেরণা, উদ্ভাবক, সফল উদ্যোক্তা এবং ল্যাবএইডের কর্ণধার, ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল এন্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব সাকিফ শামীম। দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে তার অবদান সুদূরপ্রসারী। তার হাত ধরেই বাংলাদেশে প্রথম ডেডিকেটেড ক্যান্সার হাসপাতাল, ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল এন্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টার তৈরি হয়, যা চিকিৎসা সেবার এই কঠিন দিকটিকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে। একইসঙ্গে, ঘরে বসে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন টেলিমেডিসিন পরিষেবা লাইফপ্লাস বাংলাদেশ (Lifeplus Bangladesh)।
সাকিফ শামীমের সবচেয়ে গৌরবময় ও অনন্য অর্জন হলো—তিনি বৃহত্তর দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে প্রথম ব্যক্তি, যিনি স্বাস্থ্যসেবা খাতে এআই-এর ব্যবহারকে এই নজিরবিহীন স্তরে নিয়ে এসেছেন। আটটি পেটেন্টসহ লঞ্চ করা ল্যাবএইড এআই দক্ষিন এশীয় অঞ্চল তো বতেই, গোটা বিশ্বে এক বিরল অবস্থানে নিয়ে গেছে এবং ল্যাবএইড এআই-এর যাত্রার আগেই এই বিপুল উদ্ভাবনী অর্জন এক নতুন ইতিহাস তৈরি করেছে। জনাব শামীমের এই দূরদর্শী নেতৃত্বই বাংলাদেশের চিকিৎসা প্রযুক্তিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার পথ দেখাচ্ছে।
ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল এন্ড সুপার স্পেশালটি সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব সাকিফ শামীম এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে তাঁর দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, “আমাদের লক্ষ্য খুব সহজ। আমরা চাই উন্নত প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে মানুষের জন্য সহজে গুণগত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে। LUNA এবং LABAID-GPT-এর মাধ্যমে আমরা ডাক্তারদেরকে আরও শক্তিশালী করতে চাই, যাতে তাঁরা দ্রুত ও নির্ভুলভাবে সেবা দিতে পারেন। অপরদিকে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণকারী রোগীও তার প্রেসক্রিপশনের তথ্য ও যাবতীয় ব্যখ্যাসহ রোগ সংক্রান্ত সকল প্রকারের সমস্যার অতি দ্রুত সমাধান পাওয়ার মাধ্যমে উপকৃত হবেন। এটি কেবল শুরু, বাংলাদেশের মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবার ভবিষ্যৎ তৈরি করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।”
আমার বার্তা/এমই