ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে একদিনে আরও অন্তত ৭২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বুধবার গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭২ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এর ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়াল ৬৪ হাজার ৬৫৬ জনের বেশি। এ ছাড়া গাজা শহর দখলে নিতে ইসরায়েল তাদের হামলা আরও তীব্র করেছে। শহরটিতে ১০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি বাস করেন।
বার্তাসংস্থা আনাদোলুকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিম গাজা শহরে বাস্তুচ্যুত পরিবারের তাঁবুতে গোলাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে দুটি ফিলিস্তিনি পরিবারের অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া পশ্চিম গাজা শহরের বহুতলবিশিষ্ট টিবা–২ আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি সেনারা বোমাবর্ষণ করে। আগে থেকেই সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও হামলায় দুইজন নিহত হন।
রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম গাজার নাসের স্ট্রিটে বাস্তুচ্যুতদের একটি তাঁবুতে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় আরও পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আরেকটি ড্রোন হামলা হয় আল-আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালের কাছে প্যালেস্টাইন স্কোয়ারে একটি তাঁবুতে। এতে এক বেসামরিক নাগরিক নিহত হন এবং বেশ কয়েকজন আহত হন।
শেখ রাদওয়ান এলাকায় একত্রিত হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপরও গোলাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলি সেনারা। এতে একজন নিহত হন। ওই এলাকায় ধারাবাহিক হামলা চালানো হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
মধ্য গাজার বুরেইজ শরণার্থী শিবিরে একটি আবাসিক অ্যাপার্টমেন্ট লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান। এতে একজন নিহত হন এবং অনেকে আহত হন। দেইর আল-বালাহ শহরে একটি তাঁবুতে ড্রোন হামলায় এক শিশুর মৃত্যু হয় এবং আরও অনেকে আহত হন।
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের জালাল স্ট্রিটে ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে চারজন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজন শিশু।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ভয়াবহ এই অভিযানে পুরো উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং জনগণ চরম দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
এ ছাড়া গাজায় অভিযানের জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) চলছে গণহত্যার মামলা।
আমার বার্তা/এমই