গত বছরের শেষ দিকে মাদককাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে খবরের শিরোনাম হন টিভি নাটকের অভিনেত্রী—তানজিন তিশা, মুমতাহিনা চৌধুরী টয়া ও সাফা কবির। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, একটি বিশেষ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে নিয়মিত মাদক সংগ্রহ করছিলেন তাঁরা। তালিকায় সাফা কবিরের নাম থাকলেও এ নিয়ে কোনো কথা বলেননি তিনি। দীর্ঘ আট মাস পর এ অভিযোগ নিয়ে কথা বললেন সাফা কবির। মাদককাণ্ডে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে সাফা জানান, এমন খবর প্রকাশের পর তাঁর কর্মজীবনেও ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল।
সম্প্রতি এক পডকাস্টে অংশ নিয়ে ক্যারিয়ার ও জীবনের নানা বিষয়ে কথা বলেন সাফা কবির। মাদককাণ্ডের খবর নিয়ে প্রথমাবের মতো কথা বলেন তিনি। সাফা কবির বলেন, ‘নিউজটি দেখার পর পুরোপুরি শকড হয়েছিলাম। কী হচ্ছে এটা—এমনটাই শুধু ভাবছিলাম। এটা কেমন নিউজ। এরপর এই নিউজের আর কোনো আপডেট কেউ দিতে পারল না। কিন্তু এমন খবর প্রকাশের পর আমার ক্ষতি হয়ে গেল। বৃহস্পতিবার খবরটি প্রকাশ হয়। রোববার একটি ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি করার কথা ছিল। কিন্তু এমন খবরের কারণে তারা সেটা বাতিল করে দেয়। আমি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম যে এটা শুধু একটা নিউজ। এর সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কিন্তু তাদের কাছে এটা কীভাবে প্রমাণ করব। আমার কাছে প্রমাণ করার কিছু নেই, বোঝানো ছাড়া। আমার সিনিয়র আর্টিস্টরা আমার সঙ্গে কাজ বাতিল করে দিচ্ছিল। বিতর্ক এড়াতে আমার সঙ্গে কাজ করতে চাইছিল না। আমিও বুঝতে পারছিলাম সোশ্যাল মিডিয়ায় এটা নিয়ে ঝড় চলছে।’
সে সময় সাফার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন শোবিজের বন্ধুরা। সাফা বলেন, ‘সে সময় আমার শোবিজের বন্ধুরা পাশে দাঁড়িয়েছিল। তৌসিফ মাহবুব তখন বলেছিল, আমি সাফার সঙ্গে কাজ করব। এ ছাড়া জোভান ও সিয়ামও সে সময় মানসিকভাবে অনেক সহযোগিতা করেছে।’
সাফা মনে করেন, না জেনে সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো কিছু ছড়িয়ে দেওয়া যেমন উচিত নয়, তেমনি প্রমাণ হওয়ার আগে কাউকে দোষী ভাবাও ঠিক নয়। সাফা বলেন, ‘আমরা হুজুগে অনেক কিছু করে ফেলি। কিন্তু চিন্তা করি না, এ ধরনের কর্মকাণ্ড মানুষের জীবন বা সমাজে কী প্রভাব ফেলবে। আমাদের একটা পরিবার আছে, ওয়ার্ক লাইফ আছে—এগুলো কি কেউ চিন্তা করে? এমনিতেই মিডিয়াকে মানুষ ভালো চোখে দেখে না। এই ধরনের খবরের কারণে মা-বাবাদের মনে ধারণা জন্মাল, তাঁদের সন্তানেরা এখানে সুরক্ষিত না, তাঁদের এখানে কাজ করতে দেওয়া যাবে না। আমার মনে হয়, যেকোনো কিছু করার আগে দুইবার ভাবা দরকার।’
মিডিয়ার কাজ নিয়েও তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে বলে জানান সাফা। অভিনয় শুরুর পর একক নায়িকা চরিত্রে অভিনয়ে সুযোগ পেতে কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে তাঁকে। এখনো তাঁর লুকের কারণে সব ধরনের চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান না তিনি। আক্ষেপ করে সাফা বলেন, ‘অনেকেই বলে আমাকে বাঙালি লাগে না। এ কারণে গ্রামের মেয়ের চরিত্রগুলো আমার কাছে আসে না। এমনটা কেন ভাবে সেটা আমি বুঝি না। এখানে কস্টিউম আছে, মেকআপ আছে। কিন্তু কেউ এই ঝুঁকি নিতে চায় না।...আমার এমন কাউকে প্রয়োজন যিনি আমাকে বিশ্বাস করে এই ঝুঁকিটা নেবেন।’
আমার বার্তা/জেএইচ