
সরকারি তেল প্রতিষ্ঠান যমুনা অয়েলে চাকরি করে ব্যবসা করার কোনো সুযোগ নেই। অথচ এখানে চাকরি করে অনেকে মালিক বনে গেছে শতশত কোটি টাকার। প্রতিষ্ঠানটিতে তেল চুরির ঘটনা অহরহ। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন নিয়ন্ত্রিত যমুনা অয়েল,কিন্তু বাস্তব চিত্র হলো উল্টো তারাই নিয়ন্ত্রণ করছে বিপিসিকে। যমুনা অয়েলের অসংখ্য দুর্নীতিবাজদের মধ্যে অন্যতম একজন হলো ডিজিএম অপারেশন হেলাল উদ্দিন। চাকরি থেকে তিনি অবসরে চলে যাবেন চলতি মাসের ৩০ তারিখে। এই দীর্ঘ চাকরী জীবনে তার কোন বদলী নেই। ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠানটিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান তিনি। সহকারী অফিসার পদে চাকরী স্থায়ী হয় ১৯৯৭ সালের ১লা জানুয়ারী। প্রথমে পোষ্টিং পায় মেইল ইনস্টলেশন পতেঙ্গা টার্মিনাল অফিসের বাল্ক সেকশনে। মুলত যমুনা অয়েলের সবচেয়ে লোভনীয় পোষ্টিং হলো এই সেকশন। বেশী পরিমান তেল চুরি হয় এই সেকশন থেকেই। জাহাজের সুপারভাইজারদের মিলে মিশে সেই সময় থেকেই তেলে চুরিতে আভিভাব ঘটে হেলাল উদ্দিনের। চাকরী শুরু থেকে এই পর্যন্ত কখনো পতেঙ্গার টারমিনাল অফিস কখনো আগ্রাবাদ প্রধান কার্যালয়, ঘুরে ফিরে এই দুই অফিসেই চাকরি করে গেছে হেলাল উদ্দিন । বিগত আওয়ামিলীগ সরকারের আমলে তার স্ত্রীর বড় ভাই মহিউদ্দিন বাচ্চু ছিল চট্টগ্রাম মহানগরের শীর্ষ সন্ত্রাসী। পাশাপাশি ছিল চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সভাপতি এবং চট্টগ্রাম ১০ আসনের সাংসদও। স্ত্রীর বড় ভাইয়ের ক্ষমতার দাপটে তিনি হয়ে উঠেছিল যমুনা অয়েলের একক নিয়ন্ত্রক। একবার বগুড়ায় বদলির অর্ডার হয়েছিল, তবে মুহূর্তের মধ্যে তার সম্বন্ধির ক্ষমতার দাপটে সেই আদেশ স্থগিত হয়ে গেছে। অবশ্য কিছু দিনের জন্য অডিট এ আগ্রাবাদ শাখায় কর্মরত ছিল, কিন্তু ফের এজিএম টার্মিনাল অফিসে পদায়ন করা হয়। ডিজিএম পদে পদোন্নতি পরেও একই সাথে পতেঙ্গা টার্মিনাল অফিসের এজিএম টার্মিনাল পদে দায়িত্ব পালন করছে।
চাকরি জীবনে মালিক হয়েছে নুন্যতম পাঁচশ কোটি টাকার। নিজে ব্যবহার করে প্রিমিও মডেলের প্রাইভেট কার, যার নাম্বার চট্টগ্রাম মেট্রো গ ১২- ৫৬১০। গাড়ীটির দাম পয়ত্রিশ লাখ তবে যমুনা অয়েল থেকে তিনি গাড়ী কেনা বাবদ ঋন নিয়েছে মাত্র দুই লাখ টাকা। স্ত্রীর ব্যবহার করে Havel মডেলের একটি জীপ। কানাডায় রেখে পড়াশোনা করিয়েছে ছেলেকে, বানিয়েছে পাইলট। সেখানে আছে নিজস্ব ফ্ল্যাটও। বর্তমানে সেই ফ্ল্যাটে থাকছে তার ছেলে ও মেয়ে। কিনেছে মালয়েশিয়াতেও ফ্লাট, সেই ফ্ল্যাটের বর্তমানে ভাড়াটিয়া সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেতা আক্তারুজ্জামান বাবুর সহোদর বদিরুজ্জামানের ছেলে। চট্টগ্রামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণপুর্ন পাঁচলাইশ এলাকার আনিকা কমিউনিটি সেন্টারের পাশে ৭৭৫/৮৮৫ কাতলগন্জ আসিফ হাউজ নামে পাচ তলা ভবনটির মালিক এই হেলাল উদ্দিন। সাত আট বছর আগে পাঁচ কাঠার জায়গার উপর বাড়ীটি ক্রয় করেন তিনি । যার বর্তমান বাজার মুল্য দশ কোটি টাকারও বেশি।সম্পাদিত দলিল রেজেষ্ট্রিও হেলাল উদ্দিনের নিজের নামে। বাড়িটির নাম দেয়া হয় তার ছেলে আসিফের নামে ( আসিফ হাউজ) । বছর পাচেক আগে একই এলাকাতে কাতালগন্জ আবাসিক এলাকার ৪ নং রোডের কালীবাড়ির পাশে ফিফট কনভেনশন হলের বিপরীত পাশে আট শতাংশ জায়গায় উপর পাঁচ কোটি বিশ লাখ টাকায় আরেকটি পাঁচতলা বাড়ি কিনেন। নাম দেয়া হয় জি ভিলা। বছর দেড়েক আগে সেই বাড়িটি ভেঙে দশতলা ভবন নির্মান কাজে হাত দেয় । অবশ্য গত বছর ৫ আগষ্ট ২০২৪ সালে দেশের পটপরিবর্তনের পর ভবনের নির্মাণ কাজ সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে । রাউজানের সুলতানপুর নিজ গ্রামে নিজেরটা ছাড়াও একই ডিজাইনে পাঁচ ভাইকে পাঁচটি বাড়ি করে দিয়েছে। নামে বেনামে কিনে রেখেছে শত কোটি টাকার সম্পত্তি।
অভিনব পদ্ধতিতে ডিজিএম হেলাল উদ্দিনের তেল চুরি
চলতি বছরের জুলাই মাসের ঘটনা। খুলনা দৌলতপুর ডিপোতে এক অভিনব পদ্ধতিতে তেল চুরি হয়। ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির ডিজিএম অপারেশন হেলাল উদ্দিন ও এজিএম অপারেশন ( ডিপো) শেখ জাহিদ আহমেদের বিরুদ্ধে । ইতিমধ্যে তেল চুরির বিষয়টি ধামাচাপা দিতে সক্ষম হয়েছে সিন্ডিকেট প্রধান হেলাল উদ্দিন । দীর্ঘ বছর ধরে যমুনা অয়েলের ১৫ টি ডিপাতেই একই পদ্ধতিতে তেল চুরির ঘটনা অহরহ। ঘটনা ফাঁস হয়ে গেলে নিজেরাই নিজেদের বিরুদ্ধে গঠন করে তদন্ত কমিটি। এরফলে ধামাচাপা পড়ে যায় অধিকাংশ তেল চুরির ঘটনাগুলো। এর ব্যতয় ঘটেনি দৌলতপুর ডিপোর বেলায়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে দৌলতপুর ডিপোতে তেল চুরির ঘটনাটি ঘটেছে অনেকটা কৌশলী পদ্ধতিতে। যেমন ট্যাংকলরিটি সাড়ে তের হাজার লিটার কিন্তু চুক্তিপত্রে দেখানো হয় নয় হাজার। বাড়তি সক্ষমতার বিষয়টি সুকৌশলে গোপন করে চুক্তিনামার মাধ্যমে তেল ‘চুরি’ করার অভিনব জালিয়াতির নেপথ্যের নায়ক ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার অপারেশন হেলাল উদ্দিন।
যমুনা অয়েল কোম্পানি সূত্র বলছে, খুলনার দৌলতপুর ডিপো থেকে তেল পরিবহনের জন্য চলতি বছরের ২৭ জুলাই মেসার্স আছিয়া এন্টারপ্রাইজ, প্রোপাইটার মো : মানিক শেখ পিতা মো : নুর ইসলাম, খুলনা -যশোর রোড নতুন রাস্তা দৌলতপুর খুলনা, একটি ট্যাংকলরির সঙ্গে চুক্তি হয়। যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের পক্ষে চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করে এমডি মুস্তফা কুদরত ই ইলাহি, ডিজিএম অপারেশন হেলাল উদ্দিন, এজিএম ডিপো অপারেশন শেখ জাহিদ আহমেদ । অবশ্য এই চুক্তিপত্রে শেখ জাহিদ আহমেদের স্বাক্ষরটি নেয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির আইনের নিয়ম বহিভুত ভাবে। প্রচলিত নিয়মে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করার কথা এজিএম ( এস এন্ড ডি ) । ট্যাংকলরির চুক্তিনামায় এজিএম ডিপো (অপারেশন) স্বাক্ষরের বিধান না থাকা সত্বেও হেলান উদ্দিন ক্ষমতার দাপটে সেটা করা হয়েছে । অবশ্য চুক্তিনামার ফাইলটি প্রথমে এজিএম (এস এন্ড ডি ) কাছে পাঠানো হয়েছিল । বিষয়টি ঘাপলা টের পেয়ে তিনি ফাইলটি ফেরত পাঠিয়ে দেয়। পরবর্তীতে চুক্তিতে স্বাক্ষর নেয়া হয় এজিএম ডিপো অপারেশনের। অবশ্য তিনিও হেলাল উদ্দিন সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য। চুক্তিপত্র সম্পন্নের পরবর্তী ধাপে ১০ আগষ্ট যমুনা অয়েলের ডিজিএম ( অপারেশন) হেলাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে আছিয়া এন্টারপ্রাইজ মালিককে বলা হয় পেট্রোলিয়ামজাত দ্রব্য পরিবহনের জন্য ট্যাংকলরী নং ঢাকা মেট্রো ঢ - ৪২০০১২ ধারণ ক্ষমতা ৯.০০০ লিটার এর পরিবহন চুক্তি পত্র । চিঠির মুল মুল বক্তব্য হলো আছিয়া এন্টারপ্রাইজের আবেদনের পরপ্রেক্ষিতে জেওসিএল'র ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মহোদয়ের সদয় অনুমোদনের প্রেক্ষিতে বিষোয়ক্ত ট্যাংকলরী খানা পেট্রোলিয়ামজাত দ্রব্য পরিবহনের নিমিত্তে নতুন ভাবে চুক্তিপত্র সম্পাদনের মাধ্যমে যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডে এ অন্তুভুক্ত করা হলো , যা ২৭ জুলাই ২০২৫ থেকে কার্যকর, মেয়াদ আগামী ২৬. ০৭.২০২৮ তারিখ পর্যন্ত, অর্থ্যাৎ তিন বছর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এদিকে চুক্তির কয়েক দিন পর ট্যাংকলরিটিতে করে বাগেরহাটের রামপাল বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশীপ পাওয়ার কোম্পানী লিমিটেড বিদ্যুৎকেন্দ্রে ডিজেল পাঠানো হয়; কিন্তু ট্যাংকলরিটির ধারণ সক্ষমতায় অসামঞ্জস্য দেখতে পেয়ে ডিজেল গ্রহণে অসম্মতি জানান বিদ্যুৎকেন্দ্রের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। আছিয়া এন্টারপ্রাইজের ট্যাংকলরিটির ধারণ সক্ষমতার অসামঞ্জস্য ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের তেল গ্রহণে আপত্তির খবরটি ছড়িয়ে পড়ে। তখন এই অসামঞ্জস্যতার বিষয়টি নিয়ে যমুনা অয়েল কোম্পানির কাছে আপত্তি জানান ট্যাংকলরির মালিক ও শ্রমিকেরা।তেল পরিবহনের ভাড়া চুক্তি করার আগে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) থেকে লরির সক্ষমতা যাচাই (ক্যালিব্রেশন) করে সনদ নিতে হয়। নেয়াও হয়েছে, তবে এতেও রয়েছে মহা জালিয়াতি। বিএসটিআই থেকে নেওয়া সনদের একটি প্রতিলিপি যমুনায় জমা দেওয়া হয়েছে। এতেও লরিটির তেল ধারণের সক্ষমতা ৯ হাজার লিটার দেখানো হয়েছে।সনদ অনুযায়ী, গত ২৫ জুন ক্যালিব্রেশন করে স্বাক্ষর করেছেন বিএসটিআই খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আলাউদ্দিন হুসাইন।সনদটি যাচাই করতে বিএসটিআই খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হয়৷ কার্যালয় থেকে জানানো হয়, সনদে স্বাক্ষরকারী এই কর্মকর্তা গত জানুয়ারিতে ঢাকায় বদলি হয়ে গেছেন। তাই তাঁর স্বাক্ষর করার কোনো সুযোগ নেই। আসলে সনদটি জাল। সনদে থাকা কিউআর কোড স্ক্যান করে ‘ঝিনাইদহ-ঢ-৪১-০০৩৮’ নম্বর গাড়ির ক্যালিব্রেশন প্রতিবেদন পাওয়া যায়। এটি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে নেওয়া। এই গাড়িটিও আছিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক নাম মো. মানিক শেখের।
এবিষয়ে ট্যাংক লড়ির মালিক মানিক শেখের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আমার বার্তাকে বলেন , ভুল করে বেশি ধারণক্ষমতার লরি দিয়ে কম তেল পরিবহনের চুক্তিটি করেছেন। বাড়তি তেল নেওয়ার জন্য লরির প্রকৃত ধারণ সক্ষমতা কম দেখাননি। আপত্তির কারণে তিনি চুক্তিটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। প্রকৃত পক্ষে ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে বেকায়দা পরে যায় যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ডিজিএম অপারেশন হেলাল উদ্দিন। । নিজেদের রক্ষা করতে সমজোতা করে দুই পক্ষ। পরবতীতে লড়ির মালিক ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক জটিলতার কারন দেখিয়ে চুক্তিটি বাতিলের আবেদন করেন৷ ১৮ আগস্ট যমুনার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বরাবর চিঠিতে বলা হয়, ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক জটিলতার কারণে ট্যাংকলরিটি পরিচালনা করা যাচ্ছে না। তাই চুক্তি বাতিল করে জামানতের ৫ লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয় সেই চিঠিতে।
তবে সূত্র বলছে, জালিয়াতির বিষয়টি সামনে আসায় তড়িঘড়ি করে চুক্তিটি বাতিলের একটি চিঠি তৈরি করে যমুনা অয়েল। মানিক শেখের আবেদনের আগেই অর্থাৎ চিঠিটি ৩ আগস্ট চুক্তি বাতিলের সই করা দেখানো হয়। যদিও ১৭ আগস্টও ট্যাংকলরিটি ডিপো থেকে তেল পরিবহন করে। এরপর দ্রুত সংশোধন করে যমুনা অয়েল আরেকটি বাতিলের চিঠি দেয় ১৮ আগস্ট । দুদফা বাতিলের দুটো চিঠিতেই স্বাক্ষর করেন ডিজিএম অপারেশন মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন । আছিয়া এন্টারপ্রাইজ বরাবর এবারের চিঠির মুল বিষয় বস্তু হলো , বিষয় দৌলতপুর ডিপোতে ট্যাংকলরি ঢাকা মেট্রো ঢ ৪২০০১২ এর পরিবহন চুক্তি বাতিল প্রসঙ্গে । পত্রের চুম্বক অংশটুকু হলো ট্যাংকলরীটী আবেদনে ৯.০০০ লিটার ক্যালিব্রেশন এর কথা উল্লেখ থাকলেও মুলত আপনার ট্যাংকলরীটি ১৩.৫০০ লিটার, যেখানে ৯.০০০ লিটারের চেম্বার ২ টি হয় সেখানে ১৩.৫০০ লিটার হওয়াতে ৩ টি চেম্বার রয়েছে। আপনার ট্যাংকলরিতে তেল লোড দেয়ার সময় তেল ঘাটতির সম্ভবনা আছে৷। তাই চুক্তিটি বাতিল করা হলো । এদিকে আছিয়া এন্টারপ্রাইজ তাদের চিঠিতে বলেছে ব্যক্তিগত সমস্যার কথা, আর যমুনা অয়েল বলছে তেল ঘাটতির সম্ভবনার কথা৷
এদিকে গোপন চুক্তিটির বিষয়টি ফাঁস হওয়ায়,এর সাথে জড়িত কর্মকর্তারা অনেকটা বেকাদায় পরে যায় । দুই দফা চুক্তি বাতিলের পর, এবার নিজেরাই নিজেদের মতো করেছে তদন্ত কমিটি। তবে মজার বিষয় হলো যার বিরুদ্ধে এই অভিনব গোপন চুক্তির অভিযোগ , তার স্বাক্ষরেই করা হয়েছে তদন্ত কমিটি । যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড সুত্রে জানা গেছে ২৮ আগষ্টে ডিজিএম অপারেশন হেলাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে । এতে তার সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য হিসাবে পরিচিত ঢাকা লিয়াজো অফিসের এজিএম সেলস সৈয়দ সফিকুর রহমানকে আহবায়ক এবং সদস্য করা হয়েছে চট্টগ্রাম অফিসের ডিএম সেলস মো; জসীম উদ্দিনকে। চিঠিতে বলা হয়েছে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট নিন্ম স্বাক্ষরকারী ডিজিএম অপারেশন হেলাল উদ্দিনের কাছে প্রদান করতে। যত দুর জানা গেছে অদ্যবধি তদন্ত কমিটি কোন প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কিনা তা পরিস্কার নয়। এবিষয়ে একাধিকবার তদন্ত কমিটির প্রধানকে ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি। এভাবেই ধামাচাপা পরে যায় অভিনব পদ্ধতিতে এই জালিয়াতির ঘটনা।
চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর, দুই দফা চুক্তি বাতিল, সর্বশেষ তদন্ত কমিটির চিঠিতেও স্বাক্ষর করেছে ডিজিএম অপারেশন হেলাল উদ্দিন। এদিকে আগের তিনটি চিঠিতে বলা হয়েছে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অনুমোদন ক্রমে, কিন্তু তদন্ত কমিটির চিঠিতে একবারও বলা হয়নি ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নির্দেশ কিংবা অনুমোানক্রমে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো। যেই চুক্তিপত্রে হেলাল উদ্দিন এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নিজেদের স্বাক্ষর রয়েছে, সেখানে তদন্ত কমিটি হওয়ার কথা ওদের বিরুদ্ধে । সেখানে ডিজিএম অপারেশন নিজের স্বাক্ষরে নিজের মতো করে, কিভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করে। বলা চলে তদন্ত কমিটি গঠনের ক্ষমতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিজেই রাখেনা, সেখানে হেলাল উদ্দিনের তদন্ত কমিটি গঠনেরতো প্রশ্নই আসেনা। এবিষয়ে হেলাল উদ্দিনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়, তবে তার মোবাইলে ফোনে যাচ্ছেনা। এদিকে যমুনা অয়েল সুত্রে জানা গেছে হেলাল উদ্দিনের মোবাইল ফোন খোলাই আছে, তবে মোবাইল অপশনে এমন কিছু করে রেখেছে অপরিচিত নাম্বার থেকে তার মোবাইলে ফোন ঢুকেনা।
আমার বার্তা/এমই

