অবশেষে সামনে এলো ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির রিপোর্ট। নাসুমকে হাথুরুর চড় কাণ্ড এবং সাকিব-তামিম দ্বন্দ্বসহ বেশ কিছু আলোচিত বিষয় উঠে এসেছে ঐ রিপোর্টে।
কমিটির কাছে সাক্ষাৎকারে ক্রিকেটার নাসুম আহমেদকে কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহের লাঞ্ছিত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তৎকালীন এক কোচিং স্টাফ। আর ঐ সময় দলের অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা সাকিব আল হাসানের দাবি, সেই ঘটনা ফাঁস করতে উস্কানি দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। এদিকে তিন সদস্যের কমিটিকে তামিম বলেছেন, সাকিবের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করেছিলেন তিনি।
২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি নামের বিশেষ তদন্ত কমিটি করে বিসিবি। কিন্তু দিন-মাস-বছর পেরিয়ে দেড় বছর কেটে গেলেও কোনো এক অজানা কারণে সেই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি ক্রিকেট বোর্ড। অবশেষে সময় সংবাদের হাতে এসেছে তা। আর তাতেই অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এলো।
ভারতের মাটিতে সেই বিশ্বকাপে চরম ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানে এই স্পেশাল কমিটি গঠন করেছিলো নাজমুল হাসান পাপনের বোর্ড। ৩ সদস্যের কমিটিতে ছিলেন এনায়েত হোসেন সিরাজ, মাহবুব আনাম ও আকরাম খান। অনুসন্ধানে নেমে ঐ বছর ৩ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪'এর জানুয়ারির মধ্যে ৮ ক্রিকেটার, ২ নির্বাচক, একজন বোর্ড পরিচালক এবং কোচিং স্টাফ ও টিম ম্যানেজমেন্টের ৫ জনের সাক্ষাৎকার নেয় কমিটি। সেখানে আলোচিত অনেক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পান তারা। যার মধ্যে ছিলো নাসুম আহমেদকে চান্ডিকা হাথুরুসিংহের আলোচিত চড় কাণ্ড।
রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, চেন্নাইয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ চলাকালীন হাথুরু-নাসুম কাণ্ডের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন স্ট্রেন্থ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ নিকোলাস লি। এবং নাসুমের ঘাড়ে হাথুরুর আঘাত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি। আরও বলা হয়, সাবস্টিটিউট হিসেবে থাকা নাসুমকে ক্রিজে থাকা ব্যাটসম্যানদের কিছু একটা দ্রুত দিয়ে আসতে বলেছিলেন হাথুরু। সেখানে কালক্ষেপণ করায় রেগে গিয়ে তার কলার ধরে টান দেন লঙ্কান কোচ।
কাহিনী শেষ হয়নি এখানে। এরপর এই ঘটনা ফাঁস হয় গণমাধ্যমে। ঐ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান কমিটির কাছে সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, নাসুমকে ফোন করে ঘটনা ফাঁসে প্ররোচনা দিয়েছিলেন নানা নাটকের মধ্য দিয়ে ক্যাপ্টেন্সি হারানো তামিম ইকবাল ও সেসময়ের ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস।
মূলত বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে হুট করে সাকিব-তামিম দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। তামিমের অবসর, আবার অবসর ভেঙে ফিরে আসা, অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হওয়া, বিশ্বকাপ দলে না থাকা–আর এসব ঘটনার পর সাকিবের বিশ্বকাপে নেতৃত্ব পাওয়া–সবকিছু নিয়ে ভীষণ অস্থির সময় কেটেছে দেশের ক্রিকেটে। তবে, ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির কাছে তামিম পরে বলেছেন যে, সাকিবের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে নাকি বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।
দুই সিনিয়রের সম্পর্কে ফাটল ব্যাপক ক্ষতি করেছিল দেশের ক্রিকেটকে। কোচ ও ক্রিকেটার কিংবা কোচদের পারস্পরিক সম্পর্কের টানাপোড়েনে ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ হয়েছিলো ২৩'এর বিশ্বকাপে।
আমার বার্তা/এল/এমই