বগুড়ার ধুনটে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, ভিডিও ধারণ ও পরে আলামত নষ্টের অভিযোগে সাবেক ওসি কৃপা সিন্ধু বালা এবং শিক্ষক মুরাদুজ্জামান মুকুলের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল হয়েছে।
বুধবার বিকালে বগুড়ার দ্বিতীয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জিয়া উদ্দিন মাহমুদ চার্জশিট আমলে নেন। পাশাপাশি দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এর আগে মঙ্গলবার বিকালে পিবিআই বগুড়ার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। সন্ধ্যায় পিপি মোজাম্মেল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
চার্জশিটভুক্ত দুই আসামি হলেন-ধুনট উপজেলার জালশুকা হাবিবর রহমান ডিগ্রি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক মুরাদুজ্জামান মুকুল এবং গাজীপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশে কর্মরত ধুনট থানার সাবেক ওসি কৃপা সিন্ধু বালা।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক মুরাদুজ্জামান মুকুল ২০২২ সালের ১২ এপ্রিল বগুড়া ধুনট পৌরসভার অফিসারপাড়ার স্কুলপড়ুয়া এক মেয়েকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি সে মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখেন। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার স্কুলছাত্রীর মা ধুনট থানায় মুকুলের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা ধুনট থানার তৎকালীন ওসি কৃপা সিন্ধু বালা আসামি মুরাদুজ্জামান মুকুলকে গ্রেফতারের পর জব্দ করা মোবাইল ফোনে ছাত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও ধারণের প্রমাণ পান। কিন্তু তিনি আসামির কাছে ঘুস নিয়ে ধর্ষণের ভিডিও দৃশ্যসহ কিছু আলামত নষ্ট করেন। বিষয়টি জানতে পেরে বাদী এর প্রতিকার চেয়ে বগুড়ার পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে কৃপা সিন্ধু বালাকে ধুনট থানা থেকে প্রত্যাহার ও মামলাটি ডিবি পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করে বগুড়া পিবিআইর এসআই সবুজ আলীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে ওসি কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে মামলার আলামত নষ্টের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে সাক্ষীরা মৌখিক ও লিখিত সাক্ষ্য দেন। কিন্তু এসআই সবুজ আলী সাবেক ওসি কৃপা সিন্ধু বালাকে বাঁচাতে তাকে বাদ দিয়ে গত ২০২৪ সালের ২৪ মার্চ আদালতে মনগড়া চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর বাদী নারাজির আবেদন করলে আদালত সম্পূরক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বগুড়ার পিবিআইকে নির্দেশ দেন। এ অবস্থায় ছয়জন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়। শেষে বগুড়া পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম মঙ্গলবার বিকালে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
তিনি জানান, সাক্ষ্যপ্রমাণে প্রাথমিকভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ধর্ষণ মামলার এজাহারনামীয় আসামি মুরাদুজ্জামান মুকুলের বিরুদ্ধে চার্জশিট এবং আলামত নষ্টের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাবেক ওসি কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। আদালত চার্জশিট আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
আমার বার্তা/এল/এমই