ভারতের গুজরাট রাজ্যে আসন্ন নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা নিয়ে এক নতুন এবং ব্যাপক বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছে। রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি অমিত ছাভড়া এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছেন। তার দাবি, রাজ্যে অন্তত ৬২ লাখ ভুয়া ভোটার তালিকাভুক্ত হয়েছে।
তিনি সরাসরি এই ‘ভোট চুরির’ দায় বিজেপির ওপর চাপিয়েছেন। দাবি করেছেন, এই ভুয়া ভোটারদের মাধ্যমেই বিজেপি সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে রেকর্ড জয়ের ভিত গড়েছে। এদিকে পঞ্চায়েত ভোটের আগে ভারতের উত্তরপ্রদেশে রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন পার্টি বিজেপি।
স্থানীয় নির্বাচন কমিশনের দাবি, রাজ্যে এক কোটি ভুয়া ভোটারের সন্ধান পাওয়া গেছে। কমিশন জানিয়েছে, একই নাম ও ঠিকানা একাধিকবার ব্যবহার হয়েছে এমন অনেক ভোটার আছে রাজ্যটিতে। অনেক ভোটারের বয়স ও লিঙ্গ পর্যন্ত হুবহু মিলে গেছে।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এবারই প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ফেস রেকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কমিশনের রিপোর্ট হাতে আসতেই রাজ্যজুড়ে আলোড়ন পড়ে গেছে। বুথ লেভেল অফিসারদের ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারের বৈধতা যাচাই করতে। সন্দেহজনক নাম পাওয়া গেলে দ্রুত তালিকা থেকে বাদ দেওয়ারও নির্দেশ রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, কংগ্রেসের এই অভিযোগ শুধু রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির হাতিয়ার নয়, বরং এটি ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্যও একটি গুরুতর সতর্কবার্তা। যখন ভোটার তালিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, তখন পুরো নির্বাচনী ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা ভেঙে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। এই বিতর্কটি এখন আদালত, নির্বাচন কমিশন এবং জনমতের আদালতে পরীক্ষা হবে।
যদি কংগ্রেস তাদের উত্থাপিত তথ্যপ্রমাণ সফলভাবে উপস্থাপন করতে পারে, তাহলে তা বিজেপির জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করবে। অন্যথায়, এই অভিযোগগুলো নিছক রাজনৈতিক অভিযোগ হিসেবেই বিবেচিত হবে। তবে ৬২ লাখের মতো একটি বিশাল সংখ্যক ভুয়া ভোটারের অভিযোগ ইতিমধ্যেই ভারতজুড়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এবং দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হচ্ছে।
রাজ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা রাজপ্রতাপ সিং জানিয়েছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে এআই প্রযুক্তির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বিরোধীরা বলছে, দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া ভোটারদের আশ্রয় দিয়ে বিজেপি ভোটের সুবিধা নিয়েছে। এবার সেই সুযোগ কেটে দেওয়ায় শাসক দল কার্যত কোণঠাসা হয়ে পড়ছে।
কমিশন জানিয়েছে সংবেদনশীল বুথগুলোতে বাড়তি নজরদারি থাকবে এবং প্রতিটি অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে যাতে নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন না ওঠে।
আমার বার্তা/এল/এমই