
জাহানারা আলমের ইস্যুতে উত্তাল ক্রিকেটপাড়া। পরশু জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের সাবেক নির্বাচক এবং টিম ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু ও প্রয়াত সাবেক ইনচার্জ তাওহীদ মাহমুদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন সাবেক এই অধিনায়ক।
জাহানারা যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছিলেন ক্রীড়া সাংবাদিক রিয়াসাদ আজিমকে দেওয়া ইউটিউব সাক্ষাৎকারে। তার দাবি, বিসিবির কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি। এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পরশুই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা জানিয়েছে বিসিবি। কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন জাতীয় দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। তামিম ইকবাল ও মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার পর কথা বলেছেন মুশফিকুর রহিম। জাহানারার অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষীদের যথাযথ শাস্তি দাবি করেছেন তিনি।
গতকাল এক ফেসবুক পোস্টে মুশফিক লেখেন, ‘সম্প্রতি আমাদের ক্রিকেট সম্প্রদায়ে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভয়াবহ খবরের কথা জানতে পেরেছি। আমি যদিও ঘটনার দুই দিক বা পুরো সত্যটা জানি না, তবুও আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে এই পৃথিবীতে কোনো ধরনের হয়রানির স্থান নেই, আপনি যেই হোন না কেন, আপনার লিঙ্গ বা অবস্থান যাই হোক না কেন। যদি অভিযোগগুলো প্রমাণিত হয়, তাহলে দোষীদের অবশ্যই যথাযথ শাস্তি ও জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হবে। যারা এই কঠিন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন, তাদের প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন ও সংহতি রইল। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক পথ দেখান এবং ক্ষতিগ্রস্তদের শক্তি ও ধৈর্য দান করুন।’
তামিম ইকবালও জাহানারার অভিযোগটিকে ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেছেন। তার দাবি, সরকারি বা স্বাধীন পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের, যাতে বিসিবি সংশ্লিষ্ট কাউকে রাখা হবে না। তামিম লেখেন, ‘জাহানারা আলম যে অভিযোগগুলো তুলেছেন, সবগুলোই গুরুতর এবং সেসব সত্যি হলে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়...। বিসিবি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বটে। তবে আমি মনে করি, এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কিংবা সরকারি পর্যায়ে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করা উচিত, যেখানে বিসিবি সংশ্লিষ্ট কেউ থাকবেন না, যাতে বিন্দুমাত্র পক্ষপাতের সুযোগ না থাকে। যত দ্রুত সম্ভব এই কমিটি গঠন করা উচিত ও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ব্যাপারটিকে দেখা উচিত। দ্রুততার সঙ্গে তদন্ত শেষ করে দোষী যে-ই হোক, যার যতটুকু দায় থাকুক, উপযুক্ত ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।’
মাশরাফী প্রভাবমুক্ত তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেট ও গোটা ক্রীড়াঙ্গনের স্বার্থে জাহানারা আলমের প্রতিটি অভিযোগ বিসিবি গুরুত্ব দিয়ে দেখবে আশা করি। আশা করি, বিসিবির তদন্ত কমিটি পুরোপুরি প্রভাবমুক্ত থেকে কাজ করবে এবং অভিযোগের সত্যতা পেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে, যেন এসবের পুনরাবৃত্তি আর কখনো না হয়। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন নিরাপদ হোক সবার জন্য।’
অভিযুক্ত মঞ্জুরুলও এ নিয়ে কথা বলেছেন। নিজের ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে মঞ্জুরুল লিখেছেন, ‘অভিযোগের পর বিসিবি জানিয়েছে, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সেই কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবে। নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। বিসিবি ছাড়াও রাষ্ট্রীয়ভাবে যদি কোনো তদন্ত কমিটি গঠন হয়, আমি সেগুলো ফেস করবো এবং আমার বক্তব্য তুলে ধরবো। এর আগে আমি এ বিষয়ে কথা বলা থেকে বিরত থাকছি।’
আমার বার্তা/এল/এমই

