তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনসহ পুরো সংস্কার প্রক্রিয়ার গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদ তৈরি করে আইনগত ভিত্তি দিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
শনিবার (১৮ সে) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানান জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।
তিনি বলেন, আমরা যেসব বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করব কিংবা ঐকমত্য হয়নি কিন্তু পরিবর্তনের জন্য সেসব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এসব বিষয়কে ইস্যু করে কি পদ্ধতিতে এটার আইনগত ভিত্তি দেওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পক্ষ থেকে আমরা গণভোট চাই বলেছি। গণভোটের মাধ্যমে আমরা জুলাইয়ের সনদ হোক কিংবা জাতীয় সনদ হোক, এর বাইরেও যদি কিছু থাকে সেগুলো ইনক্লুড করে গণভোট চেয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
গণভোট কেন চান এর ব্যাখ্যা দিয়ে জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, গণভোট হচ্ছে সব মানুষের মৌলিক প্রতিনিধিত্বমূলক একটি ব্যবস্থা। সাধারণ মানুষ এতে সিদ্ধান্ত দেবে। গণভোটের মাধ্যমে আইনগত ভিত্তি হবে। এর মধ্যে সামাজিকভাবে রাজনীতিবিদদের কাছে প্রতিনিধিত্বের যে বিষয়টি আছে সেটার জন্যই আমরা গণভোট চেয়েছি।
লোয়ার হাউজ, আপার হাউজ উভয় নির্বাচনই কি জামায়াত পিআর পদ্ধতিতে চাইছে জানতে চাইলে তাহের বলেন, আমরা পিআর পদ্ধতিতেই দুটো নির্বাচন চেয়েছি।
সংস্কার কীভাবে বাস্তবায়িত হবে সেজন্য সংবিধান সংস্কার কমিশন থেকে ছয়টি পয়েন্ট দেওয়া হয়েছিল। জাতীয় নির্বাচনের আগে, অধ্যাদেশের মাধ্যমে, নির্বাচনের আগে গণভোটের মাধ্যমে, নির্বাচনের সময় গণভোটের মাধ্যমে, গণপরিষদের মাধ্যমে, নির্বাচনের পরে সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে এবং গণপরিষদ ও আইনসভা হিসাবে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে। এর আগে এর মধ্যে একটিতেও টিক চিহ্ন না দিয়ে ফাঁকা রেখেছিল জামায়াতে ইসলামী।
আজ জামায়াতে ইসলামী গণভোটের বিষয়ে জোর দিয়েছে। তবে গণভোট কি জাতীয় নির্বাচনের আগে চাইছেন? এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, এটি কখন হতে পারে সেটা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে আমাদের প্রধান পলিসি স্টেটমেন্ট হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনসহ পুরো সংস্কারের আইনি ভিত্তি দিতে হলে গণভোট দিতে হবে, সেটাই আমরা চেয়েছি।
উল্লেখ্য, রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসময় আলোচনায় ১২০টির বেশি বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছে জামায়াতে ইসলামী। কোনো কোনো ক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে গিয়ে জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য দেয়।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠক জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন কমিশন সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহেরের নেতৃত্বে দলটির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি (ভারপ্রাপ্ত) এ টি এম মাসুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ ও বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
আমার বার্তা/এমই