মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য ঘুম অপরিহার্য। আজকাল দেখা যায় অনেকের মধ্যেই ঠিকমতো ঘুম না হওয়ার প্রবণতা দেখা যায় ফলে এর প্রভাব পড়ে দৈনন্দিনের কাজকর্মে। দীর্ঘমেয়াদি ঘুমের অভাব মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে। তবে আপনার যদি টানা এক সপ্তাহ ঠিকমতো ঘুম না হয়, তাহলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা হ্রাস, মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি হ্রাস ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমস্যাসহ হতে পারে মারাত্মক পরিণতি। এ প্রসঙ্গে ভারতের নিউরোলজিস্ট ডা: শ্যামলাল এস বলেন, ‘৪৮ ঘন্টারও বেশি সময় না ঘুমালে মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি হ্রাস পাওয়াসহ মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ধীর হয়ে যেতে থাকে এবং মানুষ উদ্বিগ্ন, বিরক্ত হয়ে যায় এবং ক্রমাগত মানুষের মেজাজ পরিবর্তন হতে থাকে।‘
ঘুমের অভাব মস্তিষ্কের পাশাপাশি মানসিক ও শারীরিক মস্তিষ্কের কার্যকারিতাসহ প্রায় প্রতিটি দিককেই প্রভাবিত করে। যা আপনি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেখতে পারবেন। তারপর তৃতীয় দিনের মধ্যে হ্যালুসিনেশন, প্যারানয়াসহ দিশেহারা হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা শুরু হতে পারে। এরপর ৫ম থেকে ৭ম দিনের মধ্যে, তীব্র মস্তিষ্কের বিকৃতি দেখা দেয়। দৃশ্যমান এবং শ্রবণশক্তির হ্যালুসিনেশন বেড়ে ওঠে। পাশাপাশি, স্মৃতি গঠনেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কথাবার্তা ঝাপসা হয়ে যেতে শুরু করে এবং চিন্তাকরার ক্ষমতা একদম কমে যেতে পারে।
ঘুমের অভাবে কর্টিসলের মতো স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে, যা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে এবং গ্লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না-যা সময়ের সাথে সাথে আলজাইমারের মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের কারণ হতে পারে।
এক সপ্তাহ ঘুম না থাকলে মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি হয়। ফলে মস্তিষ্কের অবক্ষয়, মেজাজ ক্রমাগত পরিবর্তন, হ্যালুসিনেশন এবং শারীরিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে ফলে একসময় মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বন্ধ হয়ে হতে পারে মৃত্যু পর্যন্ত। দীর্ঘস্থায়ী ঘুম না হলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রয়োজন। কারণ ঘুম শুধু ঐচ্ছিক নয় - মানসিক স্বচ্ছতা, স্মৃতিশক্তি এবং মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্র: নিউজ ১৮
আমার বার্তা/জেএইচ