শীতে অনেকেরই অসাবধানতা বশত ঠাণ্ডা লেগে যায়। আর এই ঠাণ্ডা লাগার বহিঃপ্রকাশ ঘটে সর্দি-কাশিতে ভুগে । ঠাণ্ডা লাগার ফলে সর্দি-কাশি কিংবা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার সাধারণ লক্ষণ। বিশেষ করে যাদের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা আছে । এছাড়াও যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের অল্পতেই ঠাণ্ডা লেগে নাক বন্ধ হয়ে যায়।
নাক বন্ধ হলে দ্রুত পরিত্রাণের জন্য অনেকেই নোজল ড্রপ বা ওষুধের সাহায্য নেয়। তবে এসব ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে একটা সময় এসব ওষুধ কোন কাজে আসে না। সেক্ষেত্রে ঘরোয়া কিছু সমাধান চেষ্টা করা যেতে পারে বা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক-এর পরামর্শ নিয়ে রাখা উচিত।
কেন হয়
নাসাপথের ঝিল্লিগুলোর প্রদাহ বা অস্বস্তির ফলে নাকে যে গুমোট ভাব তৈরি হয়, তাকে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া বলা হয়। যখন নাকের রক্তবাহগুলো ফুলে যায়, তার ফলেও নাক বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সাধারণ ঠাণ্ডা লাগা, অ্যালার্জি অথবা সাইনাসের সংক্রমণের সঙ্গে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া সম্পর্কিত।
ঘরোয়া চিকিৎসা
১. একটি পাত্রে গরম পানি নিয়ে এর মধ্যে একটি মাইক্রো ফাইবার তোয়ালে বা রুমাল ডুবিয়ে ভালো করে চিপে নিতে হবে। এবার এই রুমাল নাকে-মুখে দিয়ে রাখুন ৫ থেকে ১০ মিনিট। এই প্রক্রিয়াটি ৩ থেকে ৪ বার করুন । তাহলে নাক বন্ধ ভাব অনেকটাই কেটে যাবে এবং স্বস্তি পাবেন।
২. গরম পানিতে এক চা চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়েও পান করুন। এই পানীয় দিনে ২ বার পান করবেন। ভিনেগারে থাকা অ্যাসিটিক অ্যাসিড এবং পটাসিয়াম বন্ধ নাক খুলতে, বুকের কফ অপসারণ এবং ভাইরাস দূর করতে সাহায্য করে।
৩. একটি পাত্রে গরম পানি নিয়ে এরমধ্যে কিছু পুদিনা পাতা দিন। এবার পাত্রটি কিছুক্ষণ ঢেকে রাখুন। তারপর কম আঁচে ৫ থেকে ১০ মিনিট সিদ্ধ পানিটা গরম করে নিন। এই পানীয় দিনে দু’বার চায়ের মতো করে পান করুন। পুদিনা পানীয় বুকের প্রদাহ কমায় এবং বন্ধ থাকা নাক খুলতে সাহায্য করে।
৪. এক লিটার পানি ভালো করে ফুটিয়ে এরমধ্যে কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল দিন। এবার তোয়ালে দিয়ে মুখ ঢেকে ভাপ নিন। এটা করলে কয়েক মিনিটের মধ্যে নাকের বন্ধভাব খুলে যাবে। সাথে সাথে মাথা ব্যথা থাকলেও কিছুটা উপশম হবে।
৫. এক গ্লাস পানিতে আধ চা চামচ লবণ দিন। এবার নাক দিয়ে এই পানি টেনে ভিতরে নিন। চাইলে দিনে ২ থেকে ৩ বার এটা করতে পারেন। ড্রপের সাহায্যে নাকেও দিতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে ২ থেকে ৩ ফোঁটার বেশি নয়।
৬. নাকের মিউকাস পরিষ্কার করতে গ্রিন টিও উপকারি। এতে নাক পরিষ্কার হওয়ার পাশাপশি শরীর থেকে টক্সিনও দূর হয়ে যায়।
৭. বন্ধ নাক খুলতে ভালো কাজ করে গোলমরিচ। হাতের তালুতে অল্প একটু গোলমরিচ গুঁড়ো নিয়ে সামান্য সরিষার তেল দিন। আঙুলে লাগিয়ে নাকের কাছে ধরুন। হাঁচি হবে। সেই সঙ্গেই নাক, মাথা জমাট ভাবটাও কেটে যাবে।
৮. এক কাপ টমেটোর রস, এক টেবিল চামচ রসুন কুচি, এক টেবিল চামচ লেবুর রস, ঝাল সস ও এক চিমটি লবণ মিশিয়ে নিন। এই চা দিনে দু’বার খান। ঠাণ্ডা,কাশিও নাক বন্ধ ভাব দ্রুতই কেটে যাবে। তাতেও যদি না সারে নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এর পরামর্শ নিন।