ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, স্ন্যাপব্যাক নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ইরান সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। রবিবার মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইরান এখনও তার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে গঠনমূলক সম্পর্ক বজায় রাখার পথে অটল। প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান বলেন, আমাদের পথ হলো দৃঢ়তা, জনগণের শক্তি এবং মর্যাদাপূর্ণভাবে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হওয়া।
তিনি আরও যোগ করেন, প্রতিবেশীদের সঙ্গে বিস্তৃত ও গঠনমূলক সম্পর্কের মাধ্যমে ইরানের বিরোধীরা কখনো তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না। ইরান যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত। জনগণের জীবন ও জীবিকা সরকারের মূল মনোযোগের কেন্দ্রে রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ববর্তী প্রচেষ্টার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, আমেরিকা অতীতে নিষেধাজ্ঞা ও যুদ্ধের মাধ্যমে ইরানের রফতানি ব্যাহত করার চেষ্টা করেছিল; কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন যে অনেক দেশ প্রাকৃতিক গ্যাস বা তেলের মতো সম্পদ ছাড়াই উন্নতি করেছে। তিনি বলেন, ইরানও তার বিশেষজ্ঞ, মেধাবী জনশক্তি ও জনগণের ঐক্যের ওপর নির্ভর করে তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে তার উন্নয়ন কর্মসূচি এগিয়ে নেবে।
পারমাণবিক অস্ত্রের বিষয়ে তিনি স্পষ্ট বলেন, আমরা কখনো পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করিনি, ভবিষ্যতেও করব না। তিনি জানান, ইরান সবসময় ন্যায়সংগত ও স্বচ্ছ আলোচনায় প্রস্তুত, তবে এমন কোনো আলোচনায় যাবে না যা দেশকে নতুন সমস্যার মুখে ফেলতে পারে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার জাতিসংঘে রাশিয়া ও চীনের একটি প্রস্তাব ব্যর্থ হওয়ার পর দশ বছর পর রবিবার থেকে ইরানের ওপর নতুন করে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞার ফলে ইরানের বিভিন্ন অস্ত্রচুক্তি এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে এবং জরিমানা কার্যকর হয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ইরান পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি (এনপিটি) থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথা বিবেচনা করছে। দেশটির আইনপ্রণেতা ইসমাইল কাওসারি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে পার্লামেন্টে আলোচনার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
অন্যদিকে, ইরানকে কোনো ধরনের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ না নিতে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য। এই তিন ইউরোপীয় দেশ বলেছে, নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপের অর্থ এই নয় যে কূটনীতির পথ বন্ধ হয়ে গেছে। তারা ইরানকে পরিস্থিতি আরও খারাপ করে এমন কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে আইনী কাঠামোর মধ্যে আবারও আলোচনায় ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে। তবে তেহরান পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, অন্যায় ও অন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার পরিবর্তে ইরান নিষেধাজ্ঞাই মাথা পেতে নেবে।
আমার বার্তা/জেএইচ