
নড়াইলকে বঞ্চিত করে আশপাশের জেলায় একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিবাদে এবং নড়াইলে মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে ঢাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়েছে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকাস্থ নড়াইলবাসীর ব্যানারে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এসময় বক্তারা দাবি আদায় না হলে সচিবালয় ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দেন। এছাড়া বৃহত্তর আন্দোলনের অংশ হিসেবে নড়াইল জেলায় হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান তারা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রতিবেশী যশোর জেলায় একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি মেডিকেল কলেজ থাকার পরও সেখানে অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন। নড়াইলকে বঞ্চিত করে প্রতিবেশী যশোরে কেন একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন? অবিলম্বে নড়াইলে একটি মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
চিত্রা নড়াইল জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মো. মামুন রেজার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন কবি, সাংবাদিক ও তরুণ কলামিস্ট মিনহাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নড়াইল বরাবরই জাতিকে শ্রেষ্ঠ সন্তান উপহার দিয়েছে। তবে উন্নয়নের বেলায় নড়াইল সব সরকারের আমলেই অবহেলিত। প্রতিবেশী খুলনায় তিনটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। অপর প্রতিবেশী যশোর ও গোপালগঞ্জে একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এবার নড়াইলকে আর বঞ্চিত করা চলবে না। অধিকার আদায়ে প্রয়োজন হলে সচিবালয় ঘেরাও কিংবা নড়াইল জেলায় হরতাল-অবরোধ ডাকতে বাধ্য হবো।’
মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নড়াইল জেলা সমিতির দপ্তর সম্পাদক এস কে কায়সার মাহমুদ বলেন, ‘নড়াইল বাংলাদেশকে উপহার দিয়েছে চারণ কবি বিজয় সরকার, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ, চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান, নৃত্যশিল্পী উদয় শংকর, সেতার বাদক রবি শংকর ও ক্রীড়াঙ্গনের একাধিক অধিনায়ক। অথচ এ দেশের কোনো সরকারই আশ্বাস ছাড়া আমাদের তেমন কিছু দেয়নি। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি আমাদের একযুগের দাবি। এবার এ দাবি যেকোনো মূল্যে পূরণ করতে হবে।’
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক নির্বাহী সদস্য মাহমুদা সুলতানা রিমি বলেন, ‘নড়াইলের অনেক রোগী ঢাকা বা খুলনায় নেওয়ার পথে মারা যান। এভাবে আর কতো? নড়াইলে নামেমাত্র একটি সদর হাসপাতাল রয়েছে, কিন্তু সেখানে নেই ন্যূনতম সুচিকিৎসার উপদান। নেই উচ্চশিক্ষার জন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়। এবার আমরা রাজপথে এসেছি। অধিকার আদায় করেই ঘরে ফিরবো।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্য সাবেক সহকারী পুলিশ সুপার অহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুশিক্ষার জন্য নড়াইলে একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটা আমাদের প্রাণের দাবি।’
আরেক বিশেষ অতিথি সাবেক ছাত্রনেতা জিয়াউর রহমান বলেন, ‘যশোরে একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ রয়েছে। সেখানে আবার কেন একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে? এই বিশ্ববিদ্যালয় নড়াইলের মাটিতে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সাবেক ছাত্রনেতা আবু সালেহ মোহাম্মদ গোফরান ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল কাদের নাগিব।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক বৈষম্যবিরোধী নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান, পল্টন থানা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী তৌহিদুর রহমান, জুলাই আন্দোলনে আহত ছাত্রনেতা আল-আমিন মণ্ডল, ছাত্রনেতা মাহফুজ আহসান, আমিরুল ইসলাম রানা, সামিউল আফজাল নিশাত প্রমুখ।
আমার বার্তা/এল/এমই

