হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এবার খোদ স্বর্ণালঙ্কার তৈরির মেশিনের ভেতর থেকে স্বর্ণ জব্দ করেছে বিমানবন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
রোববার (৪ মে) দিবাগত রাতে মালয়েশিয়া থেকে আসা এক যাত্রী ওই মেশিনের ভেতরে সুকৌশলে আনা ১ কেজি ২০০ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।
ঢাকা কাস্টমস হাউজের প্রিভেনটিভ কর্মকর্তা বরুণ দাস এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, চাঁদপুর শাহরাস্তি সুমন মিয়া নামের ওই যাত্রী রাত সোয়া ১১টার দিকে মালয়েশিয়া থেকে শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। পরবর্তীতে ইমিগ্রেশন শেষ করে কাস্টমস হলে এলে তার লাগেজ স্ক্যান করলে স্বর্ণের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করলেও সে স্বর্ণের বিষয়টি অস্বীকার করে। পরে তার স্বর্ণালঙ্কার তৈরির ওই মেশিন ঘিরে সন্দেহ হয়। এক পর্যায়ে ওই মেশিনের ভেতরে ১ কেজি ২০০ গ্রাম স্বর্ণের চাকতি পাওয়া যায়। এই ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, চোরাকারবারীরা অভিনব কায়দায় স্বর্ণপাচারের চেষ্টা করছেন। কিন্তু কাস্টমসের প্রিভেনটিভ টিমের সতর্কতার কারণে তারা সফল হতে পারছে না। একের পর এক তাদের কৌশল ধরাও পড়ছে।
উল্লেখযোগ্য, গত কয়েক বছর ধরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বর্ণ পাচারের ঘটনা ধারাবাহিকভাবে ঘটছে। চোরাচালানিরা বিভিন্ন সময় শরীরে লুকিয়ে, লাগেজের গোপন প্রকোষ্ঠে, ইলেকট্রনিক ডিভাইসে কিংবা অন্যান্য জটিল পদ্ধতিতে স্বর্ণ পাচারের চেষ্টা চালিয়েছে। তবে সম্প্রতি তাদের কার্যকলাপ আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করলেও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সতর্ক নজরদারি ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে বেশ কিছু ক্ষেত্রে তারা ধরা পড়ছে। অভিনব কৌশলে স্বর্ণালঙ্কার তৈরির মেশিনের ভেতর থেকে ১ কেজি ২০০ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধারকৃত ঘটনাটি এ ক্ষেত্রে কাস্টমসের তৎপরতারই প্রমাণ। তবুও স্বর্ণ পাচারের পরিমাণ কমছে না বলে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব পাচার চক্র শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতিই সৃষ্টি করছে না, বরং আন্তর্জাতিক চোরাচালান নেটওয়ার্কের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের সুনামও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, প্রযুক্তির উন্নয়ন ও নজরদারি বাড়ানোর ফলে বেশ কিছু পাচার চক্র আটকানো গেলেও, পাচারকারীরা নিয়মিত নতুন কৌশল উদ্ভাবন করছে—যা নিরন্তর চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। এমন প্রেক্ষাপটে, কাস্টমস কর্তৃপক্ষের আরও কঠোর পদক্ষেপ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বিত সহযোগিতার মাধ্যমে এ ধরনের চোরাচালান বন্ধের প্রয়োজনীয়তা জোরালোভাবে উঠে এসেছে।
আমার বার্তা/জেএইচ