৬৭ বছরে ৩৮ হাজার বিয়ে! শিরোনামটি দেখে অবাক হচ্ছেন? অবাক হওয়ার মতোই খবর। তবে তিনি নিজে করেননি, বিয়ে করিয়েছেন। জানাচ্ছি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বাংগালা গ্রামের ঘটক আহাম্মদ আলীর (৮৫) কথা। তিনি দেশ ও দেশের বাইরের মিলে মোট ৩৮ হাজার বিয়ের ঘটকালি সম্পন্ন করেছেন। ঘটক পেশায় তার বেশ নামডাক আছে।
আলাপ করে জানা যায়, ১৯৫৬ সালের দিকে জীবিকার তাগিদে আঠারো বছর বয়সে ঘোড়াশালে একটি জুট মিলে চাকরি শুরু করেন তিনি। চাকরিরত অবস্থায় পরিচয় হয় এক যুবকের সঙ্গে। সেই সুবাদে ঢাকার নবাবগঞ্জের পুত্র ও নরসিংদীর এক মেয়ের সঙ্গে বিয়ে মিটিয়ে দেন। সেই থেকে শুরু ঘটকালি পেশা। চাকরি ছেড়ে দিয়ে এটাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন তিনি। তবে ঘটক পেশায় বর বা কনেপক্ষের পরিবারের কাছ থেকে কোনো ফি তিনি চেয়ে নেন না। বিয়ে সম্পাদনের পর দুপক্ষ খুশি হয়ে যা দেন তা-ই নেন।
একসময় সমাজে যুবক-যুবতীদের অবাধে মেলামেশার কোনো সুযোগ ছিল না। পরিবারের সিদ্ধান্তই ছিল চূড়ান্ত। তাই সেই সময়টাতে ঘটকের মাধ্যমে বিয়ে সম্পাদনের গুরুত্বটা ছিল অনেক বেশি। তবে আধুনিক এ যুগে প্রযুক্তির ব্যবহারে এ ঘটক পেশায় এখন আর ভালো নেই আহাম্মদ আলী। শেষ বয়সের ভারে এখন আর আগের মতো বিয়ের ঘটকালি করতে পারেন না তিনি। ফলে অভাবেই দিন পার হচ্ছে তার।
আহাম্মদ আলী বলেন, শখের বশে ঘটকালি করতে গিয়ে তা পেশায় পরিণত হয়। একসময় সমাজে ঘটকের মাধ্যমে বিয়ে সম্পাদন করা হতো। এ ঘটক পেশাটির অনেক গুরুত্ব ছিল। সঠিক বয়সের বর ও কনে বিয়ে সম্পাদন হওয়ার কারণে বিয়েবিচ্ছেদ খুবই কম ছিল। এখন প্রযুক্তির যুগে এ ঘটকের গুরুত্ব কমে গেছে। পরিবারের সিদ্ধান্ত ছাড়া বেশির ভাগ ছেলেমেয়েই নিজেদের সিদ্ধান্তে বিয়ে করছে। সরকার যদি এ পেশার লোকদের নিবন্ধনের আওতায় এনে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করত, তাহলে ঐতিহ্যবাহী এ পেশাটি যুগের পর যুগ টিকে থাকত।
এবি/ জিয়া