বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) স্বল্পমূল্যে উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদান, চিকিৎসার উৎকর্ষসাধনে আধুনিক পদ্ধতি সংযোজন ও নতুন একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল স্থাপন করে অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ হলেন একজন সফল উপাচার্য। একজন মানুষ সততা, সুশিক্ষা, কর্তব্যপরায়ণতা, দৃঢ়সংকল্প ও ন্যায়নিষ্ঠার ফলে একদিন সফলতার সর্বোচ্চ শিখরে অবস্থান করতে সক্ষম, বিএসএমএমইউ এর উপাচার্য় অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ তার প্রকৃত উদাহরণ। খ্যাতনামা অধ্যাপক বিএসএমএমইউ’র একজন সফল উপাচার্য। তিনি এই চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয়ের কল্যাণে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন।
শারফুদ্দিন আহমেদ একজন বাংলাদেশী চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি বিএসএমএমইউ কমিউনিটি অফথালমোলজি বিভাগের অধ্যাপক এবং বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমান উপাচার্য। এই পদে নিয়োগ লাভের পূর্বে তিনি বিএসএমএমইউ এর উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) এবং বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার খায়েরহাট গ্রামে ১৯৫৬ সালের ৭ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা শামসুদ্দিন আহমেদ এবং মা হোসনে আরা বেগম।
তিনি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী জি. সি. পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৭২ সালে এসএসসি এবং ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ থেকে ১৯৭৪ সালে এইচএসসি পাস করেন। তিনি বরিশালে অবস্থিত শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ ( শেবাচিম) থেকে ১৯৮২ সালে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। শারফুদ্দিন আহমেদ তৎকালীন ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিসিন এন্ড রিসার্চ (বর্তমানে বিএসএমএমইউ) থেকে ১৯৮৫ সালে অফথালমোলজিতে ডিপ্লোমা এবং বিএসএমএমইউ থেকে ২০০৪ সালে একই বিষয়ে এমএস ডিগ্রি অর্জন করেন। শারফুদ্দিন আহমেদ ১৯৮২ সালে সহকারী সার্জন হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন।
তিনি দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার, রেসিডেন্ট সার্জন ও রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৯১ সালে সহকারী অধ্যাপক (চক্ষু) হন এবং ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত একই পদে নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৯৮ সালের ২৪ মার্চ তিনি তৎকালীন ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিসিন এন্ড রিসার্চ (আইপিজিএমআর) এ সহকারী অধ্যাপক (চক্ষু) হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৮ সালের ৩০ এপ্রিল আইপিজিএমআর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হয়।
এছাড়াও তিনি ২০০১ সালে বিএসএমএমইউ এর চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ২০০৯ সালে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ২০০৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত তিনি বিভাগটির সভাপতি ছিলেন। বিএসএমএমইউ-তে কমিউনিটি অফথালমোলজি বিভাগ চালু হলে তিনি নবপ্রতিষ্ঠিত বিভাগটির অধ্যাপক ও সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অধ্যাপনা ও চিকিৎসা সেবা প্রদানের পাশাপাশি শারফুদ্দিন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বিএসএমএমইউ এর সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য, প্রিভেনটিভ এন্ড সোশ্যাল মেডিসিন অনুষদের ডিন এবং উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।
শারফুদ্দিন আহমেদ ২০২১ সালের ২৯ মার্চ পরবর্তী তিন বছরের জন্য বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। শারফুদ্দিন আহমেদ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় চক্ষু বিষয়ক ৫টি গ্রন্থের রচয়িতা। শারফুদ্দিন বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। তিনি বাংলাদেশ কমিউনিটি অফথালমোলজি সোসাইটি, বাংলাদেশ অকুলোপ্লাষ্টি সার্জন’স সোসাইটি, বাংলাদেশ একাডেমি অব অফথালমোলজি এবং স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, বিএসএমএমইউ-এর সভাপতি, বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি) এর জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ) এর মহাসচিব সহ বিভিন্ন সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ছাত্রজীবনে তিনি শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। চিকিৎসাসেবায় অসাধারণ অবদানের জন্য অধ্যাপক আহমেদ দেশে-বিদেশে বহু পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন। ব্যক্তিজীবনে শারফুদ্দিন আহমেদ বিবাহিত। শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ডার্মাটোলজি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক নাফিজা আহমেদ তার সহধর্মিণী। তাদের তিন পুত্র সন্তান হলেন তাজবীর আহমেদ, তানভীর আহমেদ এবং তাহমিদ আহমেদ সাদাত।
আমার বার্তা/ওসমান