ই-পেপার শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
আরিচা-কাজিরহাট নৌরুট

খননের নামে শুভঙ্করের ফাঁকি

রতন বালো
প্রিন্ট ভার্সন
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৪২

যমুনা নদীর মানিকগঞ্জের আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে নাব্য ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) উদ্যোগ নিয়েছে।

গত কয়েক মাস ধরে ভরা বর্ষা মৌসুম থেকেই ৬টি ড্রেজার দিয়ে পলি অপসারণের কাজ চালাচ্ছে সংস্থাটির ড্রেজিং বিভাগ। তাতেও কোনো সুফল মিলছে না বরং ফল উল্টো এ নৌপথের ফেরি সার্ভিস সচল রাখতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে ফেরির মাস্টার সুকানিরা। বিষয়টি অনাকাক্সিক্ষত হলেও অস্বাভাবিক নয়। কারণ, এরা মাছের তেলে মাছ ভাজতে গিয়ে এমন বিড়ম্বনার জন্ম দিয়েছে।

যদিও ড্রেজিং করা মাটি নদীতে ফেলার কোনো বিধান নেই তারপরও এই কাজটি করে চলেছে বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। নাব্য সঙ্কটের কারণে গত ৮ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) সকাল ৯টা থেকে ২৪ ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকে ফেরি। এ সময় নদী পার হতে আসা পণ্যবাহী ট্রাকগুলো ঘাটে আটকে থাকে এবং দুর্ভোগে পড়েন ট্রাক শ্রমিকরা। পাঁচটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে খনন কাজও শুরু করে। কিন্তু এতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

নদীতে জমা পলি নদীতেই রয়ে গেছে। এ নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের নজরে নেই। বা কোনো সাড়া নেই। ফলে ইচ্ছেমতো ড্রেজিং করার খাতা পত্র ঠিক রেখে কোটি কোটি টাকা ব্যাহত করার অভিযোগ উঠেছে।

ড্রেজিং বিভাগের অপরিকল্পিত ও ধীরগতির ড্রেজিং এবং এ নৌপথ থেকে পলি অপসারণে ব্যর্থতার কারণেই এ নাব্য সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ড্রেজিংয়ের নামে সরকারের কোটি কোটি টাকা খরচ হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। গত ৯ সেপ্টেম্বর সরেজমিনে আরিচা ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, ৩টি ছোট ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপারের চেষ্টা করা হচ্ছে। তাও আবার ঝুঁকিপূর্ণ। আরিচা ঘাটের কাছে চ্যানেল শুরু হওয়ায়, ওয়ান ওয়ে পদ্ধতিতে ফেরি চলাচল করছে। এতে সময় লাগছে অনেক বেশি। ফলে ঘাটে পার হতে আসা গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যানবাহন শ্রমিকরা।

এছাড়াও স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বালু মহাল হিসেবে আরিচাঘাট সংলগ্ন যমুনা নদী এলাকার কিছু অংশ আরিচা ঘাটের অদূরে ইজারা নিয়েছেন। উদ্দেশ্যমূলকভাবে ড্রেজিংকৃত পলি চিহ্নিত জায়গায় ফেলা হচ্ছে। এতে নৌচ্যানেল খননের পর আবার ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে তথাকথিত এ ড্রেজিং কোনো কাজেই আসছে না বলে জানান স্থানীয়রা।

ড্রেজিংয়ের মাটি একবার ফেলা হচ্ছে নদীর ভাটিতে। আবার ফেলা হচ্ছে উজানে। ফলে স্রোতের টানে ড্রেজিং করা মাটি আবারও ভরাট করে দিচ্ছে নির্ধারিত নৌ-চ্যানেলে। কাজের কাজ কিছু যে হয়নি-সে কথা স্বীকার করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। সরকার দেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথের নাব্য রক্ষায় ড্রেজিং মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এই মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী ‘বিআইডব্লিউটিএ’র মাধ্যমে ১৭৮টি নদী পুনঃখনন করা হবে। এতে প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথের নাব্য ফিরে আসবে।

ড্রেজিং করা হয় নদীতে জমে থাকা পলি অপসারণ করার জন্য। এটা সুষ্ঠুভাবে করা হলে নদীতে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক হয়। কিন্তু ড্রেজিং করা মাটি যদি নদীতে পড়ে, তাহলে উদ্দেশ্য পূরণ হবে না। মাঝখান দিয়ে রাষ্ট্রের টাকা গচ্চা যাবে। শুধু যে মানিকগঞ্জের শিবালয়ে যমুনা নদী খননের ক্ষেত্রে এমন অব্যস্থাপনা ও অপরিকল্পিতভাবে কাজ করা হচ্ছে তা নয়। অন্য স্থানেও নদী খননের এমন চিত্রের দেখা মেলে। যমুনা নদীর আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটের নাব্য ফিরিয়ে আনতে যে ড্রেজিংয়ের কাজ চলছে তা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হবে। ড্রেজিং করা মাটি যেন আবার নদীতেই না পড়ে সেজন্য সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।

নদী খননের নামে এমন শুভঙ্করের ফাঁকি চলতে দেয়া যায় না। নদীগুলো আমাদের প্রকৃত সম্পদ এগুলোকে বাঁচাতে খনন করতে হবে। নদীর পানি প্রকল্প গ্রহণ করলেই হবে না এটা যেন পরিকল্পনামাফিক চলে সেটা নিশ্চিত করা জরুরি বলে নৌ-বিশেষজ্ঞরা জানান।

এ বিষয়ে রোকেয়া ফেরির মাস্টার মো. আবু সাইদ জানান, দীর্ঘদিন ধরে ড্রেজিং করার পরও পুরান চ্যানেলে নাব্য সঙ্কটের সমাধান না হওয়ায়, আমরা নতুন পথে বিকল্প চ্যানেল দিয়ে ফেরি চালাচ্ছি। এতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় বেশি লাগছে এবং জ্বালানি খরচও বেশি হচ্ছে। পূর্বে আরিচা থেকে কাজিরহাট যেতে সময় লাগতো সোয়া ১ ঘণ্টা আর ঘুরা পথে এখন সময় লাগছে সোয়া ২ ঘণ্টা। এভাবে কত দিন চলবে তা বলতে পারছি না।

শিবালয় সাবেক ইউপি সদস্য এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, ড্রেজিংয়ের নামে পানির নিচে কি করে, সেটা ওরা জানে আর আল্লাহ জানে। যত ফাঁকি-ঝুঁকির কাজ আছে এই ড্রেজিং ইউনিটে। কারণ ড্রেজিংকৃত নদীর মাটি নদীতে ফেলার কোনো বিধান নেই। কিন্তু আরিচাতে যমুনা নদীর ড্রেজিংকৃত নদীর মাটি নদীতেই ফেলা হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিসির আরিচা আঞ্চলিক কার্যালয়ের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শাহ মুহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ বলেন, আরিচা-কাজিরহাট নৌ-রুটে ড্রেজিং করার পরও পূর্বের যে চ্যানেলটি ছিল সেটির নাব্য সঙ্কটের কোনো উন্নতি হয়নি। যে কারণে গত শুক্রবার সকাল থেকে পরের দিন বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা আমাদের ফেরি সার্ভিস বন্ধ ছিল। পরবর্তিতে ঘোরা পথে বিকল্প নতুন একটি চ্যানেল দিয়ে আমরা ফেরি সার্ভিস চালু করেছি। এতে সময় বেশি লাগছে এবং জ্বালানি খরচও বেশি হচ্ছে। এসব একাধিকবার চেষ্টা করেই ড্রেজিং সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাদের ভাব দেখে মনে হয় এসব ব্যাপারে কথা বলতে তারা যেন মুখে কুলুপ এঁটেছেন।

এছাড়া স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বালু মহাল হিসেবে আরিচাঘাট সংলগ্ন যমুনা নদী এলাকার কিছু অংশ আরিচা ঘাটের অদূরে ইজারা নিয়েছেন। উদ্দেশ্যমূলকভাবে ড্রেজিংকৃত পলি চিহ্নিত জায়গায় ফেলা হচ্ছে। এতে নৌ-চ্যানেল খননের পর আবার ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে তথাকথিত এ ড্রেজিং কোনো কাজেই আসছে না বলে জানান স্থানীয়রা।

বিআইডব্লিউটিসির আরিচা আঞ্চলিক কার্যালয়ের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শাহ মুহাম্মদ খালেদ নেওয়াজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ধীর গতিতে ড্রেজিং চলছে। ফলে পলি অপসারণ করতে না পারায় এ নৌপথে ফেরি চলাচল করা সম্ভব হচ্ছে না। ফেরিগুলো দফায় দফায় ডুবোচরে ধাক্কা খাচ্ছে। এতে ফেরির বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে বলে শুক্রবার থেকে ২৪ ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়। তবে সুফিয়া কামাল, বেগম রোকেয়া ও কুঞ্জলতা নামের কম ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ফেরি দিয়ে শনিবার সকাল থেকে ফেরি সার্ভিস চালু রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। ড্রেজিং সম্পন্ন হলেই বড় ফেরি দিয়ে স্বাভাবিক ফেরি চলাচল সম্ভব হবে।

এছাড়াও ফেরি ঘাটের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত আরিচা লঞ্চ ঘাট পন্টুন। এর অদূরেই চলছে ড্রেজিং। সরু এ নৌপথের মাঝ দিয়ে ফেরি চলাচল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এতে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন তিনি। এ সম্পর্কে জানতে চেয়ে বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলী আক্কাস আলীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে সংশ্লিষ্ট কেউ ফোন কল ধরেননি। এছাড়া

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফার মুঠোফোনে যোগাযোগ কনা হলে তিনি বলেন, পত্রিকা প্রচার এবং আমাদের সম্পর্কে মিথ্যা গুজব ছড়ানোর জন্য অভিযোগ করে থাকেন। আরিচা-কাজিরহাট নৌরুট সার্বক্ষণিক সচল রাখার জন্য ৬টি ড্রেজার রাখা হয়েছে। তীব্র স্রোতের কারণে ড্রেজিংয়ের স্থানে পলি পরে যায়। তখন নৌপথ ঠিক রাখা যায় না। ড্রেজিংকৃত নদীর মাটি নদীতে ফেলার কোনো বিধান নেই এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোথায় নদী খননের মাটি ফেলা হবে কমিটি আছে। তারাই বলে দেন কোথায় মাটি ফেলতে হবে। তবে তিনি বিস্তারিত জানান জন্য প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) রকিবুল ইসলাম তালুকদারের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। কিন্তু প্রধান প্রকৌশলীর সঙ্গে গত দুই দিন সকালে এবং বিকেলে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো সাড়া দেন না।

এবি/ওজি

কি পেলাম, কি হারালাম, শান্তির পায়রা ফিরে আসবে কবে ?

কোটাপ্রথা সংস্কার আন্দোলন। কি হারালাম আর কি পেলাম। এই আন্দোলন আসলে ২০১৮ সালের। সে সময়

ওয়াসার ফকরুল দম্পত্তির হাউজিং ব্যবসা রমরমা! 

ঢাকা ওয়াসার প্রকৌশলী ফকরুল ইসলাম অবৈধ উপার্জনের টাকা বৈধ করতে স্ত্রী নাদিরা ইয়াসমিন মুক্তার নামে

সিবিএ নেতা সারোয়ার যেন এক মোগল সম্রাট

* আত্মীয়-স্বজনসহ প্রায় ৪০০ লোককে চাকরি দিয়েছেন * নামে-বেনামে রয়েছে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা বিআইডব্লিউটিএর সিবিএ নেতা

কঠোর অবস্থানে সরকার

* কোটা আন্দোলন নিয়ে মন্ত্রীদের অবস্থান স্পষ্ট * মামলা প্রত্যাহারে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম * আন্দোলন অন্যদিকে ধাবিত
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এক দফা দাবিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিল বিএনপি

গণ-আন্দোলন দমাতে কারফিউ দিয়ে মানুষের কণ্ঠ স্তব্ধ করে দিতে চাইছে

সহিংসতায় ঢাকায় ২০৯ মামলা, গ্রেপ্তার ২৩৫৭

নাহিদ-আসিফসহ তিন সমন্বয়ককে তুলে নেওয়ার অভিযোগ

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আবারও আলোচনায় বাংলাদেশ পরিস্থিতি

দুই সমন্বয়ককে নিয়ে সরকার পতনের আলোচনা করেন নুর

বিক্ষোভকারী প্রবাসীদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে মালদ্বীপ

প্রতিটি হামলার বিচার হবে, শিক্ষার্থীদের হয়রানি নয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিল বেরোবি

আন্দোলনে ঢাবির হলের ৩০০ কক্ষ ভাঙচুর হয়েছে: উপাচার্য

আহত সবার চিকিৎসা ও আয় রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার

ব্যর্থতা আড়াল করতে মানুষকে নির্বিচারে গ্রেপ্তার করছে সরকার

নরসিংদী কারাগারের লুট হওয়া ৪৫ অস্ত্র উদ্ধার, ১ জঙ্গি গ্রেপ্তার

ভারতের কাছে বাংলাদেশের লজ্জাজনক হার

‘বাংলাদেশের জনগণ যে সহিংসতার শিকার হয়েছে, তাতে হতবাক আমরা’

হাসপাতালে ‘অবরুদ্ধ’ নাহিদ-আসিফ

অপরাধীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করুন

বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, বন্দরে ৩ নম্বর সংকেত

কারফিউ শিথিলের সময়ে ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে দূরপাল্লার বাস

অলিম্পিকের পর টেনিস থেকে অবসর নেবেন অ্যাঞ্জেলিক কারবার