ই-পেপার রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

সিকিউরিটি গার্ড থেকে বিসিএস ক্যাডার

অনলাইন ডেস্ক
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪:৫২

পরিশ্রম করলে যে তার ফল পাওয়া যায়, তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত কুড়িগ্রামের জিয়াউর রহমান। জীবন সংগ্রামে কতো না কঠিন সময় পার করেছেন তিনি। হাজার প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও নিজেকে সুউচ্চ স্থানে প্রতিস্থাপন করেছেন। শিক্ষার্থীদের কাছে সোনার হরিণ খ্যাত সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত বিসিএস ক্যাডারভুক্ত চাকরিতে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন।

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের বাকারায় মধুপুর দালালীপাড়া গ্রামের ছকিয়ত আলী ও জেলেখা বেগমের সন্তান জিয়াউর রহমান। তিন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়।

জিয়াউর রহমান বলেন, “আমাদের বসতবাড়ি পাঁচ শতক জমি ছাড়া আর কোনো জমি নেই। বাবা শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় ঠিকমতো কাজ করতে পারতেন না। এ কারণে বাবাকে কৃষিকাজে সহযোগিতা করতে হয়েছে। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন।

অভাবের সংসার হওয়ায় পরিবারে সব সময় ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকত। পড়াশোনার কোনো পরিবেশ ছিল না। পড়ার টেবিল ছিল না। ছোট ঘরের এক পাশে গরু-ছাগল থাকত, আরেক পাশে বাঁশ দিয়ে টং পেতে আমাকে থাকতে হয়েছে।

এভাবে পড়াশোনা করে ২০১২ সালে নতুন অনন্তপুর দাখিল মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা দিয়ে ‘এ প্লাস’ পাই।”

কিন্তু আলিমে পড়াশোনা হবে কি না তার কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। বই কেনার টাকা জোগাড় করতে ঢাকায় যান। জিয়াউর রহমান বলেন, ‘ঢাকায় এসে একটি ফাস্ট ফুডের দোকানে কাজ করি। কিছু টাকা জমিয়ে বাড়ি ফিরে আসি, কিন্তু বই কেনা হয় না।

ছোট বোনের বিয়ের জন্য সেসব টাকা শেষ হয়ে যায়। আবার মুন্সীগঞ্জের আকিজ ম্যাচ ফ্যাক্টরিতে যাই। কিছুদিন কাজ করে কিছু টাকা নিয়ে আসি।’

এবার কিছু পুরনো বই কিনে পড়া শুরু করেন। পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে অন্যের জমিতে কাজ করে সংসারে সহযোগিতা করতে থাকেন। ২০১৪ সালে আলিম পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ ৪.৬৭ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। তাঁর স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করবেন, কিন্তু ভর্তি প্রস্তুতির কোচিং করার টাকা ছিল না। তাই ঢাকায় গিয়ে একটি ওষুধ কম্পানিতে চাকরি নেন। সারা দিন ওষুধ কম্পানির কাজ করে রাতে মেসে ফিরে পড়ার তেমন কোনো সুযোগ ছিল না। তার পরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেন, কিন্তু উত্তীর্ণ হননি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে মিরপুর বাঙলা কলেজে সুযোগ পান।

জিয়াউর রহমান বলেন, ‘মিরপুর বাঙলা কলেজে সুযোগ পেলেও টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারিনি। পরের বছর কোচিং করার চিন্তা করি। কিন্তু চলার মতো হাতে টাকা নেই। তাই টাকার জন্য একটি সিকিউরিটি গার্ড কম্পানিতে গার্ডের চাকরি নিই। পাশাপাশি ঢাকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কোচিংয়ে ভর্তি হই। চাকরি-কোচিং একসঙ্গে চলে। কিন্তু ভাগ্যের কী পরিহাস! সেবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ড টাইম ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়।’

তারপর ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পান। ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে। শুরু হয় নতুন এক সংগ্রাম, নতুন স্বপ্ন। কিভাবে পড়াশোনার খরচ আসবে তার নিশ্চয়তা নেই। থাকা, খাওয়া ও সামান্য কিছু হাতখরচের টাকার জন্য খণ্ডকালীন কাজ করেন। প্রথম বর্ষের পরীক্ষার আগে মেসে ওঠেন। একটি প্রতিষ্ঠান থেকে দুই বছর বৃত্তি পান। এ ছাড়া টিউশনি, কোচিংয়ে ক্লাস নিয়ে নিজের পড়াশোনার খরচ জোগাড় করেন। সেখান থেকে কিছু টাকা প্রতি মাসে বাড়িতে দিতে হতো। সারা জীবন অভাব-অনটন আর পারিবারিক অশান্তিতে জীবন কেটেছে। তাই ‘যেভাবেই হোক, ভালো চাকরি পেতে হবে’ এই বাসনা নিয়ে চাকরির জন্য পড়াশোনা করেন। প্রথম বর্ষের রেজাল্ট ভালো না হওয়ায় ডিপার্টমেন্টের পড়াশোনা তেমন গুরুত্ব দেননি। অনার্সে জিয়াউর রহমানের রেজাল্ট আসে সিজিপিএ ৩.৪১। অ্যাপিয়ার্ড দিয়ে ৪১তম বিসিএসে আবেদন করেন। যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুতি নিয়েছেন, তাই প্রস্তুতি ভালোই ছিল। কিন্তু করোনায় সব কিছু বন্ধ হওয়ায় ইনকামও বন্ধ হয়ে যায়। আবার আর্থিক সংকটে পড়েন। এ সময় বন্ধুদের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে চলেন। তখন টাকার জন্য টাইলস মিস্ত্রি ও রাজমিস্ত্রির সঙ্গে কাজ করেন।

প্রিলিমিনারির সূচি প্রকাশের পর আবার রাজশাহীতে চলে আসেন। হল না খোলায় কাছের এক বন্ধুর মেসে উঠে দুই মাস প্রস্তুতি নেন। পরে প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হন। লিখিত পরীক্ষার জন্য কোচিং করার ইচ্ছা থাকলেও টাকার কারণে করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে একটি বিসিএস কোচিংয়ে সামান্য টাকায় শুধু মডেল টেস্ট বা নমুনা পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ভর্তি হন। প্রস্তুতি ভালোই ছিল, কিন্তু অসুস্থতা এবং মাস্টার্স পরীক্ষা থাকায় লিখিত পরীক্ষা মোটামুটি হলেও যেভাবে চেয়েছিলেন, ততটা ভালো হয়নি। অবশেষে লিখিত পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হন। তারপর ভাইভা প্রস্তুতির জন্য বুঝে উঠতে পারছিলেন না কোন বই পড়বেন, কিভাবে প্রস্তুতি নেবেন। তারপর সিনিয়রদের পরামর্শে ‘ভাইভা বোর্ডের মুখোমুখি’ বইটি সংগ্রহ করেন। শুধু এই একটি বই পড়েই তিনি ভাইভা দিয়েছেন। এর মধ্যে প্রাইমারি স্কুলে চাকরি হয়। বিসিএসের রেজাল্ট যেদিন দেয় সেদিন শিক্ষা ক্যাডারে নিজের রোলটি দেখে জিয়াউরের চোখ দিয়ে পানি চলে আসে। বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন।

এবি/ জেডআর

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও শেখ হাসিনার বিকল্প নেই

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের ইতিহাসে উন্নয়নের রূপকার, চতুর্থবারের মতো অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সফল

আবেদ খানকে সাংবাদিকদের বেতন পরিশোধের আহবান  নেতৃবৃন্দের

দৈনিক জাগরণের সম্পাদক-প্রকাশক (মালিক) আবেদ খানকে সাংবাদিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

আমাকে জড়িয়ে 'আমার বার্তা ' পত্রিকায় গত ২১শে ডিসেম্বর বৃহস্পতিবারে যে সংবাদ  পরিবেশন করেছে তা

সিআইডির এক এসআইয়ের নেতৃত্বে অপহরণকারী চক্র

‘আমি সিআইডির ওসি রবিউল বলছি, আপনার নাম কি মোস্তাফিজ? আগামীকাল দুপুরের মধ্যে মালিবাগে পুলিশের অপরাধ
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নির্বাচন বন্ধে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে বিএনপির চিঠি

৭ জানুয়ারি লুটেরা আর ভোট ডাকাতদের নির্বাচন: এবি পার্টি

নির্বাচনি জোয়ারে বিএনপির নেতাকর্মীও শামিল হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি গবেষককে গুলি করে হত্যা

নারায়ণগঞ্জ আদালতে হাজতখানা লাইব্রেরীর উদ্বোধন

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হামলা করে নৌকাকে বিতর্কিত করার পরিকল্পনা করছে: গাজী

নতুন বছরের প্রথম দিনে স্কুলে স্কুলে বই উৎসব

নতুন বছরে ব্যাংক ঋণের সুদহার ১২ শতাংশ

মঈন খানের সঙ্গে এনডিআই-আইআরআই পর্যবেক্ষক দলের বৈঠক

রাষ্ট্রীয় মদতে অগ্নিসন্ত্রাস-নাশকতার অভিযোগ বিএনপির

মেরিন সেক্টরে বাংলাদেশের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে: নৌপ্রতিমন্ত্রী

দেশের ৫ ভাগের একভাগ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন

৬০-৭০ শতাংশ ভোট না দেখাতে পারলে স্যাংশন আসবে

২০২৩ সালে ধর্ষণের শিকার ৫৭৩ নারী

বিএনপি নির্বাচনে আসার জন্য দরকষাকষি করেছে

৭০ তম জন্মদিনে গায়ক রফিকুল আলমের প্রত্যাশা

ইনস্টাগ্রাম পোস্ট শেয়ারে নতুনত্ব

ভোট সুষ্ঠু করতে যত বাহিনী দরকার নামানো হবে

ইউএফএস ও আইসিবির এমডিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বাংলাদেশে নাটকীয়ভাবে বেড়েছে বজ্রপাত-মৃত্যু