ই-পেপার শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

হাদির ওপর হামলা, শান্তির পথে কাঁটা ছড়াচ্ছে কারা?

মীর আব্দুল আলীম:
১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫:৫২

বহু প্রতীক্ষা ছিল। নতুন দিনের স্বপ্ন দেখছিল দেশ। নির্বাচন কমিশন ‘তফসিল’ ঘোষণা করল। নির্বাচনের ট্রেন ছুটল; আশার আলো জ্বলে উঠল। কিন্তু সেই আলো স্থায়ী হলো না। আঘাত হানল অন্ধকার। ঠিক পরদিনই মর্মান্তিক ঘটনা। ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ। প্রকাশ্যে, দিনের আলোয়। এটা নিছক অপরাধ নয়। এটি সরাসরি চ্যালেঞ্জ। গণতন্ত্রের বুকে বুলেটের আঘাত। এক রক্তক্ষরণ শুরু হলো। সংশয়, ভয় গ্রাস করল সাধারণ মানুষকে।

রাষ্ট্র প্রস্তুত হয়েছে ভোটের উৎসবে। শুরুতেই বিষাদ। এই হামলা প্রমাণ করে, কিছু শক্তি শান্তি চায় না। তারা সংঘাত দেখতে চায়। তারা বুলেটের ভাষায় কথা বলতে অভ্যস্ত। এই মুহূর্তে প্রশ্ন একটাই—আমরা কি কেবল নির্বাচনের পথে হাঁটছি, নাকি আদিম হিংসার বৃত্তে ঘুরছি? জাতির হৃদয়ে বাজছে কেবল বিষাদের সুর। রাষ্ট্র যদি এই ক্ষত দ্রুত সারিয়ে তুলতে না পারে, তবে পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াই প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

ওসমান হাদির ক্ষত ছোট করে দেখার সুযোগ নেই! ওসমান হাদির ওপর হামলাটি নিছক একটি ফৌজদারি ঘটনা নয়, এর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অত্যন্ত গভীর ও সুদূরপ্রসারী বলেই মনে হচ্ছে। তফসিল ঘোষণার ঠিক পরপরই নবীন এক নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া-এটি স্পষ্টতই একটি সুচিন্তিত রাজনৈতিক বার্তা। এই বার্তা হলো—শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কার্যকলাপ এখন আর নিরাপদ নয় এবং সহিংসতা এখনো রাজনৈতিক খেলার অংশ। এই হামলা শুধু হাদিকে টার্গেট করেনি, এটি একটি বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে আতঙ্কিত করার কৌশল। রাজনীতিতে অস্ত্রের অনুপ্রবেশ এবং ভিন্নমতের প্রতি চরম অসহিষ্ণুতা এই ঘটনার মূল কারণ। কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোতে নির্বাচনের আগে এমন নৃশংসতা মেনে নেওয়া যায় না। এই ঘটনা প্রমাণ করে, এক বিশেষ মহল হয়তো এখনো মনে করে যে সহিংসতাই তাদের ক্ষমতার ভাষা, যেখানে বুলেটের শব্দ ব্যালটের আওয়াজকে ছাপিয়ে যায়। এই আঘাতের গভীরে লুকিয়ে থাকা শক্তিকে চিহ্নিত ও নির্মূল করা না গেলে, নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা অসম্ভব।

তফসিল-উত্তর সংকট; নির্বাচন নিয়ে কেন এই সংশয়? তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল ও স্বাভাবিক হওয়ার কথা ছিল। তফসিলকে কেন্দ্র করে জনগণের মধ্যে যে ক্ষীণ আশার সঞ্চার হয়েছিল, হাদির রক্তপাত সেই আশাকেই গলা টিপে হত্যা করল। এই ঘটনা স্পষ্টতই ইঙ্গিত করে যে, দেশের রাজনীতিতে আস্থা ও ভরসার অভাব প্রকট এবং রাজনৈতিক সহাবস্থানের সংস্কৃতি সম্পূর্ণ বিলীন। জনগণের মনে প্রশ্ন জাগে যদি নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে এমন নৃশংসতা চলতে পারে, তবে ভোটের দিন এবং তার আগে নিরাপত্তা কোথায়? গণতান্ত্রিক নির্বাচন কেবল ব্যালট বাক্স বা ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নয়; এর ভিত্তি হলো নির্বাচনের আগে তৈরি হওয়া একটি অবাধ, নিরপেক্ষ এবং ভয়মুক্ত পরিবেশ।

যখন হাদির মতো একজন নেতা এমন আক্রমণের শিকার হন, তখন সাধারণ ভোটারদের মনে এই সংশয় জাগে, তারা কি নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছাতে পারবে, তাদের ভোটের মূল্য কি বুলেটের কাছে পরাজিত হবে? এই সংশয় দূর করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তাদের কঠোরতম পদক্ষেপ নিতে হবে। ওসমান হাদির ওপর হামলায় জড়িত অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা এখন সময়ের সবচেয়ে জরুরি দাবি। এই গ্রেফতার কেবল আইনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া নয় বরং এটি সরকারের আন্তরিকতা ও সক্ষমতার প্রতীক। তাদের প্রমাণ করতে হবে যে, তারা কেবল একটি রুটিন নির্বাচন আয়োজনের জন্য নয় বরং প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দায়বদ্ধ। সংশয় যদি স্থায়ী হয়, তবে ভোটারের অংশগ্রহণ হ্রাস পাবে এবং এই নির্বাচন তার নৈতিক ও রাজনৈতিক বৈধতা হারাবে। এই পরিস্থিতিতে, সরকারের উচিত হবে দ্রুত বিচার ও কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে জনগণের মনে এই আস্থা ফিরিয়ে আনা যে, রাষ্ট্র যেকোনো মূল্যে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখবে এবং নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক অধিকার, ভয়ের কারণ নয়।

শান্তির পথে কারা কাঁটা ছড়াচ্ছে? ওসমান হাদির ঘটনা নিঃসন্দেহে একটি টার্গেটেড হামলা, যা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এর পেছনে একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও পরিকল্পনা রয়েছে। এই প্রশ্নটি এখন জাতির সামনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, হাদির মতো আরও কেউ কি টার্গেট নয়? গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যখন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে অস্ত্রের মুখে স্তব্ধ করার চেষ্টা হয়, তখন বোঝা যায় এক মহল দেশকে অশান্ত ও অস্থিতিশীল করে তোলার অপচেষ্টায় লিপ্ত। এই মহল হয়তো চায়, নির্বাচন যেন একটি সংঘাতময় পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয়, যাতে সাধারণ ভোটার আতঙ্কিত হয়ে ভোটদান থেকে বিরত থাকে এবং বিশেষ গোষ্ঠীর রাজনৈতিক সুবিধা হয়। এটি একটি অন্ধকার ষড়যন্ত্র, যার লক্ষ্য হলো জনগণের কণ্ঠস্বরকে রুদ্ধ করা এবং রাজনৈতিক বৈচিত্র্যকে ধ্বংস করা। এই অপশক্তির মূল উদ্দেশ্য হলো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করে দেওয়া। তারা জনগণের আস্থা ও অংশগ্রহণে ভয় পায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচিত হবে কেবল হামলাকারীদের গ্রেফতার করা নয় বরং তাদের পেছনে থাকা ষড়যন্ত্রের নেপথ্য নায়কদের খুঁজে বের করা। এই নেপথ্য শক্তিকে চিহ্নিত করা ছাড়া এই ধরনের হামলা বন্ধ করা অসম্ভব। রাষ্ট্রকে প্রমাণ করতে হবে, মানুষের জীবনের চেয়ে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বা দলীয় স্বার্থ বড় হতে পারে না। এই হামলা যেন ভবিষ্যতের জন্য একটি উদাহরণ তৈরি না করে যে, সহিংসতা করে পার পাওয়া যায়। হামলাকারীদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে, এই ষড়যন্ত্রকারীরা আরও উৎসাহিত হবে। এই পেছনের শক্তি হতে পারে রাজনৈতিক সুবিধাভোগী গোষ্ঠী, যারা স্থিতিশীলতা চায় না অথবা আন্তর্জাতিক কোনো মহল যারা দেশের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অবশ্যই এই হামলার নেপথ্যের সংযোগগুলো খুঁজে বের করতে হবে, তা সে দেশের ভেতরেই হোক বা বাইরে। এই গভীর ষড়যন্ত্রের মুখোশ উন্মোচন করতে না পারলে, আমাদের গণতন্ত্র বারবার এমন হামলার শিকার হতে থাকবে। রাষ্ট্রকে এই বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে, কারণ একটি গোপন ষড়যন্ত্র দেশের পুরো রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে বিপন্ন করতে পারে।

কেন এত অসহিষ্ণুতা? আমাদের সমাজে রাজনীতির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ আজ এক মারাত্মক অবক্ষয়ের সম্মুখীন। ভিন্নমতের প্রতি অসহিষ্ণুতা এবং প্রতিপক্ষকে শত্রু হিসেবে দেখার মানসিকতা রাজনৈতিক অঙ্গনকে বিষাক্ত করে তুলেছে। এই শ্রদ্ধাবোধের অভাবই জন্ম দেয় হিংসার, জন্ম দেয় অস্ত্রের আস্ফালনের। প্রবীণ নেতা, এমনকি বিপরীত আদর্শের হলেও, তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা একটি সভ্য সমাজের পরিচায়ক। যে দেশ ভাষা ও সংস্কৃতির জন্য আত্মত্যাগ করেছে, সেই দেশে সামান্য রাজনৈতিক মতভেদের জন্য একজন প্রবীণ নেতাকে গুলিবিদ্ধ হতে হয়—এটি আমাদের জাতীয় লজ্জা ও নৈতিক দেউলিয়াপনার প্রতীক। রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিন্নতা থাকবেই, কিন্তু তার মীমাংসা হতে হবে আলোচনার টেবিলে, ভোটের মাঠে, বুলেটের মুখে নয়। যখন সমাজ থেকে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহনশীলতা বিদায় নেয়, তখনই আইনের বদলে শক্তি প্রয়োগের প্রবণতা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এই অসহিষ্ণুতা প্রমাণ করে, আমরা এখনো আমাদের রাজনৈতিক পরিপক্বতা অর্জন করতে পারিনি। গণতান্ত্রিক সহনশীলতা ও পারস্পরিক সম্মান ফিরিয়ে আনতে না পারলে, নির্বাচন কোনো অর্থবহ ফল বয়ে আনবে না। এই সামাজিক ও রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতার শেকড় উপড়ে ফেলা জরুরি, নতুবা এই বিষবৃক্ষ আমাদের সমাজকে গ্রাস করবে। রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত হবে তাদের কর্মীদের মধ্যে সহনশীলতার বার্তা ছড়িয়ে দিয়ে সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা।

জুলাই আন্দোলনের সময় থানা থেকে বিপুল সংখ্যক অস্ত্র লুটের ঘটনা ছিল এক জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ভয়াল ট্র্যাজেডি। আজ আমরা দেখছি, সেই লুণ্ঠিত অস্ত্রের অপব্যবহার চলছে। সন্ত্রাসীদের হাতে থাকা এই অস্ত্রগুলো কেবল নির্বাচনের পরিবেশকেই নয়, দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকেও চরমভাবে বিপন্ন করে তুলেছে। এই অস্ত্রগুলো যেন চলমান অশান্তির নীরব সাক্ষী। এই অবৈধ অস্ত্রের মজুত অবিলম্বে পুনরুদ্ধার করা এবং এর নেপথ্যের কারিগরদের বিচারের আওতায় আনা নির্বাচনকালীন সরকারের জন্য এক অগ্নিপরীক্ষা। এই অস্ত্রগুলো কেবল ধাতব বস্তু নয়; এগুলো হলো সমাজের ওপর চেপে বসা ভয়ের প্রতীক, যা রাষ্ট্রযন্ত্রের ব্যর্থতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। এই অস্ত্রগুলো এখন রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, চাঁদাবাজি এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপের প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। যতদিন না এই অবৈধ অস্ত্রের বাজার বন্ধ হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত শান্তি এক সোনার হরিণই থেকে যাবে। এই অস্ত্রের উৎস, মজুত এবং ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরতম অভিযান চালানো জরুরি। সরকারকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে, যেন কোনো রাজনৈতিক প্রভাব বা পরিচয় এই অবৈধ অস্ত্রের কারবারিদের রক্ষা করতে না পারে। অস্ত্র উদ্ধার অভিযানকে শুধুমাত্র লোক দেখানো কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ না রেখে, একে একটি ব্যাপক ও ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় পরিণত করতে হবে।

নির্বাচনের পূর্বশর্ত হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশ। আর এর মূল ভিত্তি হলো স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই পরিস্থিতি কতটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। সরকারের নিরপেক্ষতা এবং দৃঢ়তা এই সময়ে অগ্নিপরীক্ষার সম্মুখীন। যদি তারা দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে ওসমান হাদির ঘটনার অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে না পারে, তবে জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ণ হবে এবং অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরও উৎসাহিত হবে। তাদের এই মুহূর্তে প্রমাণ করতে হবে যে, তারা একটি শক্তিশালী ও পক্ষপাতহীন প্রশাসন পরিচালনা করতে সক্ষম। এই সরকারকে মনে রাখতে হবে, তাদের প্রধান দায়িত্ব কেবল নির্বাচন আয়োজন করা নয় বরং নাগরিকের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা নির্বাচনের পরিবেশকে আরও সংঘাতময় করে তুলবে। সরকারের উচিত হবে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া। যদি অন্তর্বর্তী সরকার এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়, তবে তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। তাদের প্রতিটি পদক্ষেপই এখন জনগণের কঠোর নজরদারিতে এবং তাদের উচিত হবে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি সুচিন্তিত এবং দ্রুত কার্যকর অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করা।

এই কঠিন সময়ে কেবল সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না। নাগরিক হিসেবে আমাদেরও দায়িত্ব রয়েছে। প্রতিটি ভোটারের, প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মীর দায়িত্ব হলো ঘৃণা ও সহিংসতাকে প্রত্যাখ্যান করা। আমাদের সম্মিলিত নীরবতা যেন অপরাধীদের উৎসাহিত না করে, সেই বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। প্রতিটি নাগরিককে তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে শান্তির পক্ষে সজাগ প্রহরীর মতো কাজ করতে হবে। সামাজিক মাধ্যম ও জনসভায় যেন কোনো বিদ্বেষমূলক কথা ছড়ানো না হয়, সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।

গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজকে এই সময়ে আরও সোচ্চার হতে হবে, যেন কোনো প্রকারের অন্যায় বা সহিংসতা আড়ালে থেকে না যায়। আমাদের মনে রাখতে হবে, গণতন্ত্র কেবল নির্বাচন নয়, এটি একটি জীবনবোধ। এই জীবনবোধকে রক্ষা করার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সহিংসতাকে ঘৃণা করা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা করা—এটাই হোক এই মুহূর্তে আমাদের একমাত্র রাজনৈতিক অঙ্গীকার। নাগরিকের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া শুধু সরকারি পদক্ষেপে এই সংকট সমাধান হবে না। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে একটি ভয়মুক্ত নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে।

ওসমান হাদির শরীরে লাগা বুলেট কেবল একজন ব্যক্তির শরীর ভেদ করেনি, তা আমাদের গণতন্ত্রের স্বপ্নকেও বিদ্ধ করেছে। তফসিল ঘোষণার পর এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দিলো যে, গণতন্ত্রের পথটি এখনো কণ্টকময় এবং সেখানে অন্ধকার ও রক্তের খেলা চলছে। তবে, অন্ধকার যতই গভীর হোক, আলোর দিকে যাত্রা থামানো উচিত নয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত হবে অবিলম্বে কঠোর হাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা এবং ওসমান হাদির ওপর হামলার পেছনের শক্তিকে চিহ্নিত করা। কারণ, একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন তখনই সম্ভব, যখন প্রতিটি নাগরিক নির্ভয়ে তার রাজনৈতিক মত প্রকাশ করতে পারে এবং শ্রদ্ধাবোধের আবহে ভিন্নমতকে গ্রহণ করতে পারে। এই জাতি আর কোনো রক্তক্ষরণ দেখতে চায় না; এই জাতি এখন কেবল শান্তির নির্বাচন চায়।

লেখক: সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সমাজ গবেষক।

আমার বার্তা/মীর আব্দুল আলীম/এমই

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট

জনগণের মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা একটি জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রের অপরিহার্য দায়িত্ব। তবে, বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান

এনটিআরসিএ নামকরণের সার্থকতা যথেষ্ট যৌক্তিক

NTRCA এর পূর্নাঙ্গ রূপ N= Non, T= Trusted, R= Researches and, C= Corrupted,  A= Authority.

ভূমিকম্প কেন হয় এবং নরসিংদী এর কেন্দ্র কেন? এ নিয়ে কিছু কথা

ভূমিকম্প সৃষ্টি হয় ভূত্বকের গভীরে। ভূমিকম্প যেখানে সৃষ্টি হয়, তাকে বলা হয় ভূমিকম্পের কেন্দ্রবিন্দু। কেন্দ্রবিন্দু

ভূমিকম্পের পরিমাপক রিখটার স্কেল: ভূমিকম্প পরিমাপের বিজ্ঞান

ভূমিকম্প মানবসভ্যতার ইতিহাসে এক অনিবার্য ও ভয়ংকর প্রাকৃতিক ঘটনা, যা পৃথিবীর ভূত্বকের অভ্যন্তরের শক্তি সঞ্চয়
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

২৪ ঘণ্টায়ও ওসমান হাদি হত্যাচেষ্টায় কোনো মামলা হয়নি

ওসমান হাদির ওপর হামলা নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না: নির্বাচন কমিশনার

মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ আমলাতান্ত্রিক দখলদারিত্বে জিম্মি

যেকোনও মূল্যে দেশে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে: তারেক রহমান

চরম হতাশার মুহূর্তে আল্লাহর ওপর ভরসা রাখার গুরুত্ব

মোবাইলে কথা বলতে বলতেই ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল যুবকের

যমুনা অয়েলের তেল চুরি সিন্ডিকেট প্রধান হেলালের প্রধান সেনাপতি এয়াকুব গ্রেপ্তার

২০২৬ সালে বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়াতে পারে ৪,৯০০ ডলারে

অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার কমাতে জানুয়ারিতে সচেতনতামূলক কর্মসূচি শুরু

ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধের ঘটনায় ঢাবি সাদা দলের নিন্দা প্রকাশ

বুয়েটে বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

তেঁতুলিয়ায় টানা তিন দিন ধরে চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ

তারেক রহমানের দেশে ফেরা-নিরাপত্তা নিয়ে যা জানালেন সালাহউদ্দিন

হাদিকে বর্তমানে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রাখা হয়েছে: মেডিকেল বোর্ড

টেকনাফ সীমান্তের ওপারে তীব্র গোলাগুলি, জনমনে আতঙ্ক

দেশীয় স্বাস্থ্য সেবায় আস্থা ফেরাতে কাঠামোগত সংস্কার ও কার্যকর প্রয়োগ জরুরি

১৩ ডিসেম্বর: জেনে নিন ২২ ক্যারেট স্বর্ণের ভরির দাম

শনাক্ত ব্যক্তি ও ঢাবি ভিপি এক টেবিলে চা খাচ্ছেন, এর বিচার কে করবে: রিজভী

মালদ্বীপ প্রবাসী কামালের মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিল

ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশ