
রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর যখন হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন ও অসহায়, ঠিক তখনই একটি মহলের পক্ষ থেকে বস্তির জায়গায় হাই-টেক পার্ক নির্মাণের কথা তোলা হয়েছে। সফটওয়্যার খাতের বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এ ধরনের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলের দিকে ফেসবুক পোস্টে ফয়েজ আহমদ বলেন, বেসরকারি উদ্যোক্তা আলমাস কবির মৌখিক ও লিখিতভাবে কড়াইল বস্তির জায়গায় হাই-টেক পার্ক নির্মাণের প্রস্তাব দিচ্ছিলেন। তবে সরকার এই প্রস্তাব আমলে নেয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, বর্তমানে কড়াইল বস্তির জায়গায় কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।
ফয়েজ আহমদ জানান, কড়াইল বস্তির প্রায় ৪৩ একর জায়গা বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের হলেও এটি নিয়ে জটিলতা রয়েছে। অতীতে এই জায়গাটির মালিকানা ছিল টিঅ্যান্ডটির (বর্তমান বিটিসিএল)। আদালতের মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কখনোই এই জায়গা বুঝে পায়নি এবং দখলের চেষ্টাও করেনি।
ফেসবুক পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, কড়াইল বস্তিতে অবকাঠামো নির্মাণের কোনো পরিকল্পনা না থাকলেও সফটওয়্যার শিল্পের জন্য দীর্ঘমেয়াদি বিকল্প খোঁজা হচ্ছে। কারওয়ান বাজারের জনতা টাওয়ারে যে সফটওয়্যার পার্কটি ছিল, সেটির ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় মেরামতের কাজ শুরু করতে হয়েছে এবং কোম্পানিগুলোকে অস্থায়ীভাবে সরানো হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে সরকার গণপূর্ত এবং রাজউককে আলাদাভাবে চিঠি দিয়েছে, যাতে ঢাকার আগারগাঁও, পূর্বাচল কিংবা অন্যান্য এলাকায় সফটওয়্যার পার্ক নির্মাণের জন্য জমি প্রদান করা হয়। এর অংশ হিসেবে: হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ আগারগাঁওয়ের একটি প্লট বরাদ্দ নিয়ে কাজ শুরু করেছে। এই প্লটে সফটওয়্যার পার্ক এবং হাই-টেক পার্কের প্রধান অফিসসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের জন্য একটি নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে, যাতে গণপূর্ত বিভাগ সায় দিয়েছে। গত বছরের শেষের দিকে বনানী কর্নারের যে অংশে কোনো বস্তি নেই, তার ছোট অংশে একটি সফটওয়্যার পার্ক ভবন নির্মাণের কথা উঠলেও মানবাধিকার কর্মীদের পরামর্শক্রমে সেই পরিকল্পনা থেকেও আইসিটি বিভাগ বিরত থাকে।
ফয়েজ আহমদ বলেছেন, ‘সরকারের পরিকল্পনার সঙ্গে আদৌ সংশ্লিষ্ট নয়, এমন বক্তব্য প্রদানে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সচেতন ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।’
হাজার হাজার মানুষ যখন আগুনে বিপর্যস্ত হয়ে নিরাপত্তাহীন অসহায় পরিস্থিতিতে রয়েছে, তখন হাই-টেক পার্ক স্থাপনের ‘আজগুবি’ বিষয় সামনে এনে ‘সরকারকে বিব্রত করার এমন অপচেষ্টার নিন্দা’ জানিয়েছেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
আমার বার্তা/এমই

