ই-পেপার শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২
ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ

দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন শুল্ক পাকিস্তানে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কারা?

আমার বার্তা অনলাইন
০১ আগস্ট ২০২৫, ১৮:০১

চলতি বছরের এপ্রিল মাসের ২ তারিখকে ‘লিবারেশন ডে’ নামে অভিহিত করে বিভিন্ন দেশের ওপর ‘প্রতিশোধমূলক’ শুল্ক ঘোষণা করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর থেকে নিজেই নিজের সিদ্ধান্ত বেশ কয়েকবার পাল্টিয়েছেন তিনি।

সর্বশেষ ৩১ জুলাই ৯০টিরও বেশি দেশের ওপর নতুন শুল্কহার ঘোষণা করেছেন মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট। সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৪১ শতাংশ পর্যন্ত রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ বা পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন তিনি।

বলা হচ্ছে, ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপে এশিয়ার দেশগুলোই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুক্রবার (১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গত এপ্রিলের ‘লিবারেশন ডে’-তে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত শুল্কে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় শীর্ষে আছে এশিয়ার রপ্তানিনির্ভর দেশগুলো।

জাপানসহ যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্যবাহী মিত্র দেশগুলো থেকে শুরু করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো পর্যন্ত— অনেক দেশই, বিশেষ করে যারা মার্কিন বাজারনির্ভর রপ্তানি করে, ১ আগস্টের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির জন্য তৎপর হয়ে ওঠে।

মার্কিন মিত্র: দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়া

এশিয়ার অনেক দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান মিত্র রাষ্ট্রগুলো কিছুটা ভালো অবস্থানে আছে। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া — যাদের গাড়ি ও সেমিকন্ডাক্টর পণ্য মার্কিন বাজারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ — এপ্রিল মাসে প্রস্তাবিত ২৫ শতাংশ শুল্কের মুখে পড়েছিল।

তবে সামরিক দিক থেকেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায়, জুলাইয়ের শেষ নাগাদ ওয়াশিংটনে বাণিজ্য প্রতিনিধি পাঠিয়ে এই শুল্ক হার কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয় তারা। গত ২২ জুলাই ট্রাম্প জাপানের সঙ্গে চুক্তিকে “ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য চুক্তি” বলে ঘোষণা দেন। দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে চুক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয় ৩০ জুলাই।

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনকারী ও যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র তাইওয়ানের পণ্যে শুল্ক হার ৩২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। তবে তাদের চিপ শিল্পকে আলাদা খাতে নতুন শুল্কের মুখে পড়তে হতে পারে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে বলেন, বর্তমানে কার্যকর শুল্ক হারটি ‘অস্থায়ী’, কারণ ওয়াশিংটনের সঙ্গে এখনও আলোচনা চলছে।

অস্ট্রেলিয়ার পণ্যে এপ্রিলে ১০ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছিল। তবে আপাতত নতুন কোনও বাড়তি শুল্কের মুখে পড়েনি দেশটি। তবে প্রতিবেশী নিউজিল্যান্ডের ক্ষেত্রে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৫ শতাংশ হয়েছে। দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী টড ম্যাকক্লে বলেন, তারা “অন্যায়ভাবে শাস্তি পেয়েছেন” এবং শুল্ক কমাতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও প্রধান বাণিজ্য আলোচকের সঙ্গে আলোচনার অনুরোধ জানিয়েছেন।

চীন ও ভারতের অবস্থা কী?

যুক্তরাষ্ট্রে সর্বশেষ শুল্ক ঘোষণায় চীনের নাম না থাকলেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে দেশটি। গত কয়েক মাসে জেনেভা, লন্ডন ও স্টকহোমে বেইজিং-ওয়াশিংটন মধ্যে একাধিক কূটনৈতিক বৈঠক হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, চীন যুক্তরাষ্ট্রের মূল প্রযুক্তি— যেমন সেমিকন্ডাক্টরের ওপর রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ স্থগিত রাখার চেষ্টা করছে। এর বদলে চীন বিরল খনিজের স্থিতিশীল সরবরাহ বজায় রাখবে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র চায় চীন যেন ফেন্টানিল উৎপাদন কমায়, মার্কিন কোম্পানিগুলোর বাজারে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি করে, আরও মার্কিন কৃষিপণ্য ও অন্যান্য পণ্য কিনে এবং যুক্তরাষ্ট্রে আরও বিনিয়োগ করে।

তবে দুই দেশই এখন তাদের চলমান বাণিজ্য যুদ্ধবিরতি আরও ৯০ দিন বাড়াতে সম্মত হয়েছে, যা আগামী ১২ আগস্ট শেষ হওয়ার কথা ছিল।

ভারতের ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্র ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, সঙ্গে রাশিয়া থেকে তেল ও অস্ত্র কেনার জন্য “অনির্দিষ্ট জরিমানা” ধার্য করেছে ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এখনো দিল্লি-ওয়াশিংটন সম্পর্কের জন্য “বিরক্তির কারণ”।

তবে ভারতের ওপর আরোপিত সর্বশেষ শুল্ক চলতি বছরের এপ্রিলে প্রস্তাবিত ২৭ শতাংশ শুল্কের চেয়ে কিছুটা কম।

আসিয়ান দেশগুলোর ভিন্ন ভিন্ন পরিণতি

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো মার্কিন শুল্কের ঘোষণার পর একেক রকম অবস্থায় পড়েছে। ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল যেদিন নাটকীয়ভাবে শুল্ক ঘোষণা দেন, এই অঞ্চলেই সবচেয়ে বেশি আলোড়ন তৈরি হয়। কারণ, এখানকার অর্থনীতি মূলত রপ্তানি নির্ভর।

শুরুর দিকে কোনো কোনো দেশের ওপর ৪৯ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসানো হয়। এতে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের ইলেকট্রনিকস শিল্প, মালয়েশিয়ার চিপ নির্মাতা এবং কম্বোডিয়ার পোশাক কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

দশ আসিয়ান দেশের মধ্যে ভিয়েতনাম প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করে চুক্তিতে পৌঁছায়। তারা শুল্ক হার ৪৬ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়। যদিও হ্যানয় ট্রাম্পের হিসাব মানে না বলে কিছু প্রতিবেদন বলছে, তবুও ভিয়েতনাম অন্যদের জন্য নজির স্থাপন করে।

সর্বশেষ হালনাগাদ তালিকা অনুসারে, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম— সবাই এখন ১৯ থেকে ২০ শতাংশ শুল্কের আওতায় পড়েছে। ব্রুনেইয়ের ক্ষেত্রে এই হার ২৫ শতাংশ।

তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লাওস ও মিয়ানমার— তাদের ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হয়েছে। এর পেছনের যুক্তি স্পষ্ট নয়, তবে হিনরিচ ফাউন্ডেশনের বাণিজ্য নীতির প্রধান ড. ডেবোরাহ এলমস মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশাধিকার সীমিত, ক্রয়ক্ষমতা কম এবং চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সিঙ্গাপুরের ক্ষেত্রে শুল্ক হার অপরিবর্তিত রয়েছে অর্থ্যাৎ ১০ শতাংশ। দেশটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বেশি করে, রপ্তানি করে কম।

অন্য দেশগুলোর পরিস্থিতি কী?

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর শুল্ক হার ভিন্ন ভিন্ন। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে শুল্ক হার ১৯ শতাংশ— যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম এবং ভারতের চেয়ে অনেকটাই কম।

ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্ক উষ্ণ হয়েছে। এমনকি পাকিস্তান গত জুন মাসে ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছে। এই তুলনামূলক কম শুল্ক পাকিস্তানের তৈরি পোশাক খাতে বিশেষ সুবিধা এনে দিতে পারে।

পাকিস্তানের মোট রপ্তানির প্রায় ৬০ শতাংশ হচ্ছে টেক্সটাইল, যার বেশির ভাগই যুক্তরাষ্ট্রে যায়। অন্যদিকে, এই খাতে পাকিস্তানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীরা — ভারত, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম — সবাই এখন বেশি শুল্কের আওতায়।

আফগানিস্তান, ফিজি, নাউরু এবং পাপুয়া নিউ গিনি সবাই ১৫ শতাংশ শুল্কের আওতায় পড়েছে। কাজাখস্তানের জন্য এই হার ২৫ শতাংশ। তবে হিনরিচ ফাউন্ডেশনের ড. এলমস মনে করিয়ে দেন, আজকের ঘোষিত হারগুলো চূড়ান্ত নয়।

তিনি বলেন, “এক্সিকিউটিভ অর্ডারে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট যেকোনো সময় ইচ্ছামতো শুল্ক হার পরিবর্তন করতে পারেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তিনি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকেও বড় পরিসরে স্বাধীনতা দিয়েছেন— যাতে তারা নিজেদের মতো করে বাণিজ্য বাধা মোকাবিলা করতে পারে।”

বাংলাদেশের ওপর নিবিড় নজর রাখছি: জয়শঙ্কর

বাংলাদেশের ওপর ভারত নিবিড়ভাবে নজর রাখছে বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। ভারতের জাতীয় স্বার্থ

এক টুকরো খাবারের জন্য প্রাণ গেছে প্রায় দেড় হাজার ফিলিস্তিনির

শুধুমাত্র বেঁচে থাকার খাবার আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ১ হাজার ৩৭৩

বাংলাদেশের শুল্ক কমায় ভারতের পোশাক বাজারের শেয়ারে দরপতন

বাংলাদেশের পণ্যে পারস্পরিক শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপরই আজ

ইরানের জাহাজ নেটওয়ার্ককে লক্ষ্য করে বড় নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের

ইরানকে আরও চাপে ফেলতে এবার দেশটির জাহাজ পরিবহন নেটওয়ার্ক ও পরিষেবা ব্যবস্থার ওপর বড় নিষেধাজ্ঞা
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

০২ আগস্ট ঘটে যাওয়া নানান ঘটনা

ভারত থেকে ফিরেই গ্রেপ্তার হলেন ছাত্রলীগ নেতা রাফি

শুল্ক হ্রাসে স্বস্তি, মার্কিন বাজারে বাড়ছে বাংলাদেশের রপ্তানি সম্ভাবনা

আ.লীগকে রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিহ্ন করতে পারলেই মিলবে চূড়ান্ত মুক্তি

শহীদ জিয়ার আদর্শ বুকে ধারণ করেছি- রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু

সাংবাদিকদের স্বার্থরক্ষায় বিএমএসএফের সদস্যরা ঐক্যবদ্ধ

বেতনের দাবিতে ধর্মঘট, বাংলাদেশি শ্রমিকদের ফেরত পাঠালো কুয়েত

মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে ১৭ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করল বিএসএফ

বাংলাদেশের ওপর নিবিড় নজর রাখছি: জয়শঙ্কর

এক টুকরো খাবারের জন্য প্রাণ গেছে প্রায় দেড় হাজার ফিলিস্তিনির

দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন শুল্ক পাকিস্তানে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কারা?

বেনজীর আহমেদের ডক্টরেট ডিগ্রি স্থগিত করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

ভরা মৌসুমেও ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন নিয়ে এখনও সুস্পষ্ট ঘোষণা পাইনি

বাংলাদেশের শুল্ক কমায় ভারতের পোশাক বাজারের শেয়ারে দরপতন

শুল্কের হার কমিয়ে ২০ শতাংশে আনা রপ্তানি খাতের জন্য সন্তোষজনক

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৮ রানে হারিয়ে সিরিজ শুরু পাকিস্তানের

ইরানের জাহাজ নেটওয়ার্ককে লক্ষ্য করে বড় নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের

মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজের ৭ দিন পর ভেসে এলো জেলের মরদেহ

বিশ্বকাপ নিয়ে ব্রাজিলিয়ান সমর্থকদের জন্য বিশাল দুঃসংবাদ