যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিভাগকে ভেঙে দিতে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছাত্র-শিক্ষকদের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন তিনি। এই সংস্থাটি বন্ধ হলে আমেরিকার স্কুলগুলো আর ফেডারেল সরকারের অধীনে থাকবে না।
বিবিসি জানিয়েছে, ট্রাম্প শিক্ষা বিভাগকে ‘শ্বাসরুদ্ধকর ব্যর্থতা’ হিসেবে অভিহিত করে এর নিয়ন্ত্রণে থাকা অর্থ রাজ্যগুলোতে ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মূলত কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিভাগকে বিলোপ করার লক্ষ্য নিয়ে এ আদেশটি দেওয়া হয়েছে। হোয়াইট হাউসে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার পর এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, আদেশটি শিক্ষা বিভাগকে বিলুপ্ত করার প্রথম পদক্ষেপ। আমরা শিক্ষায় ফিরতে যাচ্ছি। এটা খুব সাধারণ বিষয়। আর তা হলো, এটিকে (শিক্ষাকে) অঙ্গরাজ্যগুলোতে ফিরিয়ে নেওয়া, যা এর শিকড়।
স্কুলের নীতিমালাকে প্রায় পুরোপুরিভাবে অঙ্গরাজ্য ও স্থানীয় বোর্ডের হাতে ছেড়ে দেওয়ার উপযোগী করে নির্বাহী আদেশটি তৈরি করা হয়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, তারা তাদের প্রায় অর্ধেক কর্মীকে ছাঁটাই করবে। কেন্দ্রীয় সরকারের আকার কমাতে ট্রাম্পের তৎপরতার অংশ হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রক্ষণশীলরা চান শিক্ষাবিষয়ক নীতিমালা ও স্কুল বাছাইয়ের সুযোগের ওপর স্থানীয় নিয়ন্ত্রণ থাকুক, তা বেসরকারি ও ধর্মীয় স্কুলগুলোকে সুবিধা দেবে। আর বামপন্থী ধারার ভোটারেরা ব্যাপকভাবে সরকারি স্কুল ও বৈচিত্র্যপূর্ণ কর্মসূচিগুলোতে ভালো রকমের তহবিল দেওয়ার পক্ষে। শিক্ষা বিভাগ যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১ লাখ সরকারি এবং ৩৪ হাজার বেসরকারি স্কুলের তহবিল তত্ত্বাবধান করে থাকে। যদিও সরকারি স্কুলের ৮৫ শতাংশেরও বেশি তহবিল অঙ্গরাজ্য এবং স্থানীয় সরকারের কাছ থেকে আসে। অর্থসংকটে থাকা স্কুল এবং কর্মসূচিগুলোর জন্য কেন্দ্রীয় অনুদান প্রদান করে থাকে এ বিভাগ। যেমন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার জন্য অর্থ, শিল্পকলা সংক্রান্ত কর্মসূচির জন্য তহবিল এবং পুরোনো অবকাঠামো প্রতিস্থাপনের কাজ করে থাকে। সরাসরি কলেজের খরচ বহন করতে পারে না এমন শিক্ষার্থীদের ঋণ দেওয়ার কাজটিও তত্ত্বাবধান করে তারা।
যদিও কংগ্রেসে আইন পাস ছাড়া এই সংস্থা বন্ধ করতে পারবেন না ট্রাম্প। এ ধরনের সংস্থা বিলুপ্ত করার মতো বড় আইন পাস করতে ৬০টি ভোটের প্রয়োজন।
ট্রাম্পের এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় সিনেটের সংখ্যালঘু নেতা চাক শুমার লেখেন, ‘শিক্ষা বিভাগ ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেওয়া সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক এবং বিপর্যয়কর পদক্ষেপগুলোর মধ্যে একটি। এটি শিশুদের ক্ষতি করবে।’