
জেমস ক্যামেরনের জাদুকরী সৃষ্টি ‘অ্যাভাটার’ ফ্র্যাঞ্চাইজির তৃতীয় কিস্তি ‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’ নিয়ে এখন হলিউডসহ বিশ্বজুড়ে উন্মাদনা তুঙ্গে। প্রজেকশন অনুযায়ী, মুক্তির প্রথম সপ্তাহান্তেই (ওপেনিং উইকেন্ড) সিনেমাটি মার্কিন বক্স অফিসে ৯০ থেকে ১০৫ মিলিয়ন ডলার আয় করতে পারে। আর বিশ্বজুড়ে এর আয় ৩৪০ থেকে ৩৬৫ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নতুন কিস্তিতে 'অ্যাশ পিপল' বা ছাইয়ের মানুষদের সাথে পরিচয় করানো হবে। এরা আগ্নেয়গিরি অঞ্চলে বাস করে এবং আগের জাতিগুলোর তুলনায় অনেক বেশি আক্রমণাত্মক ও ক্রোধপরায়ণ। প্রথম দুটি পর্বে প্রকৃতিকে রক্ষার বিষয়টিতে জোর দেওয়া হয়েছিল। এই পর্বে আগুন একটি প্রধান থিম।
এটি শুধু ধ্বংস নয়, বরং ক্রোধ এবং প্রতিহিংসার প্রতীক হিসেবে কাজ করবে। জেমস ক্যামেরন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, সব না’ভিই ভালো হয় না; এই মুভিতে না’ভিদের মধ্যকার অন্ধকার দিকগুলো দেখানো হবে।
আগের কিস্তিগুলোতে লড়াই ছিল মূলত মানুষ বনাম না’ভিদের মধ্যে। কিন্তু 'ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ'-এ জেইক সালি এবং নেইতিরির পরিবারকে তাদের নিজেদের জাতির (না’ভি) মধ্য থেকেই আসা নতুন শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। অর্থাৎ, এবারের লড়াইটা হবে না’ভি বনাম না’ভি।
দর্শকরা প্যান্ডোরার নতুন নতুন ভৌগোলিক অঞ্চল দেখতে পাবেন। আগ্নেয়গিরির লাভা-ঘেরা পরিবেশ এবং সেই প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকা না’ভিদের সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রা হবে এই সিনেমার অন্যতম বড় আকর্ষণ।
এদিকে রেকর্ডের হাতছানি জেমস ক্যামেরনের আগের দুটি সিনেমা, ২০০৯ সালের ‘অ্যাভাটার’ এবং ২০২২ সালের ‘অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’, দুটিই বিশ্বজুড়ে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি আয় করেছে। যদি ‘ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’ একই সাফল্য পায়, তবে এটিই হবে ইতিহাসের প্রথম ফ্র্যাঞ্চাইজি যার তিনটি কিস্তিই ২ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করবে। বর্তমানে ক্যামেরনই একমাত্র পরিচালক যার তিনটি সিনেমা (টাইটানিকসহ) ২ বিলিয়ন ডলারের ক্লাবে রয়েছে।
গল্প ও দৈর্ঘ্য পান্ডোরার নীল না’ভি জাতি এবং খলনায়ক আরডিএ-র মধ্যকার যুদ্ধের রেশ ধরেই এগোবে এবারের গল্প। জেক সালি (স্যাম ওয়ার্থিংটন) এবং নেইতিরির (জো সালদানা) পরিবারকে এবার লড়াই করতে হবে আগুনের শক্তির অধিকারী এক নতুন গোত্রের বিরুদ্ধে। ৩ ঘণ্টা ১৭ মিনিটের দীর্ঘ এই সিনেমাটি দর্শকদের কতটুকু ধরে রাখতে পারে, সেটিই এখন দেখার বিষয়। তবে সমালোচকদের মতে, সিনেমাটি গত পর্বের তুলনায় অনেক বেশি টানটান এবং রোমাঞ্চকর।
প্রতিযোগিতা ও প্রত্যাশা ‘অ্যাভাটার’-এর রাজত্বের মাঝেই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে আরও কিছু সিনেমা। এর মধ্যে সিডনি সুইনি অভিনীত সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার ‘দ্য হাউসমেইড’, অ্যানিমেটেড ছবি ‘দ্য স্পঞ্জবব মুভি: সার্চ ফর স্কয়ারপ্যান্টস’ এবং ধর্মীয় পটভূমির ‘ডেভিড’ উল্লেখযোগ্য। যদিও বড় পর্দা দখলের দৌড়ে ক্যামেরনের সিনেমা অনেক এগিয়ে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বর্তমানে উত্তর আমেরিকার বক্স অফিস গত বছরের তুলনায় মাত্র ০.৫% এগিয়ে আছে। বছরের মোট আয় ৯ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে হলে ‘অ্যাভাটার’-এর বড় মাপের সাফল্যের কোনো বিকল্প নেই। এখন দেখার বিষয়, বড় দিনের ছুটিতে জেমস ক্যামেরন আবারও তার চিরচেনা জাদুতে দর্শকদের মুগ্ধ করতে পারেন কি না।

