
আগামী বছর মাদ্রাসায় চালু হচ্ছে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ। এরইমধ্যে কারিকুলাম তৈরি ও প্রতিষ্ঠান নির্বাচন শুরু হয়েছে। মাদ্রাসা শিক্ষায় নতুন এই সংযোজনকে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত বলছেন শিক্ষাবিদরা। তবে বিভাগ খোলার অগেই পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষক নিয়োগের পরামর্শ তাদের।
জানা গেছে, ১৭৮০ সালে উপমহাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা শুরু হয়। যেখানে ধর্মীয় বিশেষায়িত বিষয়গুলোর পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার মতো জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড- এনসিটিবি'র কারিকুলাম অনুসরণ করা হয়। স্বাধীনতার পর মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী করতে মানবিকের পাশাপাশি বিজ্ঞান বিভাগ চালু হয়। বারবার আলোচনা হলেও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ চালু করতে পারেনি বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ চালুর উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২০২৬ সাল থেকেই দাখিল বা মাধ্যমিক পর্যায়ে নতুন এই বিভাগ চালু করতে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডকে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রণালয়। এরইমধ্যে পাঠ্যক্রম প্রণয়ন, সিলেবাস অনুযায়ী পাঠ্যপুস্তক নির্ধারণ ও উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান নির্বাচন শুরু হয়েছে।
ঢাকা মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের কারিকুলাম বিশেষজ্ঞা ড. হেদায়েত উল্লাহ বলেন, ‘স্কুল ও কলেজের বাণিজ্য শাখার যে কারিকুলাম ঠিক রেখে আমরা মাদ্রাসার বইগুলোকে। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে যেখানে যেখানে সংশোধন দরকার তা করা হবে।’
এই বিভাগ চালু করতে হলে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানে অষ্টম শ্রেণিতে কমপক্ষে ১০০ শিক্ষার্থী থাকতে হবে। থাকতে হবে অতিরিক্ত দুটি শ্রেণিকক্ষ। আর সরকার নিয়োগকৃত শিক্ষক যোগদানের আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খরচে খণ্ডকালীন শিক্ষকের মাধ্যমে কার্যক্রম চালু করতে হবে।
মাদ্রাসা শিক্ষায় নতুন এই সংযোজনের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম বলেন, ‘মাদ্রাসায় ব্যবসা শিক্ষা বিভাগ চালুকে সাধুবাদ জানাই। একটি মাদ্রাসার ওপর যদি দুটি শর্ত ছেড়ে দেই, একটা হলো খণ্ডকালীন শিক্ষক ভাড়া করে আনবে এবং অভ্যন্তরীণ ফান্ড থেকে তাদের খরচ বহন করবে- যেটা আসলে অনেকটা অসম্ভব। তাই বিভাগ খোলার অগেই পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষক নিয়োগ জরুরি।’
তবে মাদ্রাসা শিক্ষার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ও স্বকীয়তা বজায় রেখে যে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা বলছেন মাদ্রাসা শিক্ষায় সম্পৃক্তরা।
কাদেরিয়া তৈয়বিয়া কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ আববুল কাশে ফজলুল হক বলেন, ‘এতগুলো বিষয় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের পড়তে হবে এবং এগুলো ব্যাসিক, এখান থেকে বাদ দেয়ার সুযোগ নেই। এখন এই সাবজেক্টগুলো পর্যাপ্ত নম্বর দিয়ে এডজাস্ট করতে গেলে, জেনারেল বিষয়গুলো কতটুকু দেয়া যাবে সেটার একটা বিষয় রয়েছে।’
আমার বার্তা/এল/এমই

