
এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড-এর সৌজন্যে এবং ওয়ালটন গ্রুপের সঞ্চালনায় রাজধানীর লে মেরিডিয়ান ঢাকা হোটেলে গত ১৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের ১৪তম কমিউনিকেশন সামিট। দেশের মার্কেটিং, অ্যাডভার্টাইজিং, ব্র্যান্ডিং, মিডিয়া, পিআর ও ক্রিয়েটিভ কমিউনিকেশন খাতের শীর্ষ পেশাজীবীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই ফ্ল্যাগশিপ সামিটের এ বছরের প্রতিপাদ্য ছিল— “কেয়স, কালচার অ্যান্ড ক্রিয়েটিভিটি: রিইমাজিনিং দ্য কমিউনিকেশন ক্যানভাস।”
সামিটের আলোচনায় বক্তারা জানান, দ্রুত বদলে যাওয়া ডিজিটাল বাস্তবতা, দর্শকের আচরণগত পরিবর্তন এবং নতুন সাংস্কৃতিক প্রবণতার কারণে যোগাযোগ শিল্প এখন বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তাই নতুন ধরনের গল্প বলা, দর্শকের সঙ্গে অর্থবহ সম্পর্ক তৈরি এবং সৃজনশীলতার গভীরতা বাড়ানো—এখন সময়োপযোগী প্রয়োজন। বক্তাদের মতে, মানুষের জীবন, সংস্কৃতি ও আচরণ বোঝাই কার্যকর কমিউনিকেশনের কেন্দ্রবিন্দু।
অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের গ্রুপ সিইও ও নির্বাহী সম্পাদক সাজিদ মাহবুব বলেন, “যোগাযোগ শিল্প আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। অনিশ্চয়তার এই সময়ে সৃজনশীলতাই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পথ। সংস্কৃতি, মানবিকতা এবং সৃজনশীল চিন্তা—এই তিনটির সমন্বয়েই তৈরি হয় এমন ব্র্যান্ড–গল্প, যা মানুষের সঙ্গে সত্যিকারের সংযোগ সৃষ্টি করে।”
দিনব্যাপী আয়োজনে ছিল ৩টি কী–নোট সেশন, ৪টি প্যানেল আলোচনা ও ২টি কেস স্টাডি সেশন, যেখানে ব্র্যান্ড–কমিউনিকেশন শিল্পের বর্তমান প্রবণতা, ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ এবং উদীয়মান বাস্তবতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
কী–নোট সেশনে বক্তারা ব্যবসায়িক সমস্যা সমাধানে সৃজনশীলতার কার্যকর ব্যবহার, ডিজিটাল যুগে ব্র্যান্ডের আত্মতুষ্টির ঝুঁকি—যেখানে “জোহরান মামদানি” ক্যাম্পেইনকে উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়—এবং স্পষ্ট ও প্রভাবশালী ব্র্যান্ড বার্তা তৈরির প্রয়োজনীয় কাঠামো তুলে ধরেন। কী–নোট প্রদান করেন—তানজীন আলম (কান্ট্রি হেড, বাংলাদেশ অ্যান্ড এসইএ, এমামী লিমিটেড), অরূপ ইরফান স্যানাল (হেড অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ স্ট্র্যাটেজিস্ট, মাইটি), এবং তৌফিক মাহমুদ (এক্সিকিউটিভ ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর, মিডিয়াকম লিমিটেড)।
নিজের বক্তব্যে তানজীন আলম বলেন, “সত্যিকারের সৃজনশীলতা তখনই মূল্য তৈরি করে যখন তা বাস্তব ব্যবসায়িক সমস্যার সমাধান করে।” তিনি আরও বলেন, পাঁচ সেকেন্ডের একটি শক্ত সংকেত বা বুদ্ধিদীপ্ত বাঁক অনেক সময় বড় প্রোডাকশন ছাড়াই দর্শকের মনোযোগ কাড়তে পারে।
প্যানেল আলোচনায় বক্তারা ক্লায়েন্ট–এজেন্সির পারস্পরিক আস্থা, সহযোগিতা ও যৌথ দায়িত্বভিত্তিক কাজের পরিবেশ গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন। তারা বলেন, ন্যায্য পিচ–ফি, ভারসাম্যপূর্ণ চুক্তি এবং গবেষণা–সমৃদ্ধ যৌথ কৌশলই ভবিষ্যৎ–প্রস্তুত ব্র্যান্ড কমিউনিকেশন তৈরি করতে সহায়তা করবে। আলোচনায় কনটেন্ট বাড়ার সঙ্গে সৃজনশীলতার গভীরতা বজায় রাখা, অর্থ–অনুভূতি–সংস্কৃতিভিত্তিক ব্র্যান্ড–ভ্যালু নির্মাণ এবং উদ্দেশ্য–নির্ভর নেতৃত্বের দিক নির্দেশনাও উঠে আসে।
কেস স্টাডি সেশনে বিশ্লেষণ করা হয়, সাংস্কৃতিক ও আচরণগত পরিবর্তনের সঙ্গে ব্র্যান্ডগুলোকে কীভাবে খাপ খাইয়ে চলতে হচ্ছে এবং এতে শিল্পে কী ধরনের প্রভাব পড়ছে।
সামিটে বক্তা হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন—আফজাল মাহবুব (সিইও, গ্রে গ্রুপ), অজয় কুমার কুন্ডু (সিইও, মিডিয়াকম), সারাহ আলী (ম্যানেজিং ডিরেক্টর, এফসিবি বিটপি), শারজিল করিম (ম্যানেজিং ডিরেক্টর, ইন্টারস্পিড অ্যাডভার্টাইজিং), ইশতিয়াক শহরিয়ার (ইভিপি ও হেড অব ডিজিটাল অ্যাসেটস অ্যান্ড কমিউনিকেশনস, বিকাশ), দ্রাবীর আলম (সিওও ও ডিরেক্টর, এক্স সলিউশনস), তানভীর হোসাইন (এক্সিকিউটিভ ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর, সান কমিউনিকেশনস), লুতফি চৌধুরী (কো–ফাউন্ডার ও সিইও, অ্যাডফিনিক্স) প্রমুখ।
এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড-এর সৌজন্যে এবং ওয়ালটন গ্রুপের সঞ্চালনায় আয়োজিত কমিউনিকেশন সামিট ২০২৫-এর সহযোগিতায় ছিল—কানস লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যাল অব ক্রিয়েটিভিটি। স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার—ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভার্টাইজিং অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ, এশিয়া মার্কেটিং ফেডারেশন, বিবিএফ সিএমও ক্লাব। নলেজ পার্টনার—মার্কেটিং সোসাইটি অব বাংলাদেশ। হসপিটালিটি পার্টনার—লে মেরিডিয়ান ঢাকা; অফিসিয়াল ক্যারিয়ার পার্টনার—টার্কিশ এয়ারলাইন্স; পিআর পার্টনার—ব্যাকপেজ পিআর।
কমিউনিকেশন সামিট ২০২৫ বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের একটি উদ্যোগ।।
আমার বার্তা/এমই

