২০১৩ সালে আন্দোলনকারীদের ওপর অভিযানের অভিযোগে সমালোচিত পুলিশ কর্মকর্তা হামিদুল আলম মিলনকে রংপুর রেঞ্জে অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে সংযুক্ত করা হয়েছে। গত বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশে ৬২ নম্বর ক্রমিকে এই পদায়ন হয়।
হামিদুল আলমের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে জয়পুরহাটে দায়িত্বে থাকার সময় ১৩ আন্দোলনকারী নিহত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সে সময় তিনি জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) পদে দায়িত্বে ছিলেন। ঘটনাটি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যার মধ্যে চলতি বছরের মার্চ মাসে একটি জাতীয় দৈনিকে “অতিরিক্ত ডিআইজি মিলনের নেতৃত্বে ১৩ নেতাকর্মী হত্যা” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ পায়।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, হামিদুল আলম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তা। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে সারদায় প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে কর্মজীবন শুরু করলেও পরে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর চাকরি হারাতে হয়। আওয়ামী লীগ সরকার পুনরায় ক্ষমতায় এলে তাকে পুনর্বহাল করা হয়।
এরপর দিনাজপুর, মেহেরপুর ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় এসপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কর্মজীবনে বিপিএম ও পিপিএম পদকে ভূষিত হন। ২০২৩ সালে তিনি অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি পান।
২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার স্ত্রী শাহাজাদী লিপি বগুড়ার সারিয়াকান্দি-সোনাতলা আসনে প্রার্থী হন। সরকারি গাড়ি ও প্রভাব ব্যবহার সংক্রান্ত অভিযোগে হামিদুল আলমকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করা হয়।
নতুন করে তাকে পদায়ন করায় রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে জয়পুরহাট ও রংপুরে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে তীব্র আলোচনা চলছে। বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা তার বিরুদ্ধে অতীতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে পদায়নের সমালোচনা করেছেন।
জামায়াতে ইসলামীর জয়পুরহাট জেলা আমির ডা. ফজলুর রহমান সাঈদ বলেন, “২০১৩ সালের ঘটনায় হামিদুল আলমের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। তার বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত।”
তবে হামিদুল আলম তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে কোনো বক্তব্য দেননি। মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, নতুন কর্মস্থলে যোগদানের পর তিনি আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেবেন।