সাভার উপজেলা সাংবাদিক সমিতির আহ্বায়ক ও সাভারে কর্মরত সাংবাদিক সোহেল রানার ওপর হামলা চালিয়ে তাকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় হামলাকারী দু'জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রবিবার (২৫ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা। এর আগে, শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সাভার সিটি সেন্টারের পেছনে ইসলাম প্লাজার অপ্পো সার্ভিস সেন্টারের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, গাজীপুরের কাশিমপুর থানার চক্রবর্তী এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে আল মামুন ইমন (২৬) ও জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী থানার নরপাড়া গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে শাওন আহমেদ (২৫)। তারা দু'জনেই অপ্পো মোবাইলফোন কোম্পানির সাভার কাস্টমার সার্ভিস সেন্টারের কর্মী। তাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসী অজ্ঞাত আরো ২/৩ জন হামলাকারী পলাতক রয়েছে।
জানা গেছে, শনিবার বিকাল ৪টা ২৬ মিনিটে সাংবাদিক সোহেল রানা তার ব্যক্তিগত মোবাইলটি সার্ভিসিং করানোর জন্য সাভার সিটি সেন্টারের পেছনে ইসলাম প্লাজার দ্বিতীয় তলায় অপ্পো মোবাইল সার্ভিস সেন্টারে যান। এসময় সার্ভিস সেন্টারের কর্মীরা তার মোবাইলটি খোলে দেখেন। পরে সার্ভিসিং করার জন্য দুই সপ্তাহ সময় লাগবে বলে সার্ভিস সেন্টারের পক্ষ থেকে তাকে জানানো হয়। বেশিদিন সময় লাগবে বলে অনলাইনে অর্ডার করে আপাতত চলার জন্য বাহিরে মোবাইল সার্ভিসিং করার পরামর্শ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে পার্শ্ববর্তী নিউ মার্কেটে গেলে সেখানে তার মোবাইলে থাকা সিম কার্ডটি দেখতে না পেয়ে কিছুক্ষণ পর পুনরায় অপ্পো সার্ভিস সেন্টারে ফিরে আসেন। অপ্পো মোবাইল সার্ভিস সেন্টারে কর্মরত শাওন আহমেদ ও আল মামুন ইমন সিম কার্ডটি তাদের কাছে আছে বলে জানায়। তবে সিমটি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলে পরের দিন আসতে বলে। এসময় তাদের একটি মোবাইল নম্বর চেয়ে পরেরদিন আসতে চাইলে তারা দু'জন সাংবাদিক সোহেল রানার ওপর উত্তেজিত হয়ে উঠে। কথাবার্তার এক পর্যায়ে আল মামুন ইমন ও শাওন আহমেদ সহ তাদের অজ্ঞাতনামা সহযোগীরা মিলে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মাথায় কাঁচের গ্লাস দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। একপর্যায়ে পাশের সড়কে নিয়ে ব্যাপকভাবে পিটিয়ে আহত করে ফেলে রাখে। পরে স্থানীয় লোকজন সাংবাদিক সোহেল রানাকে উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
স্থানীয় সাংবাদিক ও সাভার উপজেলা সাংবাদিক সমিতির সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল নোমান জানান, আহত অবস্থায় সোহেল রানাকে উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার পর দায়িত্বরত চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিক তার মাথায় সিটি স্ক্যান, বুকে এক্সরেসহ চিকিৎসকের দেওয়া টেস্টগুলো করা হয়েছে এবং চিকিৎসা চলছে।
এই পরিস্থিতি নিয়ে তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষের কাছে দোষীদের দ্রুত বিচার এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন বিএমএসএফসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা। বিএমএসএফ সভাপতি আহমেদ আবু জাফর বলেন, সাংবাদিক সোহেল রানা পতিত সরকারের সময় অপ্রতিরোধ্য সংবাদ প্রকাশের জেরে একাধিকবার মামলা, হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এই সময়ে এসেও তার ওপর হামলা অগ্রহণযোগ্য।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা জানান, সাংবাদিক সোহেল রানার ওপর হামলার ঘটনায় দুজনকে আটক করে হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে ভুক্তভোগীর দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।