ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের শ্রেণিকক্ষ সংকট থাকায় ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের নিচতলায় শিক্ষক লাউঞ্জে ক্লাস করেছেন শিক্ষার্থীরা।
আজ শনিবার সকাল ৯টায় কক্ষটিতে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেন বিভাগের অধ্যাপক ড. হেলাল উদ্দিন। ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীরা কক্ষটিতে তালা ঝুলিয়ে দেন।
এর প্রতিবাদে কক্ষটি শিক্ষকদের জন্য ফেরত দেওয়ার দাবিতে সকাল ৯টায় লাউঞ্জের সামনে অবস্থান করেন ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এস এম আব্দুর রহিম। পাঁচ ঘন্টা পর দুপুর দুইটার দিকে শিক্ষক সমিতি সভাপতির আশ্বাসে তিনি কর্মসূচি থেকে বিরত থাকেন বলে জানান। তার দাবি আদায় না হলে তিনি আবারো অবস্থান করবেন বলে জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, বিভাগটির চলমান ছয়টি ব্যাচের জন্য দুইটি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। ফলে সেশনজটের কবলে পড়ছেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। কয়েক দফায় উপাচার্যের কাছে আবেদন জানালেও এই সংকটের সমাধান হয়নি। যার ফলে তারা শিক্ষক লাউঞ্জে ক্লাস শুরু করেছেন। সেখানে ক্লাস করতে গিয়ে ইইই বিভাগের শিক্ষক আবদুর রহিমের দ্বারা বিভাগের এক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ তাদের।
এছাড়া লাউঞ্জের গেটের সামনে ওই শিক্ষক এক প্যাকেট বেনসন ও এক ডজন কলা নিয়ে বসে ছিলেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা। এদিকে দুপুর সোয়া ২টার দিকে প্রক্টরের নেতৃত্বে প্রক্টরিয়াল বডি ও এস্টেট দফতর ওই কক্ষের তালা ভাঙতে গেলে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন। পরে তারা ঘটনাস্থল থেকে ফিরে আসেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উপাচার্যের বাসভবনে বিভাগটির সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে করছেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষক আবদুর রহিম বলেন, প্রতিদিনের মতো আজকে সকালে লাউঞ্জে নাস্তা করতে এসেছিলাম। পরে দেখি শিক্ষার্থীরা সেখানে ক্লাস করতে ঢুকছে। পরে তালা দিয়ে চলে গিয়েছে। শিক্ষক লাউঞ্জ একটা বিভাগ দখল করে নিবে কেন? এই ব্যাপারটি আমার আত্মসম্মানে লাগায় আমি প্রতিবাদস্বরূপ অবস্থান নিয়েছিলাম। শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেছি। দাবি বাস্তবায়ন না হলে আমি আবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবো।
বিভাগটির সভাপতি অধ্যাপক ড. শরিফ আল-রেজা বলেন, নতুন সেশন ভর্তি হওয়ার পর ছয়টি ব্যাচ চলামান। মাত্র দুইটা ক্লাস রুম থাকায় সংকটে ভুগছে শিক্ষার্থীরা। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কয়েকবার জানিয়েও ফল পাইনি। ফলে বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীরা হয়তো এই কাজ করেছে। আশা করি সংকটের বিষয়ে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন। এদিকে শিক্ষকের অবস্থানের বিষয়ে তিনি জানেন না বলে জানান।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, এটা সমাধান করার জন্য কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক সমিতির সভাপতি-সম্পাদক, সায়েন্স ফ্যাকাল্টির তিনজন ডিন নিয়ে কমিটি করা হয়েছে। তারা এখনো আমাদের রিপোর্ট দেয়নি। রিপোর্ট দিলে সমাধান হয়ে যাবে।
এবি/ওজি