দেশের বিভিন্ন এলাকায় সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আজ সোমবার (৩ জুন) সকাল থেকেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগ ছাড়া দেশের বাকি ছয় বিভাগে আজ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ গতকাল রোববারের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছেন, “মৌসুমি বায়ু এখন সক্রিয় থাকায় বৃষ্টি মোটামুটি হচ্ছে। তবে আগামীকাল মঙ্গলবার বৃষ্টির পরিমাণ আরও কমে যেতে পারে।” তিনি জানান, আজ সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বেশি থাকবে। এছাড়া ঢাকা, রংপুর, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু জায়গায়ও বৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে বৃষ্টির কারণে দেশের কয়েকটি নদ-নদীর পানি বেড়ে গেছে। বিশেষ করে ভারী বৃষ্টির ফলে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের পাঁচটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উত্তরের তিস্তা নদীর পানিও সতর্কসীমায় রয়েছে এবং তা বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ছে এবং যমুনার পানি এখন স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ফেনী—এই ছয় জেলার নদীসংলগ্ন এলাকায় বন্যার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে।
কেন্দ্রটির নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানান, “সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, খোয়াই ও হালদা নদীর সাতটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে।”
চলতি বছর স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অন্তত এক সপ্তাহ আগেই, ২৪ মে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এরপর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয় লঘুচাপ, যা ধীরে ধীরে গভীর নিম্নচাপে রূপ নেয় এবং দেশজুড়ে ব্যাপক বৃষ্টিপাত ঘটায়। সেই নিম্নচাপ এখন আর সক্রিয় না থাকলেও, তার প্রভাবে সক্রিয় রয়েছে মৌসুমি বায়ু।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল রাত থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত রাজধানী ঢাকায় তিন মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে সকাল ছয়টার পর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরও বেড়েছে, যার নির্দিষ্ট পরিমাণ এখনও নির্ধারিত হয়নি।
আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, মৌসুমি বায়ুর এই সক্রিয়তা আগামী কয়েকদিন স্থায়ী হতে পারে। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে, যা জনজীবনে সাময়িক দুর্ভোগের পাশাপাশি নদীভিত্তিক এলাকাগুলোতে বন্যার আশঙ্কাও তৈরি করছে।
আমার বার্তা/জেএইচ