ই-পেপার বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাজেটে লোকদেখানো প্রতিশ্রুতি নেই তবু প্রশ্ন অনেক

আমার বার্তা অনলাইন
০৩ জুন ২০২৫, ১৩:২৮

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট ঘোষণায় ছিল না কোনও রঙিন প্রতিশ্রুতি কিংবা উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের ঝলক। ‘উৎসব নয়, বাস্তবতা’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ২ জুন (সোমবার) বিকাল ৩টায় বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) প্রচারিত একটি ধারণকৃত বক্তৃতার মাধ্যমে বাজেটটি উপস্থাপন করা হয়।

এটি দেশের ৫৪তম বাজেট হলেও সংসদ-বহির্ভূত প্রথম বাজেট, যা ঘোষিত হলো সংসদ না থাকার প্রেক্ষাপটে। সকালেই প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বাজেট অনুমোদন পায় এবং পরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এতে সই করেন।

>> সংকোচনের বার্তা, ব্যয়ের লাগাম টানার ঘোষণা

প্রস্তাবিত বাজেটটি আগের অর্থবছরের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম, যা অর্থনৈতিক সংকোচনের স্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করে। বাজেট ঘাটতি নির্ধারণ করা হয়েছে জিডিপির ৩ দশমিক ৬ শতাংশে—গত এক দশকে যা সর্বনিম্ন। অর্থ উপদেষ্টা জানিয়েছেন, এখন সময় এসেছে ‘বেল্ট টাইটেনিং’-এর, অর্থাৎ সরকারি ব্যয়ে লাগাম টানার।

>> চাকরির অগ্রাধিকার, কর্মসংস্থান সর্বোচ্চ গুরুত্বে

বাজেটে এবার অনুপস্থিত ছিল মেগা প্রকল্পের ঘোষণা, বিশালাকার অবকাঠামো পরিকল্পনা কিংবা দ্বিগুণ প্রবৃদ্ধির স্বপ্ন। পরিবর্তে অগ্রাধিকার পেয়েছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থান। বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ঘোষিত ‘জিরো বেকারত্ব’ ভিশন, যার আলোকে কর্মসংস্থানে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।

>> সংসদ নয়, টেলিভিশনে বাজেট

দেশে কার্যকর সংসদ না থাকায় এবার সংসদের বাইরে বাজেট উপস্থাপনের বিরল নজির স্থাপন হলো। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারে বাজেট উপস্থাপনের পাশাপাশি বেসরকারি টিভি ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও তা সম্প্রচার করা হয়। বাজেট নিয়ে সংসদীয় আলোচনা না হলেও সাধারণ মানুষের মতামত গ্রহণ করে আগামী ২৩ জুন চূড়ান্ত বৈঠকে সংশোধিত বাজেট উপস্থাপন করা হবে। এরপর রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে তা কার্যকর হবে ১ জুলাই থেকে।

>> ঐতিহ্য ভেঙে ব্রিফকেসবিহীন বাজেট

বছরের পর বছর ধরে বাজেট মানেই ছিল অর্থমন্ত্রীর হাতে কালো ব্রিফকেস—এবার সেই প্রতীকী ঐতিহ্যেরও অবসান ঘটলো। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন কোনও ব্রিফকেস ছাড়াই সাধারণ পোশাকে বিটিভির স্টুডিও থেকে তার বক্তৃতা দেন, যা বাংলাদেশের বাজেট ইতিহাসে নতুন অধ্যায় রচনা করেছে।

>> ছোট আকার, কঠিন বাস্তবতা

সামষ্টিক অর্থনৈতিক চাপে এবারের বাজেট আকারে যেমন ছোট, তেমনি লক্ষ্য ও প্রক্ষেপণেও ছিল বাস্তবতার প্রতিফলন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেটের তুলনায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ৭ হাজার কোটি টাকা কমানো হয়েছে। এটি দেশের ইতিহাসে প্রথমবার, যখন একটি বাজেট তার পূর্ববর্তী বছরের চেয়ে ক্ষুদ্র পরিসরে উপস্থাপিত হলো।

এই বাজেট উপস্থাপনার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার সংকেত দিয়েছে—চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে লোক দেখানো প্রতিশ্রুতির নয়, বরং দায়িত্বশীল বাস্তবতার দিকেই তাদের অগ্রসরতা।

>> জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে বরাদ্দ

চলতি বাজেটে বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে ২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থান। শহীদ ও আহতদের স্মরণে এবং তাদের পরিবারের পুনর্বাসনে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪০৫ কোটি ২০ লাখ টাকা। এরই মধ্যে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদফতর’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং গণভবনকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ হিসেবে রূপান্তরের কাজ চলছে।

অর্থ উপদেষ্টা জানান, আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের পাশাপাশি ভাতা প্রদানের জন্য একটি নীতিমালা তৈরি করা হবে।

>> তারুণ্যের জন্য উৎসব ও তহবিল

যুব সমাজকে উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করতে আগামী অর্থবছরের বাজেটে ১০০ কোটি টাকার ‘তারুণ্যের উৎসব’ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য পৃথক একটি ১০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, “এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই” প্রতিপাদ্যে আয়োজিত তারুণ্যের উৎসব জাতীয়ভাবে উদযাপনের মাধ্যমে তরুণদের শক্তি ও সৃজনশীলতাকে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। একই সঙ্গে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী পরিবারের সদস্যদের জন্যও আত্মকর্মসংস্থান প্রকল্প বাস্তবায়নের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

>> বাজেটের অগ্রাধিকার খাত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষিত ‘জিরো বেকারত্ব’ নীতির আলোকে এবারের বাজেটে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা খাত। সামাজিক নিরাপত্তা জালকে আরও বিস্তৃত করার পাশাপাশি নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য সরাসরি সহায়তার আওতা বাড়ানো হয়েছে।

সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ: মোট প্রস্তাবিত বরাদ্দ ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। পেনশন বাদ দিলে বাস্তব বরাদ্দ দাঁড়ায় ৯১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা।

ভাতা বৃদ্ধির প্রস্তাব: বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী এবং মা-শিশু সহায়তা ভাতাসহ বিভিন্ন ভাতার হার ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর মাসিক ভাতা ৬৫০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব রয়েছে।

স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড: ৫৭ লাখ পরিবারকে টিসিবির মাধ্যমে ন্যায্য মূল্যে পণ্য সরবরাহের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি: মেয়াদ ৬ মাসে বাড়ানো হয়েছে এবং আরও ৫ লাখ পরিবারকে এতে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

>> বিশ্লেষকদের উদ্বেগ

তবে বাজেট ঘোষণার পরপরই বিশ্লেষক ও গবেষক মহল থেকে এসেছে বিভিন্ন প্রশ্ন ও সমালোচনা। সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, “কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আয়ের বৈষম্য হ্রাস, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি এবং সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার সম্প্রসারণ—এই চারটি বিষয়ে কোনও সুস্পষ্ট কৌশলগত রূপরেখা নেই। ফলে বাজেট কেবল প্রশাসনিক এক ঘোষণায় পরিণত হতে পারে।”

>> বাজেট বাস্তবধর্মী নয়, ভিশন ও পদক্ষেপে ফারাক

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) মনে করে, বাজেটের মূল দর্শন ‘বৈষম্যহীন সমাজ গঠন’ হলেও এতে বাস্তব পদক্ষেপের ঘাটতি রয়েছে।

>> কাঠামোগত দুর্বলতা

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, বাজেটে কিছু ভালো উদ্যোগ থাকলেও তা বিচ্ছিন্ন এবং সামগ্রিক কাঠামোয় কাঙ্ক্ষিত রূপান্তর ঘটেনি। পুরনো বাজেট কাঠামো ধরে রেখেই কিছু খাতে বরাদ্দ বাড়ানো ও কিছু কমানো হয়েছে। বৈষম্য হ্রাস বা সামাজিক ন্যায়ের দিকটি এড়িয়েই যাওয়া হয়েছে।

>> রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে উদ্বেগ

প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা— যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৯ শতাংশ বেশি। সিপিডি একে বাস্তবতাবর্জিত উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য হিসেবে দেখছে, বিশেষ করে যখন অর্থনীতি মূল্যস্ফীতি, স্থবির বিনিয়োগ এবং প্রবৃদ্ধির চাপে রয়েছে।

>> শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ হ্রাস

সিপিডি সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ জানিয়েছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ কমানো নিয়ে। তাদের মতে, একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত এই দুটি খাতে বেশি বিনিয়োগ। অথচ প্রস্তাবিত বাজেটে তার উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে।

>> কর কাঠামোতেও বৈষম্য

কর কাঠামোতে উচ্চবিত্তদের জন্য বিশেষ সুবিধা অব্যাহত রেখে মধ্য ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর চাপ বজায় রাখা হয়েছে। করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ লাখ টাকা করায় তাৎক্ষণিক স্বস্তি এলেও তা বাস্তব মূল্যস্ফীতির পরিপ্রেক্ষিতে অপ্রতুল।

>> কালো টাকা বৈধকরণের সুযোগ—অনৈতিক ও সংবিধানবিরোধী

বাজেটে আবারও কালো টাকা বৈধকরণের সুযোগ রাখা হয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এই সিদ্ধান্তকে আখ্যা দিয়েছে ‘অনৈতিক, বৈষম্যমূলক ও সংবিধানবিরোধী’।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “সরকার দুর্নীতিবিরোধী সংস্কারের অঙ্গীকার উপেক্ষা করে রিয়েল এস্টেট লবির কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।” সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, অনুপার্জিত আয় রাষ্ট্র কর্তৃক বৈধ হতে পারে না। অথচ এই সুযোগ সৎ করদাতাদের প্রতি অবিচার সৃষ্টি করছে এবং ভবিষ্যৎ দুর্নীতিকে উৎসাহ দিচ্ছে।

>> বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ নিয়ে নীরবতা

টিআইবি আরও বলছে, বাজেট বক্তৃতায় বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে কোনও সুনির্দিষ্ট অগ্রগতি বা পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়নি। মাত্র একটি বাক্যে ওই প্রসঙ্গ শেষ করা হয়েছে, যা অত্যন্ত হতাশাজনক।

বিবৃতিতে বলা হয়, “যেসব ব্যক্তি দেশ থেকে অর্থপাচার করে নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন, তাদের ওপর কর ও জরিমানার বিধান রাখা হলেও বাস্তবায়নের পদ্ধতি স্পষ্ট করা হয়নি।”

ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, “রাজস্ব আদায়ের জন্য ব্যবস্থাপনাগত পরিবর্তনের কথা বলা হলেও নীতি ও কৌশলগত স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, এবং আইনি কাঠামোর কোনও দিকনির্দেশনা বাজেটে পাওয়া যায়নি। এই ঘাটতি সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলে।”

টিআইবি দৃঢ়ভাবে বলেছে, সরকার যদি সত্যিকার অর্থে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে চায়, তবে কালো টাকা বৈধ করার যাবতীয় সুযোগ চিরতরে বন্ধ করতে হবে।

>> মধ্যবিত্তের জন্য দুঃসংবাদ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে নানা পরিকল্পনা এনেছে। তবে এতে মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য রয়েছে একাধিক দুঃসংবাদ। রাজস্ব আদায় ও দেশীয় শিল্প সুরক্ষার লক্ষ্য নিয়ে প্রস্তাবিত বাজেটে বেশকিছু ভোগ্যপণ্যের ওপর কর, শুল্ক ও ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে, যার ফলে বাজারে এসব পণ্যের দাম বাড়বে—প্রভাব পড়বে সাধারণ মধ্যবিত্তের দৈনন্দিন খরচে।

>> ফ্রিজ ও এসিতে বাড়তি ভ্যাট

শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ও ফ্রিজের ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বর্তমানে উৎপাদন পর্যায়ে ফ্রিজ ও এসির ওপর ৭.৫ শতাংশ হারে ভ্যাট থাকলেও তা দ্বিগুণ করে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। মাত্র ছয় মাস আগে এ খাতে করপোরেট কর দ্বিগুণ করা হয়েছিল, ফলে দেশীয় উৎপাদনকারীরাও পড়বেন চাপে।

>> রডের দাম বাড়লে নির্মাণ খরচও বাড়বে

গৃহনির্মাণের অন্যতম উপাদান রডের ওপর আমদানি ও উৎপাদন পর্যায়ে শুল্ক ও ভ্যাট বৃদ্ধির প্রস্তাব রাখা হয়েছে। আমদানিতে ২০-২৩ শতাংশ এবং উৎপাদনে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ভ্যাট বৃদ্ধির পরিকল্পনা থাকায় প্রতিটন রডের দাম ১ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে। এতে নির্মাণ খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাবে।

>> মোটরসাইকেল ও যন্ত্রাংশেও বাড়তি শুল্ক

জনপ্রিয় পরিবহন মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে শুল্ক ও ভ্যাট বাড়ানো হতে পারে। এর ফলে মোটরসাইকেল ও যন্ত্রাংশের দাম বাড়বে। দেশে ২০১৮ সালের পর ১০টির বেশি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়েছে, যা স্থানীয় চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

>> মোবাইল ফোনেও ভ্যাট বাড়ছে

দেশে উৎপাদিত ও সংযোজিত মোবাইল ফোনের ওপর ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব থাকায় মোবাইল ফোনের দাম বাড়তে পারে। মধ্যবিত্ত শ্রেণির অনেকেই দেশীয় ব্র্যান্ডের কমদামী ফোন ব্যবহার করে থাকেন, ফলে এই সিদ্ধান্ত তাদের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করবে।

>> কসমেটিকসে আমদানি মূল্য দ্বিগুণ

নারীদের সৌন্দর্যচর্চার কসমেটিকস পণ্যের ওপরও চাপ বাড়ছে। লিপস্টিক, আইলাইনার, মেকআপ সামগ্রী ইত্যাদির আমদানিতে ন্যূনতম মূল্য দ্বিগুণ করা হচ্ছে। যেমন—লিপস্টিকের ক্ষেত্রে এটি ২০ ডলার থেকে বাড়িয়ে ৪০ ডলার করার প্রস্তাব রয়েছে।

>> ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্যে দ্বিগুণ ভ্যাট

একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক কাপ, প্লেট, বাটি ইত্যাদির ওপর ভ্যাট দ্বিগুণ করে ১৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব রয়েছে। তবে পরিবেশবান্ধব পণ্যের ওপর কোনও ভ্যাট আরোপ না করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

>> সুতা ও দেশীয় পোশাকেও চাপ

দেশীয় কটন ও ম্যান-মেইড ফাইবারে তৈরি সুতার ওপর সুনির্দিষ্ট কর ৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ টাকা করার প্রস্তাব রয়েছে। ফলে গামছা, লুঙ্গি ও অন্যান্য সাধারণ পোশাকের দাম বাড়বে।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে স্বাগত জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এবং বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। তবে তারা বলেছে, বাজেট বাস্তবমুখী হলেও বিনিয়োগ ও রফতানি বাড়াতে আরও কাঙ্ক্ষিত সংস্কার প্রয়োজন।

ঢাকা চেম্বার বলেছে, ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানালেও বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনও দৃশ্যমান উদ্যোগ দেখা যায়নি। তারা বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংকনির্ভরতা বৃদ্ধিকে নেতিবাচক বলে মন্তব্য করেছে এবং করজাল সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজস্ব বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে।

>> ব্যক্তি শ্রেণির আয়কর নিয়ে হতাশা

সংগঠনটি বলছে, মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক সংকট বিবেচনায় করমুক্ত আয়ের সীমা অপরিবর্তিত রাখা হতাশাজনক। তারা করমুক্ত সীমা ৫ লাখ টাকা করার দাবি জানিয়েছে। এছাড়া আয়কর স্ল্যাবে পরিবর্তনের ফলে মধ্যবিত্ত ও চাকরিজীবীদের করের বোঝা বাড়বে বলে মন্তব্য করেছে। টার্নওভার কর ০.২৫% থেকে ১% করায় ব্যক্তিশ্রেণির করভার বাড়বে বলেও ডিসিসিআই উদ্বেগ জানিয়েছে।

অপরদিকে বিজিএমইএ বলেছে, বর্তমানে পোশাক শিল্প বহুমুখী চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক, ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল, ব্যাংক সুদের উচ্চ হার, মজুরি বৃদ্ধি এবং জ্বালানি দামের ওঠানামায় শিল্পটি চাপে রয়েছে। ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সময়েও এ শিল্পকে বিশেষভাবে সহায়তা প্রয়োজন।

সংগঠনটি মনে করে, সরাসরি ১ কোটি এবং পরোক্ষভাবে ৫ কোটি মানুষের জীবিকা এ খাতের ওপর নির্ভরশীল। তাই বাজেটে যেসব সুপারিশ প্রতিফলিত হয়নি, সেগুলোর পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে বিজিএমইএ।

আমার বার্তা/জেএইচ

ঈদের আগে তিন দিনেই এলো ৭৪০০ কো‌টি টাকার রেমিট্যান্স

আগামী শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহা। মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় এই উৎসবকে কেন্দ্র করে পশু কেনাকাটা, পরিবার-পরিজনের

শুধু পোশাক খাতই নয় সব আমদানিকারকের জন্য সমান সুযোগ চায় ডিসিসিআই

সম্প্রতি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জারি করা সার্কুলারে তৈরি পোশাক খাতের আমদানিকারকদের চট্টগ্রাম বন্দরে স্টোরেজ সময়সীমা অতিক্রান্ত

পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক মিলে হচ্ছে একটি ব্যাংক

এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকসহ শরিয়াহভিত্তিক পাঁচটি ব্যাংক নিয়ে গঠিত হচ্ছে ইসলামী ধারার একটি

হাটগুলোর প্রান্তিক গরুর তুলনায় ফার্মমুখী হচ্ছেন রাজধানীর ক্রেতারা

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জমে ওঠে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানের পশুর হাট। কিন্তু কয়েক বছর ধরে
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রংপুরের ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে ঈদের দিন সকাল ৮টা থেকে

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে মহাসড়কে র‌্যাবের টহল, চেকপোস্ট-তল্লাশি

ঈদের আগে তিন দিনেই এলো ৭৪০০ কো‌টি টাকার রেমিট্যান্স

শুধু পোশাক খাতই নয় সব আমদানিকারকের জন্য সমান সুযোগ চায় ডিসিসিআই

পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক মিলে হচ্ছে একটি ব্যাংক

যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বারো দেশের নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা

খালেদা জিয়ার গুলশানের বাড়ির নামজারির কাগজপত্র হস্তান্তর

সাভারে যানবাহনের চাপে ধীরগতির পর স্বস্তি ফিরেছে মহাসড়কে

হবিগঞ্জে চা শ্রমিকদের গাড়িতে না তোলায় চালককে পিটিয়ে হত্যা

ঈদযাত্রাকে নির্বিঘ্ন করতে গাবতলীতে অভিযান

হাটগুলোর প্রান্তিক গরুর তুলনায় ফার্মমুখী হচ্ছেন রাজধানীর ক্রেতারা

অভিবাসন ও প্রবাসী নীতিমালা সংক্রান্ত কমিটি গঠন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাসচাপায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

প্রিয়জনের সাথে ঈদ কাটাতে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছেন মানুষ

ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ২৩ কিলোমিটার জুড়ে যানজট

৫ জুন ঘটে যাওয়া নানান ঘটনা

সৌদিতে ভবন থেকে পড়ে বুড়িচংয়ের শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু

মানিকগঞ্জে অবাধে লুট হচ্ছে জমির টপ সয়েল, হুমকিতে কৃষি

হামজার হেড আর সোহেলের রকেটে সহজ জয় বাংলাদেশের

নারায়ণগঞ্জবাসীকে ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা