কিরগিজস্তানে বেআইনি অভিবাসন রোধে এবার বেশ কঠোর অবস্থান দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা। গত ১০ জুন থেকে দেশব্যাপী চলছে ‘অপারেশন ইলিগাল’ নামে বিশেষ অভিযান। এর আওতায় অবৈধভাবে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকদের চিহ্নিত করে তাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এর ফলে দেশটিতে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
কিরগিজস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা জানিয়েছে, এই অভিযান পরিচালনায় তারা অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা নিচ্ছে এবং সমন্বিতভাবে বিদেশিদের অবস্থান যাচাই করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
গত ১০ জুন থেকে ‘অপারেশন ইলিগাল’-এর আওতায় দেশজুড়ে অভিযান চালিয়ে বিদেশি নাগরিকদের বৈধ কাগজপত্র যাচাই করা হচ্ছে। দেশটির সরকার এক ঘোষণা জানায়, যারা কিরগিজস্তানে অবস্থান করছেন, তাদের বৈধ থাকার প্রমাণ দেখাতে হবে অথবা স্বেচ্ছায় দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিতে হবে। এই ঘোষনার পরও যারা বৈধভাবে থাকার প্রমান দেখাতে পারেন নি, তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।
এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে কিরগিজ সরকার ইতিমধ্যে প্রায় ৩২ লাখ মার্কিন ডলার বরাদ্দ করেছে। অভিযানের ফলে কিরগিজস্তানে অবস্থানরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের মধ্যে উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে যাদের বৈধ কাগজপত্র নেই বা শিক্ষার্থী ও পর্যটক ভিসায় এসে কর্মরত রয়েছেন, তাদের অনেকে আত্মগোপনে রয়েছেন।
দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা বলছেন, অভিযান শুরু হওয়ার পরপরই শত শত বাংলাদেশিকে আটক করে ডিটেনশন সেন্টারে নেয়া হয়েছে, তাদের অনেককে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। আটককৃতদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে বিশেষ বিমানেরও ব্যবস্থা করেছে দেশটি।
গত কয়েক মাসে কিরগিজস্তানে বিদেশিদের প্রবেশ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে, যা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার চেয়ারম্যান কামচিবেক তাশিয়েভ জানান, চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৬১ হাজার পর্যটক, ৩০ হাজার বিদেশি শিক্ষার্থী ও ১২ হাজার নিবন্ধিত শ্রমিক কিরগিজস্তানে এসেছেন।
তিনি আরও জানান, এছাড়া ১০ হাজার বিদেশি ধর্মীয়, পারিবারিক বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে প্রবেশ করেছেন। তবে আমাদের হিসেব অনুযায়ী, ৫ হাজারের বেশি অবৈধ অভিবাসী বর্তমানে দেশে অবস্থান করছেন।
তাশিয়েভ আরও বলেন, সহজ প্রবেশ প্রক্রিয়ার সুযোগ নিয়ে অনেকেই প্রকৃত উদ্দেশ্য গোপন করে কিরগিজস্তানে প্রবেশ করছেন। “শিক্ষা কিংবা পর্যটনের আড়ালে অনেকেই অবৈধভাবে কাজ করছেন, যা অভিবাসন আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, বলেন তিনি।
আমার বার্তা/এল/এমই