দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং অন্যান্য জরুরি জীবন রক্ষাকারী পণ্যের প্রবেশ বন্ধ করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী । ফলে গাজা উপত্যকায় চলছে মহাদুর্ভিক্ষ।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজা উপত্যকায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের মাঝে প্রতি পাঁচজনে একজন ফিলিস্তিনি এখন ক্ষুধার্তে মৃত্যুর মুখোমুখি।
ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিস) ইনিশিয়েটিভের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকা ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে। যুদ্ধে সেখানকার প্রায় ২১ লাখ মানুষের বিশাল একটি অংশ এখন চরম খাদ্যসংকটে ভুগছে। প্রতি পাঁচজনের একজন— অর্থাৎ প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ—ক্ষুধায় মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে আছে। গাজার প্রায় ৯৩ শতাংশ মানুষই তীব্র খাদ্য সংকটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং অন্যান্য জরুরি জীবন রক্ষাকারী পণ্যের প্রবেশ বন্ধ করেছে।
গাজায় সেই সব ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের মুখে খাবার তুলে দিতে কাজ করছে বাংলাদেশি বিভিন্ন মানবিক সংস্থা। মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মানবিক সংস্থা ইউথ ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের সহায়তায় বাংলাদেশের মানবিক সংস্থা ‘মাই ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন’ এবং বাংলাদেশি দাতব্য সংস্থা ‘এইচএমবিডি ফাউন্ডেশন’ মিলে ফিলিস্তিনের যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজায় ১০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি পরিবারের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে রান্না করা খাদ্য।
মিশরে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মানবিক সংস্থা ‘ইউথ ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন’ এর চেয়ারম্যান মো. হাফিজুল ইসলাম সাকিব জানান, কিছুদিন আগে যুদ্ধবিরতি উঠে যাওয়ায় গাজার সঙ্গে মিশরের সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার পর ত্রাণ সামগ্রী গাজায় পৌঁছানো বন্ধ হয়ে যায়। এই সময়ে সেখানে তীব্র খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা যায় এবং বর্তমানে বহু মানুষ এবং শিশু খাদ্য অভাবে মারা যাচ্ছে, আমাদের গাজার স্বেচ্ছাসেবকরা।
এসব তথ্য আমাদের দিলে আমরা তাদের সাহায্য করার উদ্যোগ নেই এবং প্রায় একশোও বেশি ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনি পরিবারের কাছে গাজার একটি মানবিক সংস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশিদের দেওয়া খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছি। এছাড়াও গাজায় অবস্থিত আমাদের সেন্ট্রাল কিচেন থেকে রান্না করা খাবার সরবরাহ করছে তিনশতের বেশি ক্ষুধার্তদের মাঝে।
তিনি বলেন, আমরা এর আগে হাজার হাজার লিটার বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করেছি, যা ৫শতেরও বেশি পরিবারের মাঝে বণ্টন করা হয়। এছাড়াও আমরা গৃহহীন মানুষদের জন্য অস্থায়ী তাঁবু এবং মসজিদ নির্মাণ করেছি, গাজায় গৃহহীন পরিবারের মাঝে সাময়িক বাসস্থানের জন্য তাঁবু দিয়ে ঘর তৈরি করে দিয়েছি। কায়রোর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যুদ্ধাহত ফিলিস্তিনি ভাই ও তাদের পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা সহায়তা করে আসছি। ফিলিস্তিনিদের জন্য আমাদের এই সহযোগিতা চলমান থাকবে।
আমার বার্তা/এল/এমই