ফরেস্ট গার্ড জিয়াউল হক চৌধুরী। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন বিভাগের পোমরা চেক পোস্টে কর্মরত রয়েছেন। গত ২০ বছর যাবত আছে এক দপ্তরেই। তার বিরুদ্ধে বন উজাড়সহ রয়েছে নানা অভিযোগ। তিনি শুধু নিজেই বন উজাড় করে ক্ষান্ত হননি। তার বিরুদ্ধে রয়েছে বন ধ্বংসকারী চক্রদের রক্ষা, সরকারি ফাইল গায়েবসহ বিভিন্ন অভিযোগ। এ ব্যাপারে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে রয়েছে একাধিক লিখিত অভিযোগ। তারপরও একটানা ২০ বছর বহাল তবিয়তে রয়েছেন তার পছন্দমত চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগে।
জানা গেছে, ২০০৫ সালে বিএনপি শাসন আমলে একজন প্রতিমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপে কোনো প্রকার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চাকরি হয় জিয়ার। এরপর ভোল পাল্টে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন নানা অপকর্ম। চাকরির শুরু থেকে গত বছর জানুয়ারি পর্যন্ত ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগে। বর্তমানে একই বন অঞ্চলের দক্ষিণ বন বিভাগে রয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারি গাছ বিক্রি করেই ক্ষান্ত হননি তিনি। চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের সহকারী বন মামলা পরিচালক হিসাবে পোস্টিং নিয়ে সরকার ও বন বিভাগের ব্যাপক ক্ষতি করেছেন জিয়াউল হক চৌধুরী। অভিযুক্তদের কাছে সুবিধা নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে থাকা বন বিভাগের বিভিন্ন নথি গায়েব করে ফেলেন। এতে করে ডকুমেন্টেসের অভাবে ছাড়া পেয়ে যান অভিযুক্তরা। এছাড়াও করের হাট চেক স্টেশন এলাকায় বদলি হয়ে ব্যাপক দুর্নীতি শুরু করেন। এই যায়গাকে বলা হয় চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের নাভি। রক্ষক হয়ে নিজেই সরকারি গাছ বিক্রি করে উজাড় করেছেন। তার অনৈতিক কাজে বাঁধা দেয়ায় একজন ফরেস্টারের গায়ে হাত তুলতে দ্বিধা করেননি। যদিও ওই ফরেস্টার লোক লজ্জার ভয়ে লিখিত অভিযোগ না দিয়ে বিভাগীয় কর্মকর্তাকে মৌখিক অভিযোগ দিয়ে চলে যান। চট্টগ্রামে বাড়ি হওয়ায় বাইরের জেলা থেকে আসা প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছ থেকে চাঁদাবাজি করেন জিয়া। তাকে চাঁদা না দিলে তার স্থানীয় লোকজন দিয়ে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি শুরু করেন। যাতে ওই কর্মকর্তা বেশিদিন জিয়ার এলাকায় টিকতে পারেনা।
ন্যাড়া পাহাড় নামে একটি প্রকল্পে তার চাকুরি হয়, মন্দাকিনী বিটে চাকরি করাকালীন সময়ে জিয়া এতো বেশি অপকর্মের সাথে জড়িত হয় যে স্থানীয় লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে তার ব্যক্তিগত মোটর সাইকেল আটকে রাখেন। পরে বড় ধরনের সমস্যার আশঙ্কায় ডিপার্টমেন্টের শৃংখলা রক্ষার স্বার্থে তাকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগে বদলি করা হয়। সেখানে এক বছর না যেতেই বিধিবিধানের তোয়াক্কা না করে লোভনীয় জায়গায় বদলি হতে কর্মকর্তাদের চাপ দিতে শুরু করেন। কিন্তু সেই চাপ গ্রহণ না করায় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাতে শুরু করে।
এ ব্যপারে জানতে জিয়াউল হকের মোবাইলে একাধিকবার যোগোযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি তার ফোনে এসএমএস করা হলেও কোনো উত্তর দেননি।