
নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম বন্দর কাউকে দেওয়া হচ্ছে না, ব্যবস্থাপনায় অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে এ বন্দর ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমি একটি ক্রেডিট নিতে চাই।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিস) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। ‘সমুদ্র অর্থনীতিতে যাত্রা: সমুদ্র সম্পদ ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে বিস।
সেমিনারে উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেনকে প্রশ্ন করা হয়, চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি ব্যবস্থাপনায় দিয়ে দেওয়ার জন্য এত তাড়াহুড়ো কেন। পরবর্তী সরকার এসেও কাজটি করতে পারবে এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কাউকে দেওয়া হচ্ছে না, ব্যবস্থাপনায় অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হবে। ডিসেম্বর লক্ষ্য ধরে অনেকগুলো ধাপ ও অনেকগুলো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে সরকার। গত ১৭ বছরে এসব নিয়ে কেউ কথা বলেনি। বন্দর কাউকে দিয়ে দেওয়া যায় না। ব্যবস্থাপনা দিয়ে দেওয়া যায়। এ নিয়ে আমি একটি ক্রেডিট নিতে চাই। তা না হলে পরে বলবেন, এক বছরে কিছু করেননি।
তিনি বলেন, জাতি হিসেবে আমরা অত্যন্ত নোংরা। বিদেশে গেলে ময়লা পকেটে রাখেন। আর দেশে এলে এর উল্টো। এখানে লঞ্চের ময়লা পানিতে ফেলে। সদর ঘাটে যান, গিয়ে দেখেন ময়লা সব নদীতে। আর এসব ময়লা গিয়ে পড়ছে সাগরে। আমাদের এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য দেন বিস এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিস। সমাপনী বক্তব্য রাখেন বিস-এর গবেষণা পরিচালক ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।
সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কমোডর শেখ মাহমুদুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. লাইলুফার ইয়াসমিন এবং বিস এর গবেষণা ফেলো মৌটুসী ইসলাম।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং ক্রমশ ভূমি সম্পদ কমছে, যা জাতিকে তার সামুদ্রিক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বাধ্য করছে। বঙ্গোপসাগর নিয়ে এ প্রচেষ্টার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে কেবল তার সমৃদ্ধ সামুদ্রিক সম্পদের জন্যই নয় বরং এর কৌশলগত অবস্থানের জন্যও, কারণ বাংলাদেশের ৯০ শতাংশেরও বেশি বাণিজ্য সমুদ্রপথ দিয়ে পরিচালিত হয়। সামুদ্রিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য সমুদ্র-ভিত্তিক সুযোগ সর্বাধিক করার প্রয়োজনীয়তাকে আরও জোরদার করেছে।
তারা উল্লেখ করেন, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, সমপ্রদায়ের সম্পৃক্ততা এবং নীতি সমন্বয়ের সঙ্গে টেকসই অনুশীলনগুলোকে একীভূত করে, বাংলাদেশ দারিদ্র্য হ্রাস, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতি স্থিতিস্থাপকতা জোরদার, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমুদ্র সম্পদকে কাজে লাগাতে পারে।
তারা মতামত দেন যে কার্যকর সমন্বিত সমুদ্র ব্যবস্থাপনার জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বঙ্গোপসাগরের সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র এবং সম্পদ জাতীয় সীমানা অতিক্রম করে। চুক্তি, জ্ঞান বিনিময় এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগের মাধ্যমে আঞ্চলিক অংশীদারিত্ব জোরদার নিশ্চিত করে যে সমুদ্র সম্পদগুলো দক্ষতার সঙ্গে, ন্যায়সঙ্গতভাবে এবং টেকসইভাবে এ অঞ্চলের সব দেশের সুবিধার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
সেমিনারে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, কূটনৈতিক মিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, মিডিয়া, গবেষক, শিক্ষাবিদ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
আমার বার্তা/এমই

