
অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, গত ১৫ মাস ধরে কাজ করছি। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে, আমরা আরও দুই-তিন মাস আছি। জাতি মূল্যায়ন করবে আমরা কী করতে পেরেছি, কী করতে পারিনি।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে দৈনিক নয়াদিগন্তের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
খালিদ হোসেন বলেন, ‘আমি একেবারে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। বলা হচ্ছে যে উপদেষ্টারা সেফ এক্সিট (নিরাপদ প্রস্থান) চান। সেফ এক্সিট তো আমার প্রয়োজনই নেই। দ্বিতীয় আরেকটা কথা বলি- ফাওজুল কবির খান সাহেব, আমাদের সম্মানিত সহকর্মী, উনি বলেছেন এটা অর্ডিন্যান্স করা প্রয়োজন। আজ যারা ২২/২৩ জন (উপদেষ্টা) আছি, এটা অর্ডিন্যান্স করে দিলে নেক্সট ইলেক্টেড গভর্নমেন্টে আমরা টেকনোক্র্যাট হিসেবে মন্ত্রিত্ব নেব না। এ রকম যদি একটা অর্ডিন্যান্স সরকার করতে পারে, এটা বেশি ভালো হয়।’
তিনি বলেন, ‘বারবার রাজনৈতিক নেতারা প্রধান উপদেষ্টার কাছে বলছেন- দুই-চার-পাঁচজন উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ মেইনটেইন করে আগামী সরকারে থাকতে চান। আমি আপনাদের বলি আগামী সরকারে যদি আমাকে ইনভাইট করে, সম্মান জানায়। আমি তাদের প্রতি যথার্থ সম্মান জানিয়ে কেবিনেটের অংশ হব না। কোন গভর্নমেন্ট ক্ষমতায় আসবে, জানি না। যারাই আসুক তারা যদি আমাকে সম্মান জানিয়ে ইনভাইট করে- যে আপনি টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে আসেন, আমি যাবো না।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি আমার মন্ত্রণালয় থেকে কোটি কোটি টাকা মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, প্যাগোডা, শ্মশান, মন্দির, চার্চেস সেমিটারিসে আমি দিয়ে থাকি, এই টাকা কোত্থেকে আসে? এটা গভর্নমেন্ট ফান্ড, গভর্নমেন্ট অ্যালোকেশন। গভর্নমেন্টের টাকা কোথায় থাকে- সোনালী ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকে। ওখান থেকে আন্ডা-বাচ্চা বের হয়, ইন্টারেস্ট যদি আসে এগুলো আমরা বিতরণ করি। তো আপনি শরিয়ত পাবেন কোথায়? এটা তো শরিয়া নয়, এটাতো ইসলামিক স্টেট নয়। এটা কমপ্লিটলি সেক্যুলার স্টেট, লিগেছি ফ্রম দ্য ব্রিটিশ রেজিম। একটা কাঠামো, একটা কাঠামোর ভিতরে দেশ চলে আসছে।’
তিনি বলেন, ‘শরিয়ত আমরা ব্যক্তিগতভাবে পালন করি। আপনি মন্দিরে যাবেন কি না, ইট ইজ আপ টু ইউ। আমি যতদিন দায়িত্বে থাকবো যাওয়াটা আমার রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে আমরা ঘরে চলে যাবো। তখন আমি মন্দিরে যাবো না, তখন এটা আমার ডিউটি নয়।’
“আমি চট্টগ্রাম থেকে এই মাত্র আসলাম, ‘কঠিন চীবরদান’ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে গেছি। এই যে পারস্পরিক সম্প্রীতি-সৌহার্দ্য, এটা বহাল না থাকলে রাষ্ট্র অগ্রগতি লাভ করতে পারে না।”
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘ফেসবুকে কত কথা লিখছে। এর ভিতরে একটা কথা লিখলো- আমি মারা গেছি, রেস্ট ইন পিস- সীমা থাকা উচিত। মানুষ মনে করছে, আসলে আমি মারা গেছি। আমি মারা যাবো তো একদিন।’
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, আমরা ১৫ মাস কাজ করেছি। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে আমরা আরও দুই-তিন মাস আছি। জাতি মূল্যায়ন করবে আমরা কী করতে পেরেছি, কী করতে পারিনি। আমি এক টাকার দুর্নীতি করিনি। সাড়ে আট কোটি টাকা আমি হাজিদের ফেরত দিয়েছি। এজেন্সির ৩৯ কোটি টাকা সৌদি আরবে ছিল, এগুলো এনে এজেন্সির মধ্যে বিতরণ করে দিয়েছি। তবে ১৬/১৭ বছরের জঞ্জাল দেড় বছরের ভিতরে পরিষ্কার করা যায় না। উই আর ট্রাইং হার্ড। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি আন্তরিকভাবে।
আমার বার্তা/জেএইচ

