আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের একটি পূর্ণাঙ্গ প্যানেল গঠনের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইসির উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেনের স্বাক্ষরে সম্প্রতি সব জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং পোলিং অফিসারদের প্যানেল প্রস্তুত করে কমিশন সচিবালয়ে জমা দিতে হবে।
এজন্য জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে শ্রেণি বা গ্রেডভিত্তিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তালিকা সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। এই তালিকার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্টদের মধ্য থেকে ভোটগ্রহণের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিদের নির্বাচন করে প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
প্যানেলে কারা অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন, সে বিষয়েও চিঠিতে বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা, ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষক, রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংক ও বীমা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বা সহকারী প্রধান শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা, কলেজ ও মাদরাসার ডেমনস্ট্রেটর, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের। পোলিং অফিসার হিসেবে বিবেচনায় আসবে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
তবে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, জাতীয় বেতন স্কেলের ১৭ থেকে ২০ গ্রেডের (চতুর্থ শ্রেণি) কোনো কর্মচারীকে মূল প্যানেলে রাখা যাবে না। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী প্রিজাইডিং অফিসারদের সহায়কের তালিকা আলাদাভাবে তৈরি করা যেতে পারে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, প্যানেল তৈরির সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সততা, দক্ষতা, সাহসিকতা, নিরপেক্ষতা, পদমর্যাদা, জ্যেষ্ঠতা ও পেশাগত কর্মদক্ষতা বিবেচনায় নিতে হবে। বিতর্কিত ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত কাউকে প্যানেলে রাখা যাবে না। প্রয়োজনে কর্মকর্তাদের বয়স, শারীরিক সক্ষমতা ও মানসিক অবস্থার বিষয়েও যাচাই করে তালিকায় উল্লেখ করতে হবে।
নারী ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে নির্বাচন কমিশন পর্যাপ্ত সংখ্যক মহিলা সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার রাখার নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা নয়, বরং তাদের পাশাপাশি আরও ১০ শতাংশ অতিরিক্ত কর্মকর্তা তালিকাভুক্ত করার নির্দেশও রয়েছে। এ ছাড়া শুধু ভোটগ্রহণ নয়, রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়, নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, নির্বাচনি তথ্য ও ফলাফল সংগ্রহ কেন্দ্র, মাঠ পর্যবেক্ষণসহ বিভিন্ন সহায়ক দায়িত্ব পালনের জন্য আলাদা একটি প্যানেল তৈরির কথাও চিঠিতে বলা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন বলেছে, সব শর্ত পূরণ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল কমিশন সচিবালয়ে জমা দিতে হবে। সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে এ বিষয়ে কোনো ধরনের গাফিলতি বরদাশত করা হবে না বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে।
আমার বার্তা/এমই