বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর পরীক্ষাক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, প্রকৃতির কাছ থেকে আমাদের এবং কৃষকের কাছ থেকে কৃষিকে সরাতে এসব কাজ করা হচ্ছে। গোল্ডেন রাইস প্রবর্তনের চেষ্টা অনেক দিন ধরে চলে আসছে। আর জেনেটিক্যালি মডিফাইড বেগুন ৩টি দেশে অনুমোদন চেয়েছে বহুজাতিক কোম্পানি। দেশগুলো হলো- ভারত, ফিলিপাইন ও বাংলাদেশ। ভারত অনুমোদন দেয়নি কিন্তু বাংলাদেশ অনুমোদন দিয়েছে। এখন বহুজাতিক কোম্পানি গোল্ডেন রাইসের অনুমতি চাচ্ছে। রাজনৈতিক অর্থনৈতিক চিন্তা করে প্রকৃতির প্রতি অত্যাচার করা হচ্ছে।
সোমবার (৬ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জি এম শস্য গোল্ডেন রাইস এবং বিটি বেগুন: বাংলাদেশে প্রবর্তনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রশ্নের নিরসন জরুরি শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বেসরকারি সংস্থা উবিনীগের (উন্নয়ন বিকল্পের নীতিনির্ধারণী গবেষণা) নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার বলেন, জিএম ফসল হিসেবে গোল্ডেন রাইসের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সংক্রান্ত ঝুঁকি, কার্যকারিতা এবং এই ধানের আদৌ কোন প্রয়োজনীয়তা আছে কি না এই সব প্রশ্নের উত্তর এখনো পাওয়া যায়নি। আমরা পরিবেশ মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যে তারা সময় নিয়ে এর নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করছেন এবং এখনও অনুমোদন দেননি। কিন্তু কোম্পানি এবং উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে তাড়া দেওয়া হচ্ছে। তারা সরাসরি সরকারের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে চাইছেন।
তিনি আরও বলেন, গোল্ডেন রাইস সারা বিশ্বে বিতর্কিত। ফিলিপাইনে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলা হলেও এখন তা বাতিল করা হয়েছে এবং এর বিরুদ্ধে ফিলিপিনো কৃষকরা ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলেছেন। কাজেই ফিলিপাইনের উদাহরণ দিয়ে বাংলাদেশে অনুমোদন দেওয়ার কোন অর্থ নাই। বাংলাদেশের অধিকাংশ কৃষক ব্রি ২৯ চাষ করেন। সেখানে কোন পেটেন্ট নাই। কৃষক এর বীজ নিজেই রাখে কিংবা বাজার থেকে কিনে নেয়। স্বাধীনভাবে তারা এই ধান চাষ করতে পারে। তাহলে এই ধানের স্বত্ত্ব বিদেশি কোম্পানির হাতে চলে গেলে বাংলাদেশের লাখ কোটি কৃষকের ভাগ্যে কি ঘটবে? এই প্রশ্নের জবাব কৃষি মন্ত্রণালয়কে অবশ্যই দিতে হবে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের কাজ বাংলাদেশের কৃষি এবং কৃষকের স্বার্থ দেখা, কোম্পানির স্বার্থ নয়।
আমার বার্তা/এমই