পর্যটন নির্ভর সেন্টমার্টিনে নভেম্বর-ডিসেম্বর দু’মাস পর্যটকদের রাত্রিযাপন নিষেধাজ্ঞায় পুরো বছরের জীবিকা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। আগে যেখানে ৫-৬ মাসের আয় দিয়ে পর্যটন ব্যবসায়ীরা পুরো বছর চলতেন এখন সেখানে দু’মাস পর্যটকরা রাত্রিযাপন না করলে ব্যবসায়ীদের আয় আরও কমবে। এতে দ্বীপের অর্থনীতিতে ধস নামবে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।
স্থানীয়রা জানান, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন তার প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের জন্য বহুদিন ধরেই ভ্রমণ পিপাসুদের পছন্দের তালিকায়। কিন্তু দুই বছর আগে বাংলাদেশ-মিয়ানমার রাখাইন সীমান্তে সংঘাতের পর টেকনাফ দমদমিয়া থেকে সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে বিকল্প হিসেবে কক্সবাজারের নুনিয়া ছড়া অথবা উখিয়ার ইনানী থেকে জাহাজ চলাচল শুরু হলেও এতে পর্যটকদের যাতায়াতে সময় বেড়ে যায়।
টেকনাফ দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে সকাল ৯টায় রওনা দিলে পর্যটকরা বেলা ১১টা বা দুপুরের মধ্যে দ্বীপে পৌঁছে ৫ ঘণ্টা ঘুরে ফিরে আসতে পারতেন, আবার অনেকে রাত্রিযাপন করতেন। কিন্তু ইনানী বা নুনিয়া ছড়া থেকে সকালে রওনা দিলে বিকেলে দ্বীপে পৌঁছে পর্যটকরা আধা ঘণ্টাও ঘুরতে পারেন না। রাত্রিযাপনই একমাত্র সমাধান, যাতে তারা দ্বীপের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।
এরমধ্যে নভেম্বর ও ডিসেম্বর হলো পর্যটন মৌসুমের আসল সময়। যদি পর্যটকরা সেন্টমার্টিনে অন্তত ৪-৫ ঘণ্টা অবস্থান বা রাত্রিযাপন করতে না পারেন, তাহলে হোটেল, রিসোর্ট, শুঁটকি ও কাঁচা মাছ ব্যবসায়ী, ডাব বিক্রেতা, ভ্যান ও অটোরিকশাচালক, ইজিবাইক চালক, শ্রমিকসহ পর্যটন নির্ভর মানুষের বড় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তারা আরও জানান, সরকারের নতুন নিয়মে নভেম্বর ও ডিসেম্বর ২ মাস পর্যটক এলেও রাতে থাকতে পারবে না। এছাড়া দিনে সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক যাওয়ার অনুমতি থাকবে। আগে যেখানে ৫-৬ মাসের পর্যটন ব্যবসায় দ্বীপবাসী সারা বছরের খরচ জোগাতে হিমশিম খেতেন, এখন দিনে দুই হাজার পর্যটক এলেও যদি রাত্রিযাপন করতে না পারে, তাহলে সেন্টমার্টিনবাসীর অর্থনীতি ধসে পড়বে।
তারা দাবি করেন, টেকনাফ দমদমিয়া ঘাট থেকে পুনরায় জাহাজ চলাচল শুরু করতে হবে এবং পর্যটকদের রাত্রিযাপনের অনুমতি দিতে হবে। এ দুটি উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নির্ভর প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষের দুঃখ-কষ্ট দূর হবে এবং দ্বীপের অর্থনীতি আবারো ঘুরে দাঁড়াবে এবং স্বাভাবিক হবে।
সেন্টমার্টিনে পর্যটক থাকতে দু’মাসের নিষেধাজ্ঞায় বছরজুড়ে অনিশ্চয়তা।
আমার বার্তা/এল/এমই