জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এস এম আনোয়ারা বেগমের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় গত বৃহস্পতিবার তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। ষাটোর্ধ্ব অধ্যাপক আনোয়ারাকে কারাগারে পাঠানোর নিন্দা জানিয়ে গতকাল রোববার বিবৃতি দিয়েছিল মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি)।
সোমবার (০২ জুন) অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমের জামিন চেয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। শুনানি নিয়ে সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন। আনোয়ারা বেগমের আইনজীবী ওবায়দুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জামিন আবেদনে উল্লেখ করা হয়, অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমের বয়স ৭০ বছর। তিনি ৩৫ বছর ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। অবসরপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক একজন নারী। তিনি অসুস্থ। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী, তিনি জামিন পাওয়ার হকদার।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য রাখা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত ৫০০ টাকা মুচলেকায় অধ্যাপক আনোয়ারার জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতে আনোয়ারা বেগমের পক্ষে জামিন শুনানি করেন তাঁর আইনজীবী ওবায়দুল ইসলাম।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার দায়ের করা হত্যাচেষ্টার মামলায় গত বুধবার আনোয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। আনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে ওই মামলা হয় রাজধানীর সূত্রাপুর থানায়। সূত্রাপুর থানা পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়, গত বছরের ১৯ জুলাই রায়সাহেব বাজারের কাছে স্টার হোটেলের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আন্দোলনকারী ও ছাত্রদলের নেতা–কর্মীদের উদ্দেশ করে গুলি চালানো হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ প্ররোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ ঘটনা ঘটান। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার চোখে গুলি লাগে। বাঁ চোখ দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। এ ঘটনায় সুজন মোল্লা বাদী হয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সূত্রাপুর থানায় এ মামলা করেন।
আনোয়ারা বেগম একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদস্য ছিলেন।
আমার বার্তা/এমই