প্রযুক্তির দ্রুত বিবর্তনের এই সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই নিয়ে মানুষের আগ্রহ যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে এই প্রযুক্তির পরিধি ও ব্যবহারযোগ্যতা। ঠিক সেই মুহূর্তে এক বড় মাইলফলক স্পর্শ করল মার্ক জুকারবার্গের মালিকানাধীন মেটা এআই।
প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক শেয়ারহোল্ডার সভায় মেটা সিইও মার্ক জাকারবার্গ জানিয়েছেন, তাদের এআই অ্যাসিস্ট্যান্টের মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা পেরিয়ে গেছে একশো কোটির ঘর। গত বছর সেপ্টেম্বরে যেখানে এই সংখ্যা ছিল প্রায় ৫০ কোটি, মাত্র কয়েক মাসেই তা দ্বিগুণ হয়েছে।
২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম উন্মোচন করা হয় “মেটা এআই”। এরপর ধীরে ধীরে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জার ও ওয়েব প্লাটফর্মে একে সংযুক্ত করে মেটা। ব্যবহারকারীরা তাদের দৈনন্দিন কাজ, প্রশ্নোত্তর, কনটেন্ট সাজেশন, এমনকি রেস্তোরাঁ খোঁজার মতো কাজেও মেটা এআই ব্যবহার করতে শুরু করে।
তবে ব্যবহারকারীর সংখ্যায় সবচেয়ে বড় ঝাঁপ দেখা যায় ২০২৪ সালের জুনে, যখন মেটা এআই ভারতের বাজারে উন্মুক্ত হয়। বিশাল জনসংখ্যার দেশ ভারতের হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীরাই হয়ে ওঠে এই প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় গ্রাহক।
প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের মতো বাজারে সহজলভ্য হওয়ায় এবং স্থানীয় ভাষা ও প্রাসঙ্গিক প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম হওয়ায় খুব অল্প সময়েই মেটা এআই মানুষের নিত্যদিনের অংশ হয়ে যায়।
এত দিন পর্যন্ত এটি মেটার বিভিন্ন অ্যাপে সংযুক্ত থাকলেও, সম্প্রতি একটি স্বতন্ত্র ‘মেটা এআই’ অ্যাপ চালু করা হয়েছে। এতে করে ব্যবহারকারীরা সরাসরি অ্যাপ খুলেই মেটা এআই-কে ব্যবহার করতে পারবেন।
মার্ক জুকারবার্গ জানিয়েছেন, মেটা এআই থেকে এখনই আয় করা তাদের প্রধান লক্ষ্য নয়। বরং তারা চান, এটি আরও উন্নত, ব্যক্তিকেন্দ্রিক ও বিশ্বস্ত ডিজিটাল সহকারী হয়ে উঠুক।
তবে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে রয়েছে পেইড ফিচার ও সাবস্ক্রিপশন সার্ভিস চালুর ইঙ্গিত। হয়তো ব্যবহারকারীরা ভবিষ্যতে নির্দিষ্ট কিছু অতিরিক্ত সুবিধা পেতে চাইলে তার জন্য অর্থ পরিশোধ করতে হবে—এমন ব্যবস্থাও দেখা যেতে পারে।
সাধারণ ব্যবহারকারীরা বলছেন, মেটা এআই-এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এটি মেসেজিং অ্যাপের মধ্যেই ব্যবহার করা যায়। আলাদা কোনো লগইন বা সেটআপ ঝামেলা ছাড়াই ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বা হোয়াটসঅ্যাপে থেকেই ব্যবহার করা যায় এআই সেবা।
বিশেষ করে যারা ভ্রমণ করেন, পড়াশোনা করেন, বা কনটেন্ট তৈরি করেন—তাদের জন্য এটি দারুণ সহায়ক হয়ে উঠছে।
আমার বার্তা/জেএইচ