পাকিস্তানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক নারী ও এক পুরুষকে গুলি করে হত্যার একটি ভিডিও প্রকাশের পর ১১ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরিবারের ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে করায় তাদেরকে হত্যা করা হয় বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (২১ জুলাই) রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।
হত্যাকাণ্ডের শিকার ওই দম্পতির নাম পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। গত মাসে পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিম বেলুচিস্তান প্রদেশে স্থানীয় উপজাতি পরিষদের নির্দেশে এই দম্পতিকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর তদন্তকারী প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি জানিয়েছে।
সোমবার এক বিবৃতিতে প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি বলেন, ভিডিওতে থাকা স্থান এবং ব্যক্তিদের শনাক্ত করার ঘোষণা দেয়ার কয়েক ঘন্টা পর এগারো সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়।
জড়িত সকলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে বুগতি জানান। এরপর তাদের বিচার করা হবে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।
ভিডিওটিতে মরুভূমিতে কয়েকজন লোক এবং কয়েকটি পিকআপ ট্রাক দেখা গেছে।
এছাড়া ভিডিওতে আরও দেখা যায়, নারীটিকে মুসলিমদের পবিত্র গ্রন্থ কোরানের একটি কপি দেয়া হয়। তারপর সে একজন পুরুষকে বলে, ‘আমার সাথে সাত কদম হেঁটে এসো, তারপর তুমি আমাকে গুলি করতে পারো।’ লোকটি তারপর কয়েক কদম তার পিছু পিছু চলে।
স্থানীয় একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নারীটি এ সময় কাঁদেননি বা জীবন ভিক্ষা চাননি।
ওই নারী আরও বলেন, ‘তোমাকে কেবল আমাকে গুলি করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এর বেশি কিছু নয়। আঞ্চলিক ব্রাহ্মণী ভাষায় এ কথাগুলো বলেন তিনি।’
তবে ‘এর বেশি কিছু নয়’ বলতে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছিলেন তা স্পষ্ট ছিল না।
এরপর যে লোকটি তাকে অনুসরণ করেছিল, সে তার দিকে পিস্তল তাক করে। তার দিকে পেছন ফিরে নারীটি দাঁড়ান।
গুলি চালানোর সময় শাল জড়িয়ে থাকা নারীটি দাঁড়িয়ে ছিলেন। খুব কাছ থেকে দুটি গুলি চালানোর পরেও তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন, তৃতীয় গুলির পরে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
এরপর ধারাবাহিকভাবে গুলিবর্ষণ করা হয়। ফুটেজে দেখা যায়, রক্তাক্ত এক পুরুষ মাটিতে পড়ে আছেন, নারীটির মৃতদেহের কাছে। তারপর ওখানে থাকা পুরুষরা দুটি মৃতদেহ লক্ষ্য করে আবার গুলি ছোড়ে।
তবে, রয়টার্স স্বাধীনভাবে ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।
এদিকে, পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, ২০২৪ সালে কমপক্ষে ৪০৫টি ‘অনার কিলিং’ ( পরিবারের সম্মান রক্ষায় হত্যা) ঘটেছে
আমার বার্তা/এল/এমই