প্রতিষ্ঠার ৫৫ বছরে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সংস্থাটি ৯৩৭ কোটি টাকা মুনাফা করে রেকর্ড গড়েছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায় বিমান বাংলাদেশ ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই সাফল্যের জন্য বিমানের সম্মানিত যাত্রী ও গ্রাহকদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানানো হচ্ছে, যাদের আস্থা ও সমর্থন এই রেকর্ড মুনাফা অর্জনে সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। এই সাফল্য এসেছে দক্ষ সম্পদ ব্যবস্থাপনা, কার্যকর কৌশল গ্রহণ এবং যাত্রীসেবার ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলস্বরূপ।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিমান ১১ হাজার ৬৩১.৩৭ কোটি টাকা আয় করেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিমান প্রথমবারের মতো ১০ হাজার কোটির বেশি আয়কারী কোম্পানিতে পরিণত হয়। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘ ৫৫ বছরের যাত্রায় বিমান মোট ২৬টি বছরে লাভ করেছে। ২০০৭ সালে করপোরেশন থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরের পর গত ১৮ বছরে বিমানের পুঞ্জীভূত মোট মুনাফা হয়েছে ৫৮৯ কোটি টাকা যা এই সংস্থার স্থিতিশীলতা ও দীর্ঘমেয়াদি সফলতার প্রমাণ।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিমানের বহরে ২১টি উড়োজাহাজ ছিল, যার মধ্যে বর্তমানে ১৯টি নিজস্ব মালিকানাধীন উড়োজাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে অত্যাধুনিক ও জ্বালানি-সাশ্রয়ী চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮ এবং দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার। বিমানের আর একটি বড় শক্তি হলো এর নিজস্ব বহর রক্ষণাবেক্ষণ সক্ষমতা- লাইন মেইনটেন্যান্স থেকে শুরু করে বড় ধরনের চেক পর্যন্ত সবই দেশেই সম্পন্ন করতে পারে, যা ব্যয় সাশ্রয়, দ্রুত সেবা প্রদান এবং আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
বিজ্ঞপ্তিরা আরও বলা হয়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিমানের কার্যক্রমে যাত্রী পরিবহন হয়েছে ৩.৪ মিলিয়ন, কার্গো পরিবহন ৪৩,৯১৮ টন, এবং কেবিন ফ্যাক্টর ৮২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি। এছাড়াও ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে বিমানের ইতিহাসে সর্বোচ্চ টিকিট বিক্রির রেকর্ড অর্জিত হয়েছে, যা বাজারে বিমানের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা ও যাত্রীদের আস্থার প্রতিফলন।
এতে বলা হয়, দ্রুত লাগেজ সরবরাহ, উন্নত ইন-ফ্লাইট সেবা এবং বিমানবন্দর প্রক্রিয়ার আধুনিকায়ন যাত্রী সন্তুষ্টি বাড়িয়েছে। পাশাপাশি, বিমান আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মান কঠোরভাবে অনুসরণ করে ধারাবাহিকভাবে প্রশংসনীয় সেফটি রেকর্ড বজায় রেখেছে। জাতীয় সংবাদমাধ্যম ও এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিমানের বহর আধুনিকায়ন, লাভজনক আন্তর্জাতিক রুট সম্প্রসারণ এবং উন্নত গ্রাহকসেবা প্রদানের প্রশংসা করেছেন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নতুন ব্যবস্থাপনা দক্ষ অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ, কার্যকর সম্পদ বণ্টন এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে এই বছরের রেকর্ড মুনাফায় বড় ভূমিকা রেখেছে।
বিমানের ভবিষ্যতের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিমানের ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় রয়েছে নতুন জনপ্রিয় গন্তব্যে রুট সম্প্রসারণ, যাত্রীসেবা ও পরিচালনায় ডিজিটাল রূপান্তর, এবং কার্গো সেবা শক্তিশালীকরণ। বিমানের লক্ষ্য হলো জাতীয় গৌরবকে ধারণ করে বিশ্বমানের সেবা, নির্ভরযোগ্যতা এবং যাত্রীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার একটি শীর্ষস্থানীয় এয়ারলাইন্সে পরিণত হওয়া।
আমার বার্তা/জেএইচ