আসছে বাজেটে ঢালাওভাবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে না। তবে করহার বাড়িয়ে শুধু আবাসন খাতে এই সুযোগ রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। আবাসন খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কালো টাকা সাদা করতে নয়, অপ্রদর্শিত অর্থের বিনিয়োগ আহ্বান তাদের। এদিকে কালো টাকা সাদা করার সুযোগকে অনৈতিক, অর্থনৈতিকভাবে অলাভজনক উল্লেখ করে তা পুরোপুরি বাতিলের পরামর্শ অর্থনীতিবিদের।
স্বাধীনতার পর থেকেই জাতীয় বাজেটে বহুল আলোচিত এমন অর্থ সাদা করার বিধান রাখা হচ্ছে। সুযোগ দেয়া সত্ত্বেও খুব সামান্য অংশই কর দিয়ে সাদা করা হয়।
আসন্ন বাজেটে ঢালাওভাবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ না থাকলেও জমি কেনাবেচার ক্ষেত্রে সরকার কিছুটা শিথিলতা রাখতে চায় বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এটি একেবারে বন্ধ করে দেয়া যাবে না। তবে এটি ঢালাওভাবেও থাকবে। নির্দিষ্ট কিছু খাতে থাকবে। আগে ১৫ শতাংশ অর্থ দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ ছিল। এখন সেটি থাকছে না।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের এমন সিদ্ধান্ত থাকলেও শেষ পর্যন্ত বিধান রেখেই বাজেট প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে জিজ্ঞাসার সম্মুখীন হতে হবে অর্থের উৎসের বিষয়ে।
এনবিআর সূত্র বলছে, এক্ষেত্রে বর্তমান করহার বাড়তে পারে কয়েকগুণ। অন্যদিকে জমি ও ফ্ল্যাট নিবন্ধনের কর কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী বাজারমূল্যে দলিল নিবন্ধন করার বিধানও রাখা হচ্ছে।
আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের দাবি, কালো টাকা নয়, অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ চান তারা। এক্ষেত্রে মৌজা মূল্যে নিবন্ধন ফি রাখার দাবিও তাদের। রিহ্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, বিদেশ থেকে অনেক সময় পাঠানো টাকার ডিক্লেয়ারেশন দেন না প্রবাসীরা। এই অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দিতে হবে।
তবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগকে অনৈতিক ও অলাভজনক বলছেন অর্থনীতিবিদ। আবাসন খাতে মৌজা ও বাজারমূল্যের জটিলতা নিরসনের পরামর্শ তাদের। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এটি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। অর্থনৈতিকভাবেও লাভজনক নয়। পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবেও এটি কোনো সুফল আনবে না। তাই যে মূল্যগুলো স্থির করা হয়, সেগুলোকে বাজারের দামের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হবে। তাহলে কালো টাকা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমানো সম্ভব হবে।
এনবিআর সূত্র বলছে, ২০২৩ সাল পর্যন্ত মোট ১১ হাজার ৮৫৯ ব্যক্তি ৪৭ হাজার কোটি কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিয়েছেন।
আমার বার্তা/এল/এমই