ই-পেপার সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বাড়তি দামে কয়লা কেনায় ৯১৬ কোটি টাকা গচ্চার আশঙ্কা

আমার বার্তা অনলাইন
০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪০

কক্সবাজারে মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে কয়লা কেনার অভিযোগ উঠেছে। এতে বছরে সরকারের প্রায় ৯১৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা গচ্চা যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি ওই কয়লা সরবরাহের কাজ পেয়েছে মেঘনা গ্রুপ। মেঘনা গ্রুপের কম্পানি ইউনিক সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড এবং ভারতের আদিত্য বিড়লা গ্লোবাল ট্রেডিং কম্পানি পিটিইর (সিঙ্গাপুরের রেজিস্টার্ড) কনসোর্টিয়ামকে ৩৫ লাখ মেট্রিক টন কয়লা সরবরাহের জন্য কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, এই প্রতিষ্ঠানকে বাজারমূল্যের চেয়ে বাড়তি দরে কয়লা ক্রয়ের কার্যাদেশ দেওয়ায় এক বছরে সরকারের গচ্চা যাবে ৯১৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

জানা যায়, বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা সরবরাহের জন্য প্রস্তাবিত কয়লা অবশ্যই আইসিআই-৩ গ্রেডের হওয়ার শর্ত রয়েছে। ইন্দোনেশীয় কয়লা সূচক (আইসিআই) প্রতিবেদন অনুসারে, ১৮ অক্টোবর আইসিআই-৩ গ্রেড কয়লার বাজারমূল্য ছিল প্রতি মেট্রিক টন ৭৩.২৫ মার্কিন ডলার এবং দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির (টিইসি) হিসাব অনুযায়ী প্রতি টন কয়লার পরিবহন খরচ ১০.৮০ মার্কিন ডলার। সেই হিসাবে পরিবহন খরচসহ গত ১৮ অক্টোবর প্রতি টন কয়লার মূল্য ছিল ৮৪.০৫ মার্কিন ডলার।

কিন্তু মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়নকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান কোল পাওয়ার জেনারেশন কম্পানি (সিপিজিসিবিএল) আগের মতোই দুর্নীতিমূলক কার্যকলাপের মাধ্যমে প্রতি টন কয়লা ১০৫.৮৭ মার্কিন ডলার হারে আদিত্য বিড়লা কনসোর্টিয়ামের অনুকূলে এনওএ জারি করেছে, যা প্রতি টন কয়লার বর্তমান মূল্যের চেয়ে ২১.৮২ মার্কিন ডলার বেশি ধরা হয়েছে। এই হিসাবে ৩৫ লাখ টন কয়লা কিনতেই সরকারের গচ্চা যাবে ৯১৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

সিপিজিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. নাজমুল হক বলেন, ‘কয়লার দাম নির্ধারণের বিষয়টি এত সহজ হিসাব নয়। এর সঙ্গে যানবাহন খরচ আছে। দরপত্রের মূল্যেই কয়লার এই দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি ওটিএম (উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি) করে আসছে, ডিপিএম (সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি) করে আসে নাই।’

জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রে তিন বছরে ৯.৬ মিলিয়ন টন কয়লা সরবরাহের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহবান করা হয়। দরপত্রটি কয়লা ক্রয় সম্পর্কিত হওয়ায় মূল দরপত্রের টেকনিক্যাল ক্রাইটেরিয়া অংশে ‘কয়লা’ আমদানির অভিজ্ঞতার শর্ত উল্লেখ ছিল।

কিন্তু মেঘনা গ্রুপ ও ভারতের আদিত্য বিড়লা গ্রুপের কনসোর্টিয়ামকে বেআইনি সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে হাসিনা সরকারের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা দরপত্রের টেকনিক্যাল ক্রাইটেরিয়া অংশে পর পর চারটি সংশোধনীর মাধ্যমে ‘কয়লা আমদানির অভিজ্ঞতার’ শর্তটি পরিবর্তন করে ‘কয়লা অথবা লোহা, সার, কেমিক্যাল, সিমেন্ট, খাদ্যশস্য আমদানির অভিজ্ঞতা’কে যোগ্যতা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন।

এদিকে, গত ৮ ফেব্রুয়ারি ভারতের আদিত্য বিড়লা কনসোর্টিয়ামসহ মোট চারটি প্রতিষ্ঠান ওই দরপত্রে অংশগ্রহণ করে, এর মধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠানকেই ‘টেকনিক্যালি নন-রেসপন্সিভ’ হিসেবে বাদ দিয়ে একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভারতের আদিত্য বিড়লা কনসোর্টিয়ামকে গত ১ মে টেকনিক্যালি রেসপন্সিভ ঘোষণা করা হয়।

এরপর গত ৮ মে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি আদিত্য বিড়লা কনসোর্টিয়ামের আর্থিক প্রস্তাবটি খুলে দেখে, তারা প্রতি টন কয়লার সরবরাহ মূল্য ১০৮.৮৭ মার্কিন ডলারের প্রস্তাব করেছে। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি আদিত্য বিড়লা কনসোর্টিয়ামের আর্থিক প্রস্তাবটি মূল্যায়ন করে জানায়, ‘উক্ত দর সিগনিফিক্যান্টলি হাই (উল্লেখযোগ্যভাবে উচ্চ) বিধায় ৯.৬ মিলিয়ন টন কয়লা সরবরাহের একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির জন্য গ্রহণযোগ্য নয়’ এবং প্রস্তাবিত দর গ্রহণযোগ্য নয় বলে সিদ্ধান্ত প্রদান করে।

পরে সিপিজিসিবিএল কর্তৃপক্ষ আদিত্য বিড়লা কনসোর্টিয়ামের অনুকূলে এনওএ ইস্যু না করায় প্রতিষ্ঠানটি গত ১ জুলাই ও ৮ জুলাই পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮-এর বিধি ৫৭(৫) ও ৫৭(৭) অনুযায়ী অভিযোগ দায়ের করে। কিন্তু সিপিজিসিবিএল বা মন্ত্রণালয় পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের অভিযোগ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

অতঃপর আদিত্য বিড়লা কনসোর্টিয়াম পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮-এর বিধি ৫৭(১০) অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিভিউ প্যানেলে কোনো আপিল বা হাইকোর্টে কোনো রিট মামলাও দায়ের করেনি।

আদিত্য বিড়লা কনসোর্টিয়ামের আর্থিক প্রস্তাব খারিজ হওয়ার পর তারা কোনো আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা অনুযায়ী আদিত্য বিড়লা কনসোর্টিয়ামের দরপত্র বা প্রস্তাব বিবেচনা করার আর কোনো সুযোগ ছিল না।

তা সত্ত্বেও গত ১৭ অক্টোবর সিপিজিসিবিএল সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে আদিত্য বিড়লা কনসোর্টিয়ামকে ৩৫ লাখ টন কয়লা ১০৫.৮৭ মার্কিন ডলার দরে সরবরাহের কার্যাদেশ প্রদান করে। কয়লা ক্রয় দরপত্র বিষয়ে সিপিজিসিবিএল বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম, দুর্নীতি ও চক্রান্তমূলক কার্যক্রম বিষয়ে এরই মধ্যে দেশের শীর্ষ গণমাধ্যমগুলোতে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা আমদানি অত্যন্ত জরুরি—এই বিবেচনায় মন্ত্রণালয় ও সিপিজিসিবিএলের কর্মকর্তারা তড়িঘড়ি করে অবৈধভাবে আদিত্য বিড়লা কনসোর্টিয়াম বরাবর এনওএ প্রদান করেছে; যদিও জরুরি প্রয়োজনে সরাসরি কয়লা ক্রয়ের মাধ্যমে সাময়িক চাহিদা পূরণ করার বিষয়ে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮-এ সুনির্দিষ্ট বিধান রয়েছে (ধারা-৬৮ ও বিধি-৭৪)।

এ অবস্থায় বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধের লক্ষ্যে এবং দেশকে বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে কয়লা ক্রয়ের জন্য প্রদত্ত এনওএ বাতিল করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন জ্বালানি খাতসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।

কয়লাসংকটে ১২০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুটি ইউনিটের উৎপাদন গত বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের ইউনিট কমিশনিংয়ের জন্য জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে কয়লা আনা হয়ে থাকে।

গত আগস্ট মাসে জাপানি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়। প্রকল্পের একটি ইউনিট ২০২৩ সালের জুলাইয়ে এবং অন্য ইউনিট ডিসেম্বরে চালু হয়, যেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এখন পর্যন্ত জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে আনা হয় ২২ লাখ পাঁচ হাজার টন কয়লা। সেই মজুদ পুরোপুরি শেষ হয়ে গেছে। তাই গত বৃহস্পতিবার থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।

আমার বার্তা/জেএইচ

নিত্যপণ্যের বাজারে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাঘববোয়ালদের ধরার পরামর্শ

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নানান পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। তারপরও কমছে না নিত্যপণ্যের দাম। লাফিয়ে লাফিয়ে নিত্যপণ্যের দাম

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলা, টিকিট মিলবে যেভাবে

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগকে সামনে রেখে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে মাসব্যাপী শুরু হতে যাচ্ছে ২৯তম

বাজারে হঠাৎ বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট

রাজধানীর মালিবাগ বাজারে বিভিন্ন পণ্য কেনার পর সয়াবিন তেল কিনতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন বেসরকারি চাকরিজীবী

চামচা পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটায় অগণতান্ত্রিক মনোভাব তৈরি হয়েছে

সিপিডির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান বলেছেন, স্যানিটেশন সুবিধা বৃদ্ধি, মাতৃমৃত্যু কমানো, শিশু মাত্যৃহার কমানোসহ সামাজিক
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৯ ডিসেম্বর ঘটে যাওয়া নানান ঘটনা

রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে ১২৬০ কেজি পলিথিন জব্দ

নাগরিকদের বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ চান ফরহাদ মজহার

শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আইনের সম্মুখীন করতে চাই: প্রেস সচিব

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি চালুসহ ৪ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার

গ্রিসে বাংলাদেশিদের বাসস্থান-স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন বৈঠক

নির্বাচন নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্য ব্যক্তিগত: অপূর্ব জাহাঙ্গীর

জনগণের আস্থা রক্ষায় সচেতন থাকতে হবে: তারেক রহমান

প্লেনের টিকিট সিন্ডিকেট ভেঙে আহ্বান জানালো আটাব

কোটা আন্দোলনে ২শতাধিক সাংবাদিক হতাহতের বিচার হচ্ছে না

হাসিনাকে গণহত্যার আসামি হয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে: ফরিদা আখতার

বিমানবন্দরে লাগেজ পার্টির সদস্য থেকে কোটিপতি গোল্ডেন শফি

পদত্যাগ করে বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনার পর দেশ ছেড়েছেন আসাদ: রাশিয়া

কারিগরি শিক্ষকদের নভেম্বর মাসের এমপিওর চেক ছাড়

বিগত সরকার পাঠ্যপুস্তক নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে: ড. মঈন খান

ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় ৭ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৫৯৬

নিত্যপণ্যের বাজারে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাঘববোয়ালদের ধরার পরামর্শ

ভারতকে কাঁদিয়ে আবারও এশিয়ার সেরা বাংলাদেশের যুবারা

বাংলাদেশ বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধে মেটার প্রতি আহ্বান ইউনূসের

পরিস্থিতি অনুযায়ী সীমান্তে বিজিবিকে প্রস্তুতির নির্দেশ