নতুন স্কুল ব্যাগ আবার কারও হাতে টিফিন বক্স। মুখে হাসি ও চোখে আনন্দের ঝিলিক। শিক্ষাসামগ্রী পেয়ে নতুন উদ্যোমে লেখাপড়া শুরুর প্রত্যয় চোখে-মুখে। এমনই দৃশ্য দেখা গেলো কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার চরাঞ্চলের পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে।
সোমবার (২৬ মে) উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্কুলগুলোর পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীর মাঝে নতুন ব্যাগ ও টিফিন বক্স বিতরণের পর এ দৃশ্য দেখা যায়।
জানা গেছে, এ উপজেলার চরাঞ্চলের গ্রামগুলো প্রাথমিক শিক্ষায় পিছিয়ে আছে। বেশিরভাগ পরিবারই তাদের সন্তানদের শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দেন না। পিছিয়ে পড়া এসব শিশুদের বিদ্যালয়মুখী করতে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
উপজেলার চরকাটিহারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরহাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৫০ জন শিক্ষার্থীকে টিফিন বক্স ও ১৬৫ জন শিক্ষার্থীকে নতুন স্কুল ব্যাগ তুলে দেওয়া হয়েছে। স্কুলগুলোতে ঘুরে ঘুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাহিদ ইভা ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক এসব সামগ্রী বিতরণ করেন।
নতুন স্কুল ব্যাগ পেয়ে আনন্দ প্রকাশ করে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র রাফির ভাষ্য, আমার পুরোনো ব্যাগ ছিঁড়ে গিয়েছিল। আজ নতুন ব্যাগ পেয়েছি। খুব ভালো লাগছে।
এদিকে সন্তানদের মাঝে স্কুল ব্যাগ ও টিফিন বক্স বিতরণের ঘটনায় খুশী অভিভাবকরাও। তারা জানান, গ্রামে অনেক পরিবারই দরিদ্র। স্কুল ব্যাগ বা টিফিন বক্স কেনা অনেকের পক্ষে সম্ভব হয় না। এই উদ্যোগে তাদের সন্তানদের মাঝে নতুন উদ্যম তৈরি করেছে।
চরকাটিহারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরব আলী বলেন, ’এই সহায়তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে আনন্দের সৃষ্টি করেছে। আগে কেউ কেউ ছেঁড়া ব্যাগ নিয়ে আসত, কেউবা টিফিন আনত না। এখন তারা গুছিয়ে স্কুলে আসছে।’
প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে এসব উপহার বিতরণ শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করে তুলবে। এতে এ উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা আরও এগিয়ে যাবে।’
হোসেনপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাহিদ ইভা বলেন, ’চরের শিশুদের অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে দিয়ে স্কুলে আসতে হয়। তাদের উৎসাহ দিতে ও পড়ালেখায় আগ্রহ বাড়াতে এই সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, কেউ যেন শুধু অভাবের কারণে স্কুল ছুট না হয়।’
তিনি আরও বলেন ‘প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে শিশুদের স্কুলজীবন শুরু হয়। প্রাথমিক শিক্ষাকে এগিয়ে নিতেই আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস। শিক্ষা উপকরণ বিতরণের এই উদ্যোগ একটি চলমান প্রক্রিয়ার অংশ। ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত আকারে এটি বাস্তবায়ন করা হবে।
আমার বার্তা/এল/এমই