রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চলছে। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা। তবে রাত্রিকালীন কার্যক্রম, রাকসু নির্বাচন কার্যক্রম, পরিবহন ও পানি-বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতি, কর্মচারী সমিতি ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
রোববার রাতে জুবেরী ভবনে সভা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যসহ শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সকল প্রকার ক্লাস-পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের শিক্ষকরা।
এদিকে গতকাল রাতে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীবের বাসভবনে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সিন্ডিকেট সভার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতি ও কর্মচারী সমিতি শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করে।
তাদের দাবি, দেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বা ‘পোষ্য কোটা’ বিদ্যমান থাকলেও রাবিতে তা স্থগিত রাখা হয়েছে, যা অন্যায্য। তারা এ সুবিধা পুনর্বহালের জোর দাবি জানিয়েছেন।
এছাড়া সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের ছাত্রত্ব বাতিলের দাবিও জানানো হয়েছে।
সমিতির নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, দাবি পূরণ না হলে শাটডাউন অনির্দিষ্টকালের জন্য চলবে।
তারা জানায়, শাটডাউনের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। তবে রাকসু নির্বাচনের কার্যক্রম, পরিবহন, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহের মতো অপরিহার্য সেবাগুলো শাটডাউনের বাইরে থাকবে।
সরজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগে ক্লাসের কক্ষগুলো বন্ধ রয়েছে। নির্ধারিত কোনো পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। শিক্ষার্থীরা দলবেঁধে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ালেও পাঠদানের কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, হঠাৎ করে ক্লাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা হতাশ। অনেকেই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, কিন্তু স্থগিত হওয়ায় অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।
এদিকে শিক্ষক ফোরামের নেতারা জানিয়েছেন, উপ-উপাচার্যসহ শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন জানান, সোমবার থেকে কার্যত পুরোপুরি শাটডাউন কার্যকর থাকবে যদি দাবিগুলো পূরণ না হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনে দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলনে যেতে তারা প্রস্তুত।
আমার বার্তা/জেএইচ